চীনা বাণিজ্য বিশ্ব অর্থনীতির প্রাণশক্তি: সিএমজি সম্পাদকীয়
2023-04-14 15:26:41

 

এপ্রিল ১৪: থাইল্যান্ডের বিদ্যুৎ চালিত গাড়ির বাজারে কোন প্রতিষ্ঠান নেতৃত্ব দিচ্ছে। এর উত্তর হচ্ছে চীনের বিওয়াইডাব্লিউ। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের আটোলাইফ সরকারী ওয়েবসাইটের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বিওয়াইডাব্লিউ’র একটি বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি টানা তিন বছর ধরে বিক্রির পরিমাণে শীর্ষ হয়েছে।  এটি চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যিক পণ্যের বিদেশে জনপ্রিয়তার একটি উদাহরণ। চীনের শুল্ক সদরদপ্তর গতকাল (বৃহস্পতিবার) জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি, লিথিয়াম ব্যাটারি, সৌরশক্তি চালিত ব্যাটারিসহ তিনটি পণ্যের রপ্তানি পরিমাণ ৬৬.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে এ তিনটি পণ্য। গতকাল  চায়না মিডিয়া গ্রুপের এক সম্পাদকীয়তে এ মন্তব্য করা হয়েছে।

 

সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। প্রধান প্রধান অর্থনৈতিক সত্তার প্রবৃদ্ধি দুর্বল হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি বছর সারা বিশ্বে মালামাল বাণিজ্যের পরিমাণ মাত্র ১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে, যা গত বছরের চেয়ে ২.৫ শতাংশ কম। সংরক্ষণবাদ ও ভূ-রাজনীতির কারণে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যিক উন্নয়নও অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।

 

প্রথম প্রান্তিকে চীনের মালামাল বাণিজ্যের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ৯.৮৯ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪.৮ শতাংশ বেশি। একইসঙ্গে প্রথম প্রান্তিকে আমদানি-রপ্তানিতে লিপ্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাস্তব ট্রেড করেছে, এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৫৭ হাজার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.৯ শতাংশ বেড়েছে। তাতে প্রতিফলিত হয় যে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। চীনের অর্থনীতি নমনীয়ভাবে বছরের শুরুতে ভালো সূচনা সৃষ্টি করেছে, যা সারা বছর বৈদেশিক বাণিজ্যের স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছে।

 

চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের গুণগত মানসম্পন্ন উন্নয়নের জন্য আকার ধরে রাখা এবং কাঠামো সুবিন্যস্ত করা প্রয়োজন। তবে, হাই-টেক, যোগ্য মূল্য এবং সবুজ রূপান্তরসব নানা চমক দেখা দিয়েছে চীনা পণ্যে। তা ছাড়া, আরও দুটি চমক উল্লেখযোগ্য। প্রথমত, চীনের বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের আমদানি-রপ্তানির প্রবৃদ্ধির হার পুরো বৃদ্ধির চেয়ে বেশি। দ্বিতীয়ত: চীন ও নবত্থিত দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক আদান-প্রদান অনেক ঘনিষ্ঠ হয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে আসিয়ান, ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকাসহ নানা নবত্থিত দেশের সঙ্গে চীনের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ যথাক্রমে ১৬.১, ১১.৭ ও ১৪.১ শতাংশ বেড়েছে।

 

বিশ্ব ব্যাংক গত মার্চ মাসের শেষ দিকে পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনীতির পূর্বাভাস প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে ২০২৩ সালে চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ৫.১ শতাংশে উন্নীত করেছে, যা গত ফেব্রুয়ারির পূর্বাভাসে ৪.৩ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি। চীনের অর্থনীতির অব্যাহত পুনরুদ্ধারে আমদানি চাহিদাও অনেক বাড়বে।  যার ফলে রপ্তানি আরও বেগবান হবে। একই সঙ্গে চীন উচ্চ মানের উন্মুক্তকরণ বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য দৃঢ় সমর্থন দিয়েছে। চলতি বছর ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ উত্থাপনের দশম বার্ষিকী। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ বরাবর দেশগুলোর সঙ্গে চীনের আমদানি-রপ্তানির প্রবৃদ্ধির হার ছিল সামুদ্রিক প্রবৃদ্ধির পরিমাণের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি।

 

উল্লেখ্য, আরসিইপি আগামী ২ জুন ফিলিপিন্সে কার্যকর হবে। ফলে আরসিইপি তার ১৫টি সদস্য দেশে কার্যকর হবে। তাতে বাজার সম্প্রসারণ এবং বাণিজ্যিক আদান-প্রদান আরও জোরদার হবে। বর্তমানে বিশ্ব পরিস্থিতি কঠিনতার মুখে পড়েছে। বাণিজ্যের ওপর এখনও চাপ রয়েছে। তবে, চীনের অর্থনীতি বলিষ্ঠ, সম্ভাবনাময় এবং প্রাণবন্ত রয়েছে। চীনের অর্থনীতির সুস্থতার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব বৈদেশিক বাণিজ্য ভালো দিকে এগুবে এবং বিশ্বের জন্য আরও কল্যাণ বয়ে আনবে বলে আশা করা যায়।

 

(রুবি/এনাম/লাবণ্য)