এপ্রিল ৯: ‘আমরা একসাথে হলে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ তৈরি হবে। ফ্রান্স-চীন বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক!’ ৭ এপ্রিল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকখোঁ চীনা, ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ-কথাটি লিখেছেন। এদিন ব্রিটেনের ‘ফাইন্যানশল টাইমস্’ পত্রিকার এক প্রবন্ধে বলা হয়, ‘দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদার করা বা ইউক্রেন সংকট সমাধান এগিয়ে নেয়ার জন্য, ইমানুয়েল ম্যাকখোঁর এবারের সফর অনেক অর্থপূর্ণ।’ এ বিষয়টি সিআরআই সম্পাদকীয় ব্যাখ্যা করেছে।
ইমানুয়েল ম্যাকখোঁ দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এটি তাঁর তৃতীয়বার চীন সফর। ৫ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তাঁর সঙ্গে বেইজিং ও কুয়াংচৌয়ে গভীর ও উচ্চ গুণগত মানের মতবিনিময় করেছেন। তাঁদের বোঝাপড়া ও আস্থা জোরদার হয়েছে। যা দু’দেশের সহযোগিতার জন্য দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। দু’পক্ষ যৌথ ঘোষণা দিয়েছে। যাতে রাজনৈতিক সংলাপ জোরদার করা, একযোগে বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা এগিয়ে নেওয়া, অর্থনৈতিক বিনিময় জোরদার করা, সাংস্কৃতিক বিনিময় পুনরুদ্ধার ও একযোগে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা-সহ নানা খাতে রয়েছে।
নয়া চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠাকারী প্রথম পশ্চিমা বড় দেশ ফ্রান্স। দেশটি চীনের সঙ্গে সার্বিক কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্ক ও পদ্ধতিগত কৌশলগত সংলাপ প্রতিষ্ঠাকারী প্রথম পশ্চিমা বড় দেশ। অনেক বিষয়ে দু’পক্ষের অভিন্ন মতামত রয়েছে।
দু’দেশের নেতৃবৃন্দের বৈঠকের সাফল্য থেকে বোঝা যায়, নতুন সময়ে দু’দেশের অভিন্ন মতামত ও সহযোগিতা আরো বেড়েছে।
এর মধ্যে ‘সংলাপ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার’ হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাবে, দু’দেশের কৌশলগত, অর্থ ও সাংস্কৃতিক- এ তিনটি উচ্চ পর্যায়ের সংলাপের ব্যবস্থা এক সময় স্থগিত হয়ে পড়ে। দুপক্ষ জানায়, ‘দু’দেশের নেতৃবৃন্দের বার্ষিক সাক্ষাতের ব্যবস্থা’ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি, এ বছর দু’দেশের কৌশলগত, অর্থ ও সাংস্কৃতিক-তিনটি উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ ব্যবস্থার নতুন সম্মেলন আয়োজন করা হবে। পাশাপাশি, দুপক্ষ আরো ঘোষণা করেছে যে পরস্পরের সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ডের অখণ্ডতা ও মৌলিক স্বার্থকে সম্মান জানাবে দু’পক্ষ। ফ্রান্স ফের ‘এক চীন নীতির’ অবিচল থাকার ঘোষণা করে। এতে দু’পক্ষের উচ্চ মানের রাজনৈতিক আস্থা প্রতিফলিত হয়।
বাণিজ্যিক সহযোগিতা জোরদার করা ইমানুয়েল ম্যাকখোঁর এবারের চীন সফরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন সার্বিকভাবে এগিয়ে নিচ্ছে চীন। যা ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে আরো বেশি সুযোগ দিয়েছে।
ইউক্রেন সংকটের বিষয়ে চীন দ্রুত আলোচনা পুনরুদ্ধার করাসহ ৫টি বাস্তব প্রস্তাব দিয়েছে। ম্যাকখোঁ ও ইইউ নেতা জানান ‘শান্তি ও আলোচনা বাস্তবায়ন এগিয়ে নেওয়ার পদ্ধতি খুঁজে বের করার জন্য চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চান তাঁরা।’
আগামী বছর চীন-ফ্রান্স কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৬০তম বার্ষিকী। দু’দেশের নেতৃবৃন্দের দিক-নির্দেশনায়, দু’পক্ষের সম্পর্ক অবশ্যই আরো উচ্চ মানে উঠবে এবং তা চীন-ইউরোপ সম্পর্ক এগিয়ে নেবে।
(আকাশ/তৌহিদ/ফেইফেই)