ফেব্রুয়ারি ২০: জাতিসংঘ পপুলেশন ফান্ড গত বুধবার ‘২০২৩ সালে বিশ্ব জনসংখ্যা পরিস্থিতি বিষয়ক প্রতিবেদন’ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনের অনুমান অনুযায়ী, এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভারতের জনসংখ্যা চীনকে ছাড়িয়ে যাবে। যা মূলত জনসংখ্যা উন্নয়নের স্বাভাবিক বিষয়। তবে কিছু পশ্চিমা গণমাধ্যমের খবরে তা ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সেসব খবরে বলা হয়, তথাকথিত ‘বৈশ্বিক শৃঙ্খলায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হবে।’ ‘জনসংখ্যার নেতিবাচক প্রভাবে চীনের পুনরুত্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা আরো কঠিন হয়ে পড়েছে।’ আসলে পশ্চিমা গণমাধ্যমের খবরের মূল অর্থ হলো- চীনের উন্নয়ন বড় বাধার মুখে পড়েছে।
আসলে, অতীতেও পশ্চিমা গণমাধ্যম চীনের জনসংখ্যা নিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, পরিবার পরিকল্পনা নীতি, বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধি-সহ নানা বিষয়ে তারা সবসময় নেতিবাচক সংবাদ তৈরি করে আসছে। তবে, তারা কখনওই সফল হয় নি। চীন ক্রমাগত উন্নত হয়েছে। বিশাল জনসংখ্যা নিয়ে অর্থনীতির অব্যাহত ও স্থিতিশীল উন্নয়নের বিস্ময় সৃষ্টি করেছে চীন।
তবে, তারা আশা ছেড়ে দেয় নি। যুক্তরাষ্ট্র চীনের উন্নয়নে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় তারা ‘ভারতের জনসংখ্যা চীনকে ছাড়িয়ে যাবে’-এ বিষয়কে কাজে লাগিয়ে চীনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক খবর তৈরি করছে। যাতে চীনের উন্নয়নে বাধা দেওয়া যায়।
এ ধরনের অপপ্রচার জনসংখ্যা উন্নয়নের নীতি উপেক্ষা করে। বর্তমানে, জন্মহার কমছে, সন্তান জন্ম দেওয়ার ইচ্ছাও কমে যাচ্ছে। যা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তা অর্থনৈতিক উন্নয়নের পর্যায়, মানুষের ধারণাসহ নানা আর্থ-সামাজিক উপাদানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। যেমন ধরুন, পশ্চিমা উন্নত দেশসমূহে শ্রমের সংকট রয়েছে। এ বিষয়ে কেন পশ্চিমা গণমাধ্যম বলছে না যে, ‘জনসংখ্যার নেতিবাচক প্রভাব পশ্চিমা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা দেয়?’ এটা একটি স্পষ্ট দ্বৈতনীতি।
জনসংখ্যার দিকে চীন একটি বড় দেশ। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পর, বিশেষ করে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগ দেওয়ার পর, ‘জনসংখ্যার ইতিবাচক প্রভাবে’ দেখা যায় যে- দেশ দ্রুত গতিতে উন্নত হচ্ছে, বিশ্বও ‘উভয়ের জয়ের’ সুযোগ উপভোগ করতে পেরেছে। বর্তমানে, চীন উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়নের পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা যায়, চীন শ্রমঘন শিল্পকে বিদায় দিয়েছে এবং বৈশ্বিক শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইনের মধ্যম ও উচ্চ প্রান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যা একটি অপ্রতিরোধ্য প্রবণতা।
এজন্য চীনের উন্নয়নের ভবিষ্যত অনুমান করতে চাইলে, শুধু জনসংখ্যা দেখলে হবে না, বরং অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়েও নজর দিতে হবে। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে পোঁছায়। যা অনুমানের চেয়েও বেশি। এতে চীনের উন্নয়নের সুষ্ঠু প্রবণতা দেখা গেছে।
অতীতে, পশ্চিমা দেশের কিছু ব্যক্তি চীনের জনসংখ্যা নিয়ে নেতিবাচক অপপ্রচার করেছিলেন, তবে তারা সফল হন নি। এবারও তারা আবারও ব্যর্থ হবে।
(আকাশ/তৌহিদ)