ফেব্রুয়ারি ১৭:‘চীন ও ব্রাজিলের নেতৃবৃন্দ ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন।’ ‘প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভার চীন সফর ব্রাজিলের জন্য সুযোগের দরজা খুলে দিয়েছে।’ ‘প্রেসিডেন্ট সি বৈঠকের পর, প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভার সুটকেস নানা ধরনের দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও সহযোগিতামূলক পরিকল্পনায় পূর্ণ হয়েছে।’ প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা’র এবারের চীন সফর নিয়ে ব্রাজিলের গণমাধ্যম ও বিভিন্ন মহল ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছে। সবাই মনে করেন যে, দু’দেশের নেতৃবৃন্দ আগামী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার জন্য দিক- নির্দেশনা দিয়েছেন এবং দু’পক্ষের সম্পর্কের জন্য নতুন ভবিষ্যত শুরু করেছেন।
এ বছর হচ্ছে চীন ও ব্রাজিলের কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকী। আগামী বছর হবে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী। এ গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা ১২ থেকে ১৫ এপ্রিল চীনে রাষ্ট্রীয় সফর করেছেন। এতে আন্তর্জাতিক সমাজ গভীর নজর রেখেছে। দু’দেশের নেতৃবৃন্দের বৈঠকের সাফল্য ও দু’পক্ষের প্রকাশিত যৌথ ঘোষণায় দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভার এবারের চীন সফর বেশ সফল হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জানান, চীন ব্রাজিলের সঙ্গে একযোগে নতুন যুগে দু’দেশের নতুন ভবিষ্যত গঠন করবে। প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা বলেন, চীনের সঙ্গে সার্বিকভাবে সম্পর্ক জোরদার করা ব্রাজিলের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ও সমাজের বিভিন্ন মহলের অভিন্ন প্রবল ইচ্ছা।
চীন ও ব্রাজিল হচ্ছে পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ ও গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। দু’দেশের মধ্যে দূরত্ব সুদূর হলেও পারস্পরিক বিনিময়ের ইতিহাস অনেক লম্বা। নয়া চীন প্রতিষ্ঠার পর, চীন ও ব্রাজিল ১৯৭৪ সালের ১৫ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে, দুপক্ষের সম্পর্ক অব্যাহতভাবে উন্নীত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা ইতোমধ্যে চারবার চীন সফর করেছেন। তাঁকে ‘চীনা জনগণের পুরানো বন্ধু’ বলা হয়।
প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা সাংবাদিককে জানান, চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের উচ্চ মানের মূল্যায়ন করেন তিনি। তিনি বলেন, ব্রাজিল এখন একটি ‘ব্রাজিলের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের পথ’ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।
দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন শুধু দু’পক্ষের জন্য নয়, বরং বিশ্ব প্রশাসন উন্নয়নের জন্যও ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
জাতিসংঘ, ব্রিক্স, জি-২০...একাধিক আন্তর্জাতিক মঞ্চে চীন ও ব্রাজিল সবসময় অভিন্ন উদ্বেগের বৈশ্বিক বিষয়ে কৌশলগত সমন্বয় জোরদার করেছে। এবারে দু’দেশের নেতৃবৃন্দের বৈঠকে, দু’পক্ষও একমত হয়েছে যে, সংলাপ ও আলোচনা হচ্ছে ইউক্রেন সংকট সমাধানের একমাত্র পথ। শান্তিপূর্ণভাবে সংকট সমাধানের সব প্রচেষ্টাকে সমর্থন ও উত্সাহ দেওয়া উচিত। এটাই হচ্ছে দু’পক্ষের একযোগে মূল্যবান শান্তি বাস্তবায়নের আহ্বান।
শান্তি, উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন বাস্তবায়ন হচ্ছে ব্রাজিলের জনগণের মনের কথা। যা চীনা জনগণেরও মনের মথা। আশা করা যায়, দু’দেশের নেতৃবৃন্দের দিক-নির্দেশনায়, নতুন যুগের দু’দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উঠবে। যা আরো বেশি দু’দেশের গণকল্যাণ বয়ে আনবে এবং চীন-লাতিন আমেরিকা সহযোগিতা ও বিশ্বশান্তি ও উন্নয়নে নতুন প্রাণশক্তি যোগাবে।
(আকাশ/তৌহিদ)