‘ঘুরে বেড়াই’ পর্ব- ১৩
2023-04-11 16:06:10

এবারের পর্ব সাজানো হয়েছে   

১। কাশগরের ইদকাহ মসজিদ

২। কুইচৌ প্রদেশ বাংলাদেশের চেয়েও বড়: আফসানা ফেরদৌস আশা 

 

বিশ্বব্যাপী অপরূপ সৌন্দর্যের চাদর বিছিয়ে রেখেছে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি। কতো-শতো দেশ, কতো সংস্কৃতি, কতো ভাষা, কতো পেশা,.... কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতি কিংবা সময়ের টানাটানিতে দেখা হয় না, ‘ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’  

‘একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশির বিন্দু...’সেই অদেখাকে দেখাতেই আমাদের আয়োজন "ঘুরে বেড়াই"।

দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থান, সেখানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, এবং সেই স্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অর্থনীতি নিয়ে আমাদের অনুষ্ঠান ‘ঘুরে বেড়াই’।

ঘুড়ে বেড়াই অনুষ্ঠানের ১৩তম পর্ব আজ। আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি, আফরিন মিম।   

১। কাশগরের ইদকাহ মসজিদ

চীনের উইগুর স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াংয়ের বৃহত্তম মসজিদ হলো কাশগর শহরে অবস্থিত ইদকাহ মসজিদ। এই মসজিদের আরও কয়েকটি নাম রয়েছে। একে ‘ঈদগাহ, ‘আই টিকা এর ছিংচেনসি,  হাইটগাহ মেসচিতি নামেও অভিহিত করা হয়।

এটি শুধু সিনচিয়াংয়ের বৃহত্তমই নয়, সমগ্র চীনের অন্যতম বড় মসজিদও। প্রতি শুক্রবারে জুম্মায় এখানে বিপুল সংখ্যক মুসল্লির সমাগম ঘটে।  এখানে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার মানুষ জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন।

মূলত ১৪৪২ সালে সাছিজ মির্জা এই মসজিদ নির্মাণ করেন। তবে মসজিদ প্রাঙ্গণে ৯৯৬ সালের কয়েকটি প্রাচীন স্থাপনা এখনও রয়েছে।  বলা হয়ে থাকে, মসজিদ স্থাপনের আগে এ জায়গায় মুসলিম কবরস্থান ছিল। এমন কয়েকটি প্রাচীনকবর এখনও এখানে রয়েছে।

১৬ হাজার ৮০০ বর্গমিটার (চারএকর) এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে মসজিদ কমপ্লেক্স।  সোনালি ইটের তৈরি মসজিদের আধুনিক ভবন গড়ে ওঠে ১৭৯৮ সালে।  ১৮৩২ সালে সংস্কার কাজের মাধ্যমে এর পরিধি আরও বাড়ানো হয়। বর্তমানেও এই ভবনটি ব্যবহৃত হচ্ছে।

এখানে রয়েছে প্রাঙ্গণ, প্রার্থনাকক্ষ, ফটকভবন এবং মিনার। বিশাল ফটকভবন পার হয়ে প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে হয়। মসজিদ প্রাঙ্গণ অনেক বিস্তৃত। এখানে রয়েছে পপলার ও পাইনগাছ। ছায়াময় প্রাঙ্গণটি শান্তিপূর্ণ। আরামদায়ক শীতলতা ছড়িয়ে আছে সর্বত্র।  প্রাঙ্গণ সংলগ্ন একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরের টলটলে জলে সবুজ গাছের ছায়া অত্যন্ত মনোরম দৃশ্য ফুটিয়ে তোলে।

 

হল অব প্রেয়ার বা প্রধান প্রার্থনা কক্ষ মসজিদের পশ্চিমদিকে অবস্থিত। হালকা নীলরঙের স্তম্ভ উঁচুতে ছাদ ধরে রেখেছে। মসজিদে ফুল ও লতাপাতার কারুকার্য রয়েছে।

