আধুনিক রাখাল লিউ কুও নিং
2023-03-30 14:25:55

৩৩ বছর বয়সী লিউ কুওনিংয়ের জন্মস্থান কানসু প্রদেশের ছিংইয়াং শহরের হুয়েন জেলা। তাঁর দাদা ও বাবা ছিলেন রাখাল।   ২০১৫ সালে তিনি ব্যবসা করার জন্য নিজের জন্মস্থানে ফিরে যান এবং ই-কমার্স চ্যানেলের মাধ্যমে তার জন্মস্থানে মাটন বিক্রি করা শুরু করেন। গত আট বছরে তার অনলাইন দোকানের বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ ৫ লাখ থেকে ১০ কোটি ইউয়ানে উন্নীত হয়েছে। যা তার গ্রামে ই-কমার্সের একটি বিশাল চ্যানেল তৈরি করেছে।

লিউ কুও নিংয়ের পূর্বপুরুষেরা বংশপরম্পরায় ভেড়া পালন করেন। তাদের জন্মস্থানের পরিবহন তেমন উন্নত ছিলো না। আগে তারা কল্পনা করতেন না যে, ভেড়া পালনের মাধ্যমে ধনী হতে পারে।

লিউ কুও নিংয়ের বাবা লিউ চোং মিং বলেন, ‘২০১৪ সালে বাসায় ৩শ’রও বেশি ভেড়া পালন করা হতো। সে সময় বিক্রি করার চ্যানেল ছিলো না। তখন আমার ছেলে লিউ কুও নিং ছিংতাওয়ে কাজ করতো। আমি তাকে বলেছি, তুমি চিন্তা করো, আমাদের এসব ভেড়া বিক্রি করতে পারি কিনা? পরে সে ই-কর্মাসের মাধ্যমে মাত্র কয়ে মাসের মধ্যে এসব ভেড়া বিক্রি করেছে।’

এই ঘটনা লিউ কুও নিংকে অনেক অনুপ্রেরণা দিয়েছে। ২০১৫ সালে চীনের গ্রামাঞ্চলে ই-কমার্স জনপ্রিয় করে তোলার একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প ছিলো। তা ছাড়া, শিল্প সৃষ্টি করার সংশ্লিষ্ট সমর্থনের নীতিমালাও আছে। তাই তিনি জন্মস্থানে ফিরে ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলেন।

শুরুতে তার জন্মস্থানে পরিবহনব্যবস্থা সুবিধাজনক ছিলো না। তার বাসায় ইন্টারনেটের সংযোগও ছিলো না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তার গ্রাম পর্যন্ত রাস্তা মেরামত করা হয়েছে। আগে গ্রাম থেকে জেলায় গিয়ে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় লাগত, কিন্তু এখন লাগে মাত্র ৪০ মিনিট। উচ্চ-গতির রেল এবং উচ্চ-গতির গাড়ি তাদের বাসার দরজার সামনে তৈরি হয়। যখন একজন গ্রাহক তার দোকান থেকে পণ্যদ্রব্য অর্ডার করেন, তখন দ্রুততম সময় ২৪ ঘন্টা এবং সবচে ধীর গতিতে হলে- প্রায় ৭২ ঘন্টার মধ্যে তাদের মাটন বেইজিং, শাংহাই এবং কুয়াংচৌ শহরে গ্রাহকদের টেবিলে পৌঁছে দেওয়া হয়।

লিউ কুও নিং বলেন, ‘এখন আমাদের বিক্রি দিন দিন বাড়ছে। এবং আমাদের ভেড়া শিল্প চেইন এখন আরও নিখুঁত ও সম্পূর্ণ হয়ে উঠছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রজনন, লালনপালন, জবাই, প্রক্রিয়াকরণ, বিক্রয়, সরবরাহ, লজিস্টিক্স ইত্যাদি, ভেড়া পালনের জন্য কৃষি বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করা হয়, বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ এবং অধ্যাপকও নিয়োগ করা হয়েছে, এটা অস্বাভাবিক নয়।’

লিউ কুও নিং মনে করেন, কৃষিকাজ কখনই একজনের ব্যাপার নয়। এখন তার জেলার সব লোক কঠোর পরিশ্রম করছে। গত বছর তার কোম্পানি ই-কমার্সের মাধ্যমে ১০ কোটি ইউয়ানের বেশি মাটন বিক্রি করেছে এবং এ বছরের লক্ষ্য তাকে দ্বিগুণ করা। লিউ কুও নিংয়ের মতো চীনে এখন আরও অনেক বেশি যুবক তাদের জন্মস্থানে ফিরে ব্যবসা শুরু করেছেন।