মার্চ ২২: চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং দেশের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ১৫ মার্চ বেইজিংয়ে সিপিসি এবং বিশ্বের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে উচ্চ-পর্যায়ের সংলাপে যোগ দেন। এ সময় তিনি ‘যৌথভাবে আধুনিকীকরণের পথে চলা’ শীর্ষক একটি ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, সিপিসি সবসময়ই অন্য দেশের জনগণের ভাগ্যের সঙ্গে তার নিজের ভাগ্যকে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত রাখবে, চীনা-শৈলীর আধুনিকায়নে নতুন সাফল্যের সঙ্গে বিশ্ব উন্নয়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করবে এবং মানুষের আধুনিকীকরণের পথ অন্বেষণ করার জন্য নতুন সহায়তা দেবে। তিনি মূল-ভাষণে প্রথমবারের মতো ‘বিশ্ব সভ্যতার উদ্যোগ’ উত্থাপন করেছেন। সংলাপে অংশগ্রহণকারী ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা সে ভাষণের উচ্চ মূল্যায়ন করেছেন। তারা মনে করেন, ভাষণে সিপিসি’র মেধা ও দায়িত্ববোধ প্রতিফলিত হয়েছে, যা বিভিন্ন দেশের আধুনিকায়ন বাস্তবায়নে নতুন পথ নির্দেশ করেছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা, উভয়ের-জয় ও অভিন্ন উন্নয়নের নতুন পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ বলেন, বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিজ নিজ দেশের বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়ন এগিয়ে নেওয়া, বৈশ্বিক সভ্যতার বিনিময় করা এবং মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি গঠন করা- সিপিসি'র আন্তরিক ইচ্ছা। তাঁরা মনে করেন, ‘বিশ্ব সভ্যতা উদ্যোগ’ বিভিন্ন সভ্যতার সহাবস্থান ও বিনিময় এগিয়ে নিতে ‘চীনা মেধা’ যুক্ত করেছে।
সংলাপে সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেছেন, বিশ্বে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সংকট চলছে। বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা কঠিন, উন্নয়নের ব্যবধান ক্রমাগত বাড়ছে, পরিবেশের ক্রমাগত অবনতি ঘটছে, স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতা দীর্ঘতর হচ্ছে এবং মানবসমাজের আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া আবারও ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে এসে পৌঁছেছে। এ অবস্থায় তিনি পাঁচ-দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। সি চিন পিং উল্লেখ করেন যে, আধুনিকীকরণ বাস্তবায়ন করা একটি স্বপ্ন, যা চীনা জনগণ আধুনিক যুগ থেকে চেষ্টা করে আসছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির ইতিহাস ১০০ বছরেরও পুরাতন। এ সময় চীনা জনগণকে জাতীয় পুনর্জাগরণের জন্য একত্রিত করা এবং নেতৃত্ব দেওয়ার ইতিহাস- আধুনিকীকরণের পথে অব্যাহত অনুসন্ধানের ইতিহাস। কয়েক প্রজন্মের নিরবচ্ছিন্ন চেষ্টার পর, চীনা শৈলীর আধুনিকীকরণ পাওয়া গেছে।
এদিকে, সিপিসি ও বিশ্বের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের মূল-ভাষণ সম্পর্কে বিভিন্ন দেশের রাজনীতিকরা উচ্চ মূল্যায়ন করেছেন। তারা জানান, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ভাষণ- বিভিন্ন দেশের পার্টি ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যৌথভাবে আধুনিকায়ন এগিয়ে নেওয়া এবং বিশ্বের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য আন্তরিক ইচ্ছার বহিঃপ্রকাশ।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট মাতামেলা রামাফোসা বলেন, প্রেসিডেন্ট সি’র উত্থাপিত সংলাপ ও সহযোগিতাকে আমরা সমর্থন জানাই।
সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুসিচ বলেন, চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথে অবিচল রয়েছে, বিশ্বের প্রশাসনিক ব্যবস্থার সংস্কার করছে, উন্মুক্ত ও সহনশীল মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি প্রতিষ্ঠা এগিয়ে নিচ্ছে এবং একযোগে মানবজাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতি প