তিব্বত মালভূমি
2023-04-21 18:06:51

 

 এ অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও তিব্বতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর তিব্বত সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা তিব্বত নিয়ে কথা বলব।

 

তিব্বত মালভূমির উত্তরে রয়েছে ‘খুনলুন’ পর্বত এবং এর শাখা টাঙ্গগুলা পর্বতমালা; দক্ষিণে হিমালয়; পশ্চিমে কারাকোরাম পর্বতমালা; পূর্বে হেংতুয়ান পর্বতমালা। এখানে আরও রয়েছে গাংদেস পর্বতমালা - নাইনকেন তাংগুলা পর্বতমালা এবং এর শাখা। এখানকার পর্বতগুলোর গড় উচ্চতা ৪০০০ মিটারের বেশি। এসব পর্বতের মধ্যে ৭০০০ মিটারের বেশি উঁচু পর্বতশিখর আছে ৫০টিরও বেশি শিখর এবং ৮০০০ মিটার উঁচু পর্বতশিখর আছে পাঁচটি। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য অনন্য।

তিব্বত মালভূমির পাহাড়গুলো মূলত দুটি দলে বিভক্ত। এগুলো পূর্ব-পশ্চিমে ও উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত।

হিমালয় পর্বত: হিমালয় পর্বত তিব্বতের মালভূমির দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। মোট দৈর্ঘ্য ২৪০০ কিলোমিটার। প্রস্থ ২০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার। প্রধান শৃঙ্গের গড় উচ্চতা ৬২০০ মিটার। এর প্রধান অংশ চীন ও ভারতে এবং নেপালের সীমান্ত রেখায় অবস্থিত। হিমালয় সবচেয়ে লম্বা ও কনিষ্ঠ পর্বতমালা। হিমালয় পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত অনেকগুলো সমান্তরাল পর্বতমালার সমন্বয়ে গঠিত।

হিমালয়ে আছে মাউন্ট এভারেস্ট, যার উচ্চতা ৮৮৪৪.৪৩ মিটার। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। হিমালয়ের মাঝখানে চীন-নেপাল সীমান্তে দাঁড়িয়ে আছে এই শৃঙ্গ। প্রায় ৭০০০ মিটারের বেশি উচ্চতার ৪২টি চূড়া রয়েছে এখানে, যেগুলোর মধ্যে ৪টির উচ্চতা ৮০০০ মিটারের বেশি।

‘কাংতিসি’ পর্বতমালা--‘নিয়ান ছিং থাংকুলা’ পর্বতমালা: ‘কাংতিসি’ পর্বতমালা—‘নিয়ান ছিং থাংকুলা’ পশ্চিমে শিছিয়ান নদী এলাকা থেকে শুরু হয়ে পূর্বে হেংতুয়ান পর্বতমালার বোশুলা রিজ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এর মোট দৈর্ঘ্য ১৬০০ কিলোমিটার। উত্তর থেকে দক্ষিণে গড়ে ৮০ কিলোমিটার প্রশস্ত এবং ৫৮০০ থেকে ৬০০০ মিটার উঁচু। ‘কাংতিসি’ পর্বতমালা--‘নিয়ান ছিং থাংকুলা’ পর্বতমালা  হল  উত্তর তিব্বত, দক্ষিণ তিব্বত এবং দক্ষিণ-পূর্ব তিব্বতের মধ্যে প্রাকৃতিক সীমানা।

কারাকোরুম-টাংলা পর্বতমালা: কারাকোরুম-টাংলা পর্বতমালা পশ্চিম থেকে পূর্ব পর্যন্ত বিস্তৃত। পর্বতব্যবস্থাটি অনেক সমান্তরাল পর্বতশ্রেণীর সমন্বয়ে গঠিত, যার গড় উচ্চতা ৫০০০ থেকে ৬০০০ মিটার। মূল অংশটি সিনচিয়াং ও কাশ্মীরের সীমান্তে অবস্থিত। এর সর্বোচ্চ চূড়া, গ্লাডানডং পিক, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬৬২১ মিটার উঁচু। এটি চীনের বৃহত্তম নদী - ইয়াংজি নদীর জন্মস্থান।

খুনলুন পর্বতমালা: খুনলুন পর্বতমালা তিব্বত মালভূমির উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে পশ্চিম থেকে পূর্ব পর্যন্ত প্রসারিত, গড় উচ্চতা ৫৫০০ থেকে ৬০০০ মিটার। এটি চীনের সবচেয়ে ঘনীভূত স্থায়ী তুষার এবং আধুনিক হিমবাহের একটি এলাকা।

হেংতুয়ান পর্বতমালা: দক্ষিণ-পূর্ব তিব্বতে অবস্থিত। এটি গভীর উপত্যকাসহ বেশ কয়েকটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণী নিয়ে গঠিত। পশ্চিম থেকে পূর্বে, এই পর্বতগুলো হল: ‘পোশুলালিং’, ‘থানিয়ানথাওয়েং’ এবং ‘মাংখাং’ পর্বত। এগুলো যথাক্রমে ‘নিয়ানছিং থাংকুলা’ পর্বত এবং ‘থাংকুলা’ পর্বত থেকে বিস্তৃত, এর গড় উচ্চতা ৪০০০ থেকে ৫০০০ মিটার।

 

প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে তিব্বত’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও তিব্বতের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn  আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা:  https://bengali.cri.cn/  সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (উর্মি/আলিম)