কেন বিদেশী কোম্পানির নির্বাহীরা ঘন ঘন চীনে আসছেন?
2023-04-17 11:27:32

বর্তমানে বিদেশী কোম্পানির নির্বাহীরা "চীন সফরের ঢেউ" শুরু করছেন। অসম্পূর্ণ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীনের দুই অধিবেশনের পর প্রায় একশ’ বিখ্যাত বিদেশী কোম্পানির নির্বাহী চীন সফরে এসেছেন।

চীন উন্নয়ন ফোরাম থেকে বোআও এশীয় ফোরাম এবং "চীনা বিনিয়োগের বছর” পর্যন্ত, ঘন ঘন বিদেশী কোম্পানির নির্বাহীরা সম্মেলনে অংশ নেয়া, পরিদর্শন করা, সাক্ষাৎকার দেয়া, সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করা এবং বাজারে যাওয়াসহ বাস্তব কার্যক্রমের মাধ্যমে চীনকে খতিয়ে দেখেন এবং চীনের দাম বাড়ান।

চীনের বসন্তের জাগরণের প্রাচুর্য আরও বেশি অতিথিদের আকর্ষণ করছে। বহু আন্তঃসীমান্ত প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা ঘন ঘন চীনে আসছেন। আর তালিকাটি ক্রমশ বড় হচ্ছে।

বেইজিং তিও ইয়ু থাই রাষ্ট্রীয় অতিথি হোটেল থেকে হাইনান বোআও এবং উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত, বিদেশী কোম্পানির নির্বাহীরা চীনা মাটির বিভিন্ন আর্থ-বাণিজ্যিক ফোরাম ও কারখানাগুলোয় ব্যস্ত। চলতি বসন্তকালে চীনে আসা এক ধরণের প্রবণতায় পরিণত হয়েছে।

পুনরায় চীনে আসা বিদেশী কোম্পানির নির্বাহীরা পৃথক পৃথকভাবে চীনে বিনিয়োগের ওপর গুরুত্ব এবং প্রত্যয় প্রকাশ করেন।

অ্যামওয়ে’র সিইও মিলিন্দ প্যান্ট জানান, চীন উত্তেজনাপূর্ণ বিনিয়োগের স্থান। পাশাপাশি, বিশ্ব অর্থনীতিকে পতন থেকে মুক্ত করার শক্তিশালী ইঞ্জিন।

“নতুন ও উচ্চমানের উন্নয়ন সুযোগ আমাদের উত্তেজিত করে।” সোয়ার গ্রুপের সিইও মার্লিন সোয়ার বলেন, চীনের আধুনিকায়ন মানে চীনা জনগণের সুন্দর জীবনের প্রতি বাড়তে থাকা প্রতীক্ষা। এটা আরও উঁচু মানের পণ্য ও পরিষেবা প্রদানকারী আন্তঃসীমান্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য বিরাট উন্নয়ন স্পেস সরবরাহ করে। পাশাপাশি, দীর্ঘকাল ধরে সোয়ার গ্রুপ চীনে বিনিয়োগের প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

বহু আন্তঃসীমান্ত প্রতিষ্ঠান চীনা বাজার গভীর করার প্রত্যয় দেখানোর সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে চীনা বাজারের প্রতি “ভোট” দেয়।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা বিনিয়োগ করে শানতোং প্রদেশের ছিংতাও শহরে কারখানা নির্মাণ করেছে। বিনিয়োগের মোট পরিমাণ প্রায় ৪৫ কোটি মার্কিন ডলার। অ্যামওয়ে কুয়াংচৌ-এ তার উত্পাদন ঘাঁটির আপগ্রেড ও পুনর্নির্মাণ করতে আরও ৬০ কোটি ইউয়ান বিনিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেছে। যাতে শিল্পে-শিল্পে গবেষণা ও উন্নয়ন সহযোগিতা এবং ফলাফল রূপান্তর ত্বরান্বিতকরণ স্বাস্থ্য শেয়ার প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ করা যায়।

২০২২ সালের শেষ নাগাদ চায়না কাউন্সিল ফর দ্য প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড (সিসিপিআইটি) ১৬০টির বেশি চীনে বিনিয়োগকারী বিদেশী কোম্পানি এবং বিদেশী বাণিজ্যিক সমিতির প্রতি দ্রুত জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, তাদের মধ্যে ৯৯.৪ শতাংশ ২০২৩ সালে চীনের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের প্রতি আত্মবিশ্বাসী। চীনে বিনিয়োগ করার পাশাপাশি চীনের উন্নয়ন লাভ ভাগাভাগি করতে থাকবে। এছাড়া, তাদের মধ্যে ৯৮.৭ শতাংশ চীনে তাদের বিনিয়োগ বজায় রাখবে বা সম্প্রসারণ করবে।

বর্তমানে চীনের অর্থনীতি স্পষ্টভাবে স্থিতিশীল ও সমবেত হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের ইতিবাচকতা অব্যাহতভাবে উদ্দীপ্ত করা হচ্ছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে চীন প্রায় ৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বিদেশি পুঁজি ব্যবহার করেছে। যা অব্যাহতভাবে বৃদ্ধির প্রবণতা বজায় রেখে ছিল এবং বিদেশি বিনিয়োগের জন্য চীনের শক্তিশালী "চুম্বকীয় আকর্ষণ" আবারও প্রদর্শন করা হচ্ছে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টালিনা জর্জিভা বলেছেন, চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রবণতা সুষ্ঠু রয়েছে। চলতি বছর বিশ্ব অর্থনৈতিক বৃদ্ধিতে এর অবদান হার এক তৃতীয়াংশ অতিক্রম করবে। যা অন্যান্য দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ সরবরাহ করবে।

২০২৩ সালে সরকারি কার্যবিবরণীতে বলা হয়, আরও বেশি মাত্রায় বিদেশি পুঁজি আকর্ষণ ও ব্যবহার করা হবে। জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশনের পরিচালক জেং শানচিয়ে চীন উন্নয়ন ফোরাম-২০২৩ বার্ষিক সম্মেলনে বলেন, চীনের সঙ্গে যাওয়ার মানে সুযোগের সঙ্গে যাওয়া। চীনে বিনিয়োগ করা মানে ভবিষ্যতে বিনিয়োগ করা। (প্রেমা/এনাম)