৬১ বছর বয়সী ছেন হুয়া ২০০৬ সাল থেকে দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ শুরু করেন। তিনি পৃথক পৃথকভাবে হেইলংচিয়াং প্রদেশের সাতটি শহর ও জেলার ৮টি গ্রামে দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ করেছেন। তিনি গ্রামগুলোয় খুবই জনপ্রিয়।
তিনি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, গ্রামে বড় হয়ে ওঠেন। তৃণমূল পর্যায়ে দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ করার আগে তিনি ছিলেন হেইলংচিয়াং প্রদেশের একজন সরকারি কর্মকর্তা। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি সুইলিং জেলার খাওশান থানা খাওশান গ্রামের প্রথম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন শুরু করেন। খাওশান গ্রাম ছিলো একটি প্রাদেশিক পর্যায়ের দরিদ্র গ্রাম। তিনি গ্রামে দারিদ্র্য নির্মূলের জন্য কাজ করতেন। এটি ছিল অষ্টম গ্রাম, সেখানে তিনি দারিদ্র্যমুক্তির জন্য কাজ করেছেন।
তিনি কৃষকদের মতো পোষাক পরেন। প্রতিবছরের জুন ও জুলাই মাসে তিনি সবচেয়ে ব্যস্ত থাকেন, কারণ গ্রামের বাসিন্দারা বছরের শুরুর দিক থেকে বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ফুল চাষ করে এবং জুন ও জুলাই হচ্ছে ফসল তোলার সময়। কৃষকদের বার্ষিক আয়ের মূল অংশটি আসে পরের দুই মাসে হারবিনে ফুল বিক্রয় থেকে। ছেন হুয়া খুবই ভোরে হার্বিন থেকে গ্রামে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে ফুল পরিবহনে সহায়তা করেন। ছেন হুয়া বলেন, ফুল বিক্রয় করার পর বাসিন্দাদের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
একদিন ৭০ হাজার ল্যান্ডস্কেপ ফুল গাড়িতে লোড হতে হতে বিকেল চারটা বাজে। ছেন হুয়া গাড়িতে করে ফুলগুলো হার্বিনে নিয়ে যান। তিনি গাড়িতে কিছু খেয়ে নেন এবং একসময় ঘুমিয়ে পড়েন। হার্বিন পৌঁছার পর তিনি দ্রুত ল্যান্ডস্কেপ ফুলগুলো ব্যবস্থাপনা করতে শ্রমিকদের নেতৃত্ব দেন।
এতো জটিল ও ভারি কাজ ছেন হুয়া অনেক বছর ধরে করছেন। তিনি অনেক বছরের দারিদ্র্যবিমোচনের অভিজ্ঞতা দিয়ে, গ্রামের বাসিন্দাদেরকে ফুল চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে মুক্তির কৌশল শিখিয়েছেন। তিনি গ্রামে 'যান্ত্রিক কৃষিদল' প্রতিষ্ঠা করেছেন ও 'ফটোভোলটাইক দারিদ্র্যবিমোচন শক্তিকেন্দ্র' নির্মাণ করেছেন, যাতে দরিদ্র পরিবারগুলোকে সহায়তা করা যায়। গ্রামবাসী ছাও জিন ইং বলেন, ‘আমাদের অনেক আজ আছে। বেশি কাজ হলে আমাদের আশা বেশি। আমাদের জীবনযাত্রার মান দিন দিন উন্নত হচ্ছে। আমাদের সুখও দিন দিন বাড়ছে।’
২০১৮ সালে খাওশান গ্রাম দারিদ্র্য থেকে মুক্তি লাভ করে। গ্রামের মানুষের বার্ষিক গড় আয় এখন ১০ হাজার ইউয়ানের বেশি। গ্রামের সমষ্টিগত সম্পদ ৫৮.১ লাখ ইউয়ান। গ্রামটি জেলার উন্নত গ্রামের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।
২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর ছিল ছেন হুয়ার অবসর গ্রহণের দিন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটা মেনে নেওয়া কঠিন।’ তাঁর মনে হয়, আরো বেশি কাজ করতে পারতেন তিনি। গ্রামের বাসিন্দারাও চাইছিলেন, ছেন হুয়া গ্রামে তাঁর কাজ অব্যাহত রাখবেন। ছেন হুয়া বলেন, ‘আমি অবসর গ্রহণ করেছি, কিন্তু আমি সিপিসি'র একজন সদস্য। আমি আজীবন দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ করার চেষ্টা করে যাবো।’
বর্তমানে ছেন হুয়া'র চুল সাদা হয়েছে। কিন্তু তিনি তরুণের মতো কাজ করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘যখন আমি একটি গ্রাম ত্যাগ করি, তখন আমার খুশি লাগে এই ভেবে যে, গ্রামের অনেক উন্নতি হয়েছে। আমার মনে হয়, আমার কাজ অনেক মূল্যবান। সেজন্য আমি বরাবরই দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ করার চেষ্টা করতে থাকব।’ (ছাই/আলিম)