সি চিন পিং ও সি ছুয়ানের গল্প
2023-03-24 18:10:52


চীনের সি ছুয়ান প্রদেশের মেই শান শহরে জুন মাস হলো প্রবল প্রাণবন্ত সময়। ২০২২ সালের ৮ জুন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং শহরটি পরিদর্শন করেন। তিনি মেই শান শহরের তো পো অঞ্চলের টাই হ্য উপজেলার ইয়ো ফেং গ্রাম ও সান সু ছি’তে স্থানীয় উচ্চমানের কৃষিক্ষেত নির্মাণ, গ্রামীণ পুনরুদ্ধার এবং ঐতিহাসিক সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি সংরক্ষণসহ নানা বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন।

 

সি ছুয়ান প্রদেশ নিয়ে সি চিন পিং’র গল্প বলতে গেলে লিয়াও চিয়া হ্য গ্রামে কাজ করার সময় থেকে বলা যায়। বিংশ শতাব্দীর ৭০-এর দশকে সি চিন পিং লিয়াং চিয়া হ্য গ্রামের সিপিসির সম্পাদক হিসেবে সি ছুয়ান প্রদেশে বায়োগ্যাস প্রকল্প সম্পর্কে জানতে যান। তার পর তিনি সায়ান সি প্রদেশের প্রথম বায়োগ্যাস পুল নির্মাণ করেন।

 

২০০৮ সালের ১২ মে সি ছুয়ান প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ভূমিকম্প কবলিত অঞ্চলে দুর্গতদের দেখতে যান। সিপিসি’র অষ্টাদশ কংগ্রেস থেকে সি চিন পিং সি ছুয়ান প্রদেশ পরিদর্শন করেন। তিনি দুই অধিবেশন চলাকালে সি ছুয়ান প্রদেশের প্রতিনিধিদলের পর্যালোচনায় অংশ নেন এবং সি ছুয়ান প্রদেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। এর সবই হচ্ছে সি ছুয়ান প্রদেশ ও তার অধিবাসীদের প্রতি প্রেসিডেন্ট সি’র গভীর আবেগের প্রতিফলন। আজকের এ অনুষ্ঠানে সি ছুয়ান প্রদেশে সি চিন পিং’র কিছু গল্পের অংশ আপনাদেরকে শুনাবো।

 

সেবারের ভূমিকম্পের পর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বেই ছুয়ান, ওয়েন ছুয়ান ও তুচিয়াংইয়ানসহ ভূমিকম্প কবলিত অঞ্চলে দুর্গতদের, ত্রাণ সাহায্যকারী ও উদ্ধারকারী এবং স্থানীয় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দেখতে যান। দুর্গতদের আবাসস্থলে সি চিন পিং একটার পর একটা শিবির ঘুরে দেখেন এবং মানুষদের খাওয়া-দাওয়া ও চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেন।

 

তিনি বলেন, ‘দুর্গতদের ভালোভাবে দেখভাল ও ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণকার্য্যকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং এসব কাজ বাস্তবতার সঙ্গে চালাতে হবে।’

 

২০১১ সালের ১৯ থেকে ২২ আগস্ট সি চিন পিং সি ছুয়ান প্রদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং ভূমিকম্প দুর্যোগ-উত্তর পুনর্বাসন সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে যান। বিমান থেকে নামার পর সর্বপ্রথমে তিনি তিন বছর আগের ভূমিকম্পে গুরুতর ক্ষতিগ্রস্ত বেই ছুয়ান জেলা পরিদর্শন করেন। বেই ছুয়ান জেলার চি না ছিয়াং গ্রামে তিনি গ্রামবাসী ও পর্যটকদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বলেন। স্থানীয়দের সঙ্গে বসে তাদের উত্পাদন ও জীবন-যাত্রা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। তাদের জীবনযাত্রার অবস্থাসহ নানা বিষয়ে জানতে চান সি চিন পিং। তিনি সকলকে পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের বাড়িঘর আরও সুন্দর ও সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলতে উত্সাহিত করেন। 

 

সি ছুয়ান প্রদেশের লিয়াং শান ই জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল একসময় নিখিল চীনের গরিব অঞ্চলের একটি ছিল। এর ওপর সি চিন পিং অনেক দৃষ্টি রাখেন। ২০১৮ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি সি চিন পিং তা লিয়াং শান পর্বতের দূরান্তে পরিদর্শন করেন। খাড়া ঢাল ও গভীর খাঁজকাটা বক্র রাস্তায় ৪ ঘণ্টার বেশি সময় নিয়ে তিনি চাও চুয়ে জেলার শান হ্য গ্রামে পৌঁছেন। গ্রামবাসী চিমুজিলুওর বাড়িতে বসে তিনি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, “ই জাতির মানুষকে সব সময় আমার মনে পড়ে। আমি প্রায়ই ছোট ও বড় লিয়াং শান পর্বতাঞ্চলে আসতে চাই। এখানে আসলে আরও আবেগী হয়ে উঠি। চীনে সমাজতন্ত্র গঠনের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের সুখী ও সুন্দর জীবন তৈরি করা। সার্বিকভাবে সচ্ছল সমাজ গঠনের পথে যে কোনো জাতি, পরিবার ও ব্যক্তিকে বাদ রাখা যাবে না।”

 

এটিই জনগণের প্রতি সি চিন পিং’র মনের কথা। তা জনগণের প্রতি তাঁর ভালোবাসার প্রতিফলন ঘটায়।

(রুবি/এনাম)