তিব্বতের উত্তর দিকের মালভূমি
তিব্বতের উত্তর দিকের মালভূমি পূর্ব ও পশ্চিমে ২৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং দক্ষিণ ও উত্তরে ৭০০ কিলোমিটার প্রশস্ত। এই মালভূমি তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মোট আয়তনের তিন ভাগের দুই ভাগজুড়ে আছে। এখানকার তৃণভূমি তিব্বতের প্রধান পশুপালন এলাকা। এখানে আছে ‘ছিয়াং থাং’ প্রাকৃতিক সংরক্ষিত এলাকা, যার মোট আয়তন ৭ লাখ বর্গকিলোমিটার। এটি বিশ্বে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সবচেয়ে উচুঁতে অবস্থিত প্রাকৃতিক সংরক্ষিত অঞ্চল। এখানে আছে ঘন ঘন হ্রদ, সীমাহীন তৃণভূমি, তুষারাবৃত পর্বত, ও হিমবাহ। এখানকার অনেক বন্যপ্রাণী আছে যেগুলো বিপন্ন প্রজাতির। এসব বিপন্ন প্রজাতির মধ্যে রয়েছে তিব্বতি হরিণ, বন্য ইয়াক, তিব্বতি বন্য গাধা, তিব্বতি স্নো চিকেন, বার-হেডেড হংস, ইত্যাদি। এ জায়গাটিকে ‘প্রাকৃতিক চিড়িয়াখানা’ বলে ডাকা হয়।
তিব্বতের পূর্ব দিকের আলপাইন উপত্যকা এলাকা
তিব্বতের পূর্ব দিকের আলপাইন উপত্যকা এলাকা তথা হেংতুয়ান পর্বতমালা ও তিন নদীর অববাহিকা এলাকা, ‘নাছুই’-এর পূর্ব দিকে অবস্থিত। এর উত্তরাঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫২০০ মিটার উুচুতে অবস্থিত। এখানে খাড়া পাহাড় রয়েছে। পাহাড়ের চূড়ায় সারাবছর তুষার জমে থাকে। পাহাড়ের মাঝে ঘন বন আছে এবং পাহাড়ের পাদদেশে চিরসবুজ গ্রামীণ প্রকৃতি রয়েছে, যা অদ্ভূত ও আকর্ষণীয়।
তিব্বতের দক্ষিণ দিকের উপত্যকা এলাকা
তিব্বতের দক্ষিণ দিকের উপত্যকা এলাকা ‘কাং তি সি’ পর্বত ও হিমালয় পর্বতের মধ্যে অবস্থিত। এর গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৫০০ মিটারের কাছাকাছি। ইয়ারলুং জাংবো নদী তিব্বতের দক্ষিণ ও পূর্ব দিক দিয়ে প্রবাহিত হয় তীব্র গতিতে, কিন্তু এ অঞ্চল দিয়ে এটি প্রবাহিত হয় শান্তভাবে। এর ফলে এ অঞ্চলে বহু সমতল উপত্যকা সৃষ্টি হয়েছে। এসব উপত্যকার আকার এক নয়। এগুলো প্রস্থে ৭ থেকে ৮ কিলোমিটার এবং দৈর্ঘ্যে ৭০ থেকে ১০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি। এখানকার সমতল ভূখণ্ড ও উর্বর মাটি স্থানীয় কৃষির উন্নয়নে শ্রেষ্ঠ সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ‘থু ফান’ রাজবংশ আমল থেকে এ জায়গাটি ‘তিব্বতের শস্যভাণ্ডার’ হিসেবে পরিচিত।
হিমালয় পর্বতমালা এলাকা
তিব্বতের দক্ষিণ দিকে হিমালয় পর্বতমালা এলাকার অবস্থান। ভারত, নেপাল ও ভুটানসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে চীনের ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকা এটি। এর গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬০০০ মিটারের কাছাকাছি। এটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পবর্তমালা। এখানেই, চীন ও নেপালের সীমান্তে, মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। পর্বতমালার পশ্চিমাঞ্চলের আবহাওয়া শুষ্ক ও ঠাণ্ডা। এতদঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং এখানে ঘন বনও রয়েছে।
সুপ্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে তিব্বত’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও তিব্বতের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা: https://bengali.cri.cn/ সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (উর্মি/আলিম)