মার্চ ২৬: গত ২২ মার্চ, যুক্তরাষ্ট্রের সিনিয়র অনুসন্ধানী প্রতিবেদক সিমুর হার্শ, সামাজিক প্ল্যাটফর্মে আবার দাবি করেছেন যে, তথাকথিত "ইউক্রেনীয় সরকারপন্থী"-রা "নর্ড স্ট্রিম" পাইপলাইনে বোমা মেরেছে বলে যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে, সেটি স্রেফ ভুয়া। সত্যকে ধামাচাপা দিতে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এই ভুয়া খবরটি রচনা ও প্রচার করেছে।
প্রায় দেড় মাস আগে, হার্শ একটি নিবন্ধে বলেন, বাইডেন প্রশাসন "নর্থ স্ট্রিম" পাইপলাইন উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল আগেই, যা রাশিয়া থেকে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাস পরিবহন করে। এবারও, হার্শ বিশদ বিবরণ এবং প্রমাণ দিয়েছেন। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোল্জ চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ‘নর্থ স্ট্রিম’-এ বোমা হামলার ঘটনা আলোচনা করেন। পরবর্তীকালে, সিআইএ "নর্থ স্ট্রিম" পাইপলাইনের বিস্ফোরণ সম্পর্কিত সত্য ধামাচাপা দেওয়ার জন্য একটি "কভার স্টোরি" প্রস্তুত করতে জার্মান বিএনডি-কে সহযোগিতা করে। "সিআইএ এই কাজটি করেছে, বাইডেন পাইপলাইনটি ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মর্মে উত্থাপিত অভিযোগ খণ্ডন করার জন্য," হার্শ তাঁর রিপোর্টে বলেন।
হার্শের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য সত্য হলে, "নর্থ স্ট্রিম" ঘটনার একটি আন্তর্জাতিক তদন্তকাজে নেতৃত্ব দেওয়া এবং দ্রুত সত্য খুঁজে বের করা জাতিসংঘের জন্য আরও বেশি জরুরি। মানুষ লক্ষ্য করছে যে, জার্মান চ্যান্সেলর যুক্তরাষ্ট্রে তার সফর শেষ করার কয়েকদিন পরে, আমেরিকান "নিউইয়র্ক টাইমস" এবং জার্মান "ডাই জেইট" প্রায় একই সাথে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যে, "নর্থ স্ট্রিম" ঘটনার পিছনে "ইউক্রেনপন্থী"-রা সক্রিয় ছিল। হার্শের সর্বশেষ তথ্য একটি প্রশ্নের অবতারণা করতে পারে: এটি কি কাকতালীয়?
মার্কিন সরকারের প্রতিক্রিয়া দেখলে এটা আরও সন্দেহজনক মনে হয়। হার্শের প্রাথমিক তথ্য প্রকাশের পর এখন দেড় মাস হয়ে গেছে, এবং ওয়াশিংটন এ ব্যাপারে তেমন কিছু বলছে না। নীরব থাকার পাশাপাশি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও সংশ্লিষ্ট তদন্ত প্রতিরোধ করার চেষ্টা করছে। এর আগে, রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাব করেছিল, যার মূল বিষয় ছিল জাতিসংঘকে আন্তর্জাতিক তদন্ত পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রসহ নিরাপত্তা পরিষদের পশ্চিমা সদস্যরা আপত্তি তুলেছে। অথচ সর্বাধিক প্রামাণিক ও প্রতিনিধিত্বশীল আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসাবে, জাতিসংঘেরই উচিত এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়া ও সত্য খুঁজে বের করা। যুক্তরাষ্ট্র কেন এটি চাইছে না? নিজের দোষ ঢাকার জন্য?
মার্কিন সরকার শুধু অভিযোগ অস্বীকার করেই দায়িত্ব শেষ করছে। অথচ প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ অন্য কথা বলে। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রশ্ন ও উদ্বেগের জবাব দেওয়া এবং "নর্থ স্ট্রিম" ঘটনার একটি আন্তর্জাতিক তদন্তে জাতিসংঘের নেতৃত্বকে মেনে নেওয়া। অন্যথায়, নীরবতা সম্মতির লক্ষণ বলেই ধরে নিতে হবে। (ইয়াং/আলিম/ছাই)