প্রশান্ত মহাসাগরকে জাপানি পারমাণবিক বর্জ্যপানির ভাগাড়ে পরিণত করা যাবে না
2023-04-23 11:31:00

এপ্রিল ২৩: গত ২২ এপ্রিল ছিল বিশ্ব ধরিত্রী দিবস ও আইন দিবস। ফুকুশিমার পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমুদ্রে ফেলার জাপানি সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও পরিবেশ সংরক্ষণ সংস্থা এদিন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।

প্রায় দুই বছর আগে জাপানি সরকার পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমুদ্রে নিঃসরণের পরিকল্পনা ঘোষণা করে। ঘোষণার পরপরই তা ব্যাপক সমালোচনা ও সন্দেহের মুখে পড়ে। এ সম্পর্কে ফুকুশিমা জেলার জেলেরা বলেন, জাপান সরকারের এমন সিদ্ধান্ত কেবল স্থানীয় জেলেদের স্বার্থের ক্ষতি করবে না, বরং আন্তর্জাতিক সমাজের জন্য তা ক্ষতির কারণ হবে।

তবে, আন্তর্জাতিক সমাজের ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখেও, আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার পর্যালোচনা-প্রতিবেদন ছাড়াই, জাপানি সরকার পারমাণবিক বর্জ্যপানি সাগরে নিঃসরণের চেষ্টা করে যাচ্ছে। জাপানি অর্থমন্ত্রী ইয়াসুতোশি নিশিমুরা ২০ এপ্রিল জোর দিয়ে বলেন, চলতি বছরের বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। টোকিও বিদ্যুত কোম্পানি ২১ এপ্রিল ঘোষণা করে যে, পারমাণবিক বর্জ্যপানির নিঃসরণ পাইপলাইন বসানোর কাজ জুন মাসের শেষ দিকে সম্পন্ন হবে; এবং জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে নিঃসরণের কাজ শুরু হবে। আর ২৩ এপ্রিল ইউরোপীয় দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট সমর্থনে, জি-সেভেন দেশগুলো সফর করার কথা ফুকুশিমার গভর্নর মাসাও উচিবরির।

এ থেকে বোঝা যায়, জাপানি সরকার সঠিক পদ্ধতিতে পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমস্যা মোকাবিলা করতে চায় না, বরং তা সমুদ্রে ফেলার জন্য বিভিন্ন গোপন পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে এবং অন্যান্য দেশের সমর্থন আদায়ের অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে।

২০১১ সালে ফুকুশিমা পারমাণবিক শক্তিকেন্দ্রে দুর্ঘটনায় সৃষ্ট পারমাণবিক বর্জ্যপানির মোট পরিমাণ ১৩ লাখ টনেরও বেশি। বর্তমানে দৈনিক নতুন বর্জ্যপানির পরিমাণ ১০০ টনেরও বেশি; এর নিঃসরণ মেয়াদও ৩০ বছরের বেশি।

জাপানি জেলে হারুও ওনো রাগ করে বলেন, কেন সমুদ্র দুষণ করবে? সমুদ্র আবর্জনার বিন নয়। যদি সেটি নিরাপত্তার ব্যাপার, কেন দূষিত পানি টোকিও বা ওসাকার কাছে নিঃসরণ করা হবে না?

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে বৈশ্বিক টেকসই ও স্বাস্থ্যকর উন্নয়নের আহ্বান জানানো হয়েছে। পারমাণবিক বর্জ্যপানি জাপানের ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়, বরং মানবজাতির সাথে জড়িত বড় ব্যাপার। জাপানের উচিত ন্যায়সংগত ও বিজ্ঞানসম্মতভাবে, নিরাপদ পদ্ধতিতে পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমস্যার সমাধান করা। একতরফাভাবে দূষিত পানি সমুদ্রে ফেলার সিদ্ধান্ত কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। (সুবর্ণা/আলিম/রুবি)