জনসাধারণের মাঝে সি চিন পিং
2023-04-06 19:01:48


 

চীনের হ্য পেই প্রদেশের থাং ছোং সিউ’র আঙ্গিনায় ফুলের সুগন্ধি পাহাড় অতিক্রম করে ছড়িয়ে পড়ছে।

এক দিন এক রাত ধরে তুষার পড়ে। পরে পাহাড় সাদা, ঢালু সাদা এবং বাড়িঘর ও বৃক্ষও সাদা হয়ে উঠে।

বিশাল তুষারের সাগরে একটার পর একটা লাল লণ্ঠন ঝুলন্ত রয়েছে, তাতে লুও থুও ওয়ান গ্রামের সৌন্দর্য প্রতিফলিত হয়।

জানালার বাইরে তুষার পড়ে, জানালার ভিতরে ফুল ফোটে। থাং ছোং সিউ’র সিটিং রুমে রয়েছে চটকদার লাল রঙের সাইক্ল্যামেন ফুল, হলুদ রঙের ক্যাকটাস ফুল ফোটে, এবং কাঁকড়া ক্লো অর্কিড গোলাপী ফুলের কুঁড়ি ধরে। আরও আছে অ্যাসপারাগাস বাঁশ ইত্যাদি ফুল। তাদেরকে মেঝে, জানালার পাশে এবং ক্যাবিনেটে রাখা হয়। তাদের কারণে এ ছোট ঘরে বসন্তের আমেজ বিরাজ করে।

 

“এখন বাড়িতে আছে হিটিং ব্যবস্থা। তাই ফুলগুলো আগের মতো ঠাণ্ডায় মারা যায় না”। শীত্কাল আসলে থাং ছোং সিউ ও তার স্বামী কিছু কিছু ফুল ভূগর্ভস্থ ভাণ্ডারে রাখেন এবং কিছু কিছু ফুল ঘরের ভিতরে স্থানান্তর করেন।

তরুণ বয়স থেকে থাং ছোং সিউ ফুল চাষ পছন্দ করেন। তবে, তিনি কখনো ভাবেন নি যে বৃদ্ধ হয়ে তার এ শখ উপার্জনের পেশায় পরিণত হতে পারে।

 

তিনি বলেন, “আগে খুব গরিব ছিলাম। ফুল কিনতে পারতাম না। তাই জমিতে অজানা ফুল ঘাস দেখে বাড়িতে নিয়ে আসতাম। অথবা কিছু বীজ পেলে রোপণ করতাম। এখন বাজারে গেলে সুন্দর ফুল দেখলেই আমি কিনে বাড়িতে নিয়ে আসি।”

 

পানি ও সার দেওয়া এবং পাতার ওপর নজর রাখাসহ তিনি ফুলকে বাচ্চার মতো যত্ন নেন। পর্যটকরা ফুল দেখাতে ও উপভোগ করাতে পছন্দ করেন থাং ছোং সিউ। তিনি আরও প্রত্যাশা করেন যে অধিবাসীদের সুখী জীবন বয়ে আনা সে ‘আপন আত্মীয়’রা ফুল উপভোগ করতে আসবেন।

 

তিনি বলেন, “আমি গ্রীষ্মকালে তার আগমনের প্রত্যাশা করি। সে সময় আমার আঙ্গিনা একটি বর্ণাঢ্য ফুল বাগানের মতো হয়। হাইড্রেঞ্জা, পিওনি, চীনা গুল্মজাতীয় পিওনি ইত্যাদি, লাল, পোলাপী, সাদা এবং নীলসহ সব রঙের ফুল থাকে। তিনি পছন্দ করবেনই।” ফুলের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে থাং ছোং সিউ’র মুখে বলিরেখা বিস্তৃত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তিনি সব সময় এখানকার এটার পর ওটার কথা মনে রাখনে। একদিনের পর একদিন এবং এক বছরের পর এক বছর তিনি পরিশ্রম চালান। তাঁকে ফুল ফোটতে দেখাতে চাই, যাতে তার একটু আরাম হতে পারে।” যে আত্মীয়ের আগমন প্রত্যাশা করেন থাং ছোং সিউ, তিনি হচ্ছেন ২০১২ সালের ৩০ ডিসেম্বর তার আঙ্গিনায় আসা চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।