মসজিদটি কাশগরের প্রাণকেন্দ্রে প্রধান চত্বর বা চকে অবস্থিত। জুম্মার নামাজ আদায় করতে অনেক দূর থেকেও মুসলিমরা আসেন।

ঈদের সময় সিনচিয়াংয়ের অন্যান্য জায়গা থেকেও অনেকে কাশগড় আসেন এই মসজিদে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য। ঈদের নামাজে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেন। তখন মসজিদের সামনের খোলা চত্বরে বা চকে ঈদের জামাত হয়। ঈদের নামাজের পর প্রধান চত্বরে সবাই জমায়েত হয় এবং এখানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা চলে।

প্রতিবেদন- শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা- আফরিন মিম

২। কুইচৌ প্রদেশ বাংলাদেশের চেয়েও বড়: আফসানা ফেরদৌস আশা 

চীনের কুইচৌ প্রদেশ বাংলাদেশের চেয়েও বড়। শিক্ষার্থীদের সামনে এভাবেই কুইচৌ প্রদেশকে তুলে ধরেন আফসানা ফেরদৌস আশা।

আফসানা ফেরদৌস আশা

তিনি কুইচৌ প্রদেশের কুইয়াং শহরে থেকেছেন দীর্ঘ চার বছর। পড়ালেখা করেছেন কুইচৌ বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের চীনা ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগ ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী ও আধুনিক ভাষা বিভাগের   খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

আফসানা ফেরদৌস আশা

চীন ঘুরার অভিজ্ঞতা নিয়ে ঘুরে বেড়াই অনুষ্ঠানে আফসানা জানান, “ চীনে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি প্রথমে গিয়েছিলাম মাওথাই। সেখানকার মাওথাই ওয়াইন মিউজিয়ামে গিয়েছি। কিভাবে বানায় ,এর সাথে প্রচলিত লোকগাথা সম্পর্কে জেনেছি। এছাড়া গিয়েছি জুনি নামক জায়গার চা বাগানে। যেখানে বাগানেই থেকেছি। এখানের ফ্যাক্টরিতে যারা কাজ করে তাদের সাথে থেকে চা সংগ্রহ, চা বানানো দেখেছি”।

চীনা বন্ধুদের সাথে আফসানা ফেরদৌস আশা

একা একা ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে আফসানা বলেন, “ প্রথমে আমি অল্প চীনা ভাষা জানতাম। সেই অল্প জানা নিয়েই আমি গিয়েছিলাম লিউ ফান শুয়ে। এখানে আমি বরফ দেখতে গিয়েছিলাম। এছাড়া এখানে ন্যাশনাল পার্ক ছিল।সেটিও দেখার সুযোগ হয়েছিল। কুইচৌ প্রদেশের বাইরে হনান প্রদেশে চাংচিয়েচিয়ে তে ঘুরতে গিয়েছিলাম। বিদেশী শিক্ষার্থীদের এখানে ঘুরতে যাওয়ার আগ্রহ থাকে একটু বেশি। এখানে আছে গ্লাস ব্রিজ, ক্যাবল কার। এছাড়া ন্যাশনাল ফরস্ট আছে যেখানে ঘুরতে তিন দিন লাগে”।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সাথে আফসানা ফেরদৌস আশা

“ ঘুরতে যাওয়ার একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে অন্যান্য দেশে যেমন বিদেশীদের জন্য একরকম টিকিট মূল্য আর স্থানীয়দের জন্য আরেকরকম টিকিট মূল্য থাকে। চীনে সেরকম নেই । আর স্টুডেন্টদের জন্য ছাড় ছিল সেটা দেশি স্টুডেন্ট  কিংবা বিদেশী স্টুডেন্ট হোক। তো আমার যেহেতু স্টুডেন্ট আইডি ছিল আমি বেশ সুবিধা পেয়েছি”

সাক্ষাৎকার –আফরিন মিম

 

পরিকল্পনা ও প্রযোজনা ও অডিও সম্পাদনা- আফরিন মিম

সার্বিক তত্ত্বাবধান- ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী