এপ্রিল ১১: তৃতীয় চীন আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলা গতকাল (সোমবার) চীনের হাই নান প্রদেশের হাই খৌ শহরে উদ্বোধন হয়েছে। এ মেলা চীনের কোভিড-১৯ প্রতিরোধকাজ নিয়মিত ও স্বাভাবিক করার পর আয়োজিত প্রথম গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী। এ মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি কর্মকর্তাগণ মনে করেন, ভোগ্যপণ্য মেলা বিশ্ব প্রতিষ্ঠানের জন্য চীনের উন্নয়নের সুযোগ শেয়ার করার প্ল্যাটফর্ম প্রদান করেছে। চীনের ভোগ্যবাজার বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য সহায়ক হবে।
ইতালি এ মেলার প্রধান অতিথি দেশ। মেলায় দেশটির প্রদর্শিত পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে গয়না, পোশাক, চশমা, আইসক্রিম সরঞ্জাম ইত্যাদি। ইতালির পণ্যের পরিমাণ গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে।
মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন,“ইতালি এবার মেলার প্রধান অতিথি দেশ। তাতে আমরা খুব গর্বিত। আমরা মনে করি যে বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এবং ইতালি-চীন আর্থ-বাণিজ্যিক সম্পর্ক গভীর করতে যৌথ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। ইতালির পণ্য উদ্ভাবনশীল এবং বৈচিত্র্যময়। ফলে চীনে এর জনপ্রিয়তা রয়েছে। এবারের মেলায় সে সব বৈচিত্র্য ধরে রাখা হয়েছে। ইতালির পণ্যগুলো চীনা ও বিশ্বের ভোক্তাদের কাছে আরও প্রিয় হয়ে উঠবে।”
ভোগ্যপণ্য মেলা চীনের প্রথম পণ্য কেন্দ্রিক জাতীয় পর্যায়ের প্রদর্শনী এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্য মেলা। চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েন থাও এদিন বলেন, এবারের মেলায় আন্তর্জাতিকীকরণের চমক আরও তুলে ধরা হয়েছে। এটি দেশি-বিদেশী বাজারের সম্পদ সংযুক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ বন্ধনে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন,“চীনে আছে বিশাল বাজার এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদার সম্ভাবনা। ২০২২ সালে সামাজিক ভোগ্যপণ্যের খুচরা বিক্রির পরিমাণ ৪৪ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়েছিল। ভোগ্যপণ্যের আমদানির পরিমাণ ছিল ১.৯ ট্রিলিয়ন ইউয়ান। ভোগ্যপণ্য মেলার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত চীনা বাজারের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে এবং চীনের বাজারের সুযোগ শেয়ার করতে পারে। এবারের মেলায় রয়েছে ২০ হাজার বর্গমিটার দেশীয় প্রদর্শনী প্যাভিলিয়ন। তাতে সারা বিশ্বের ক্রেতা, ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের কাছে চীনের উৎকৃষ্ট মানের পণ্যগুলো প্রদর্শিত হয়, যাতে চীনের অধিকতর সুষ্ঠু পণ্যগুলো বাজারে হাজির হতে পারে।”
আগের দুটি ভোগ্যপণ্য মেলায় অংশগ্রহণকারী আন্তঃদেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপকভাবে উপকৃত হয়েছে। শিশেডো গ্রুপ তৃতীয়বারের মতো এ মেলায় অংশ নিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির ভোগ্যপণ্য মেলাবিষয়ক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা চেন চি চি আমাদের সাংবাদিককে বলেন,“প্রতি বছর আমরা দেখতে পাই যে ভোগ্যপণ্য মেলায় উন্মোচিত নতুন পণ্যের পরিমাণ, গুণগতমান এবং খাতের দিক দিয়ে আগের মেলার তুলনায় বৃদ্ধি পায়। তাতে বিশ্বে নতুন ভোগের ক্ষেত্রে ভোগ্যপণ্য মেলার নেতৃস্থায়ী ভূমিকা এবং চীনা বাজারের ব্যাপক আকর্ষণ প্রতিফলিত হয়। এ পর্যন্ত ভোগ্যপণ্য মেলা পর্যটন, সংস্কৃতি ও ভোগসহ বেশ কয়েকটি আধুনিক পরিষেবা শিল্পকে যুক্ত করে সংমিশ্রণী কার্যকারিতা সৃষ্টি করেছে। তা হাই নান প্রদেশের অবাধ বাণিজ্যিক বন্দর নির্মাণের জন্য দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছে। চীনের নতুন দফা উচ্চ মানের উন্মুক্তকরণের কাঠামোতে ভোগ্য শিল্পে যে ব্যাপক সুযোগ প্রদর্শিত হচ্ছে, তাতে এ মেলায় অংশ নেওয়ার মাধ্যমে আমাদের গ্রুপ আরও আস্থাশীল হয়েছে।”
প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপার্স চায়না এম এন্ড এ এডভাইজরি সার্ভিসের অংশীদার সুন পান বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কুপ্রভাব দূর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চীনের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, বিশেষ করে ভোগ পুনরুদ্ধার হয়েছে। তা বিশ্ব অর্থনীতির জন্য নতুন চালিকাশক্তি যোগাবে।
(রুবি/এনাম লাবণ্য)