 

সে দিন প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, ‘আমি বরাবরই

সুযোগ বের করে আপনাদের দেখতে এবং দুর্গত লোকদের উত্পাদন ও জীবন-যাত্রার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাই। সবার সাথে মিলে দারিদ্রমুক্ত এবং সমৃদ্ধ হওয়ার উপায় বের করতে বসতে চাই।’ এভাবেই আন্তরিক কথাবার্তায় টাই হাং পুরোনো বিপ্লবী অঞ্চলের জনসাধারণকে মনোমুগ্ধ করেছেন তিনি।

 

নিরিবিলি ও মহান থাই হাং পবর্তাঞ্চলে এক সময় পার্টি ও গণমুক্তি ফৌজ রক্ষার জন্য লৌহ দেয়ালের ভূমিকা পালন করেছে। ঠিক যেন পর্বতের কারণে পবর্তাঞ্চলের ওপর বাইরের লোকদের দৃষ্টিকে ব্যাহত করা এবং পবর্তাঞ্চলে অধিবাসীদের সমৃদ্ধি অর্জন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।

 

“২০২০ সালে সার্বিক সচ্ছল সমাজ গঠন করতে হবে। তাতে অবশ্যই থাকবে গ্রামাঞ্চল, বিপ্লবী পুরোনো অঞ্চল এবং দরিদ্র অঞ্চলের সার্বিক সচ্ছলতা”। এ পবর্তাঞ্চলের গ্রামে সিপিসি, দেশ ও বিভিন্ন জাতিমুখী দারিদ্র্যবিমোচনের সংহতি আদেশ দিয়েছেন সি চিন পিং।

 

পরপরই এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের অগ্রযাত্রার হর্ন স্প্রিং ঠাণ্ডার এবং ওয়ার ড্রামের মতো নিখিল চীনের জমিতে আওয়াজ ছড়িয়ে পড়েছে।

 

আস্থা থাকলে হলুদ জমি সোনায় পরিণত হয়। সেকাল থেকে ৯ বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। থাই হাং পর্বত তার ভারী দ্বার খুলে দিয়েছে। দারিদ্র্যবিমোচনের আদেশে পর্বতাঞ্চলটির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। লুও থুও ওয়ান অধিবাসীদের সুখী ও হাসি শব্দ পর্বতের ভিতর থেকে বাইরে ছড়িয়েছে। বাইরের লোকেরা ‘নতুন যুগের ফুচ ফুলের উৎপত্তিস্থল’ খুঁজে পেয়েছে।

 

বসন্ত আর দূরে নয়। পাহাড়ী পিচ ফুল, এপ্রিকট ফুল, পিয়ার ফুল এবং আপেল ফুল শিগগিরই সমস্ত পাহাড় জুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। একের পর এক ধরণের ফুল ক্রমশ ফুটতে শুরু করে, যার মধ্য দিয়ে বৃহত্তম সুন্দর ছবি আঁকবে এবং আট শ’ মাইল বিস্তৃত থাই হাং পর্বতে তার সুগন্ধি ছড়িয়ে যাবে। থাং ছোং সিউ’র গ্রামীণ আঙ্গিনায় ফুলের সুগন্ধে লুও থুও ওয়ান গ্রামের দিন ও রাত এবং আজ ও ভবিষ্যতের সৌন্দর্য শোভা পাবে।

 

প্রিয় বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এ পর্যন্তই লুও থুও ওয়ান গ্রামে সি চিন পিং’র পরিদর্শনে কি ঘটেছে। পরবর্তী অনুষ্ঠানে আমরা তাঁর লুও থুও ওয়ান পরিদর্শনের বিস্তারিত জানাবো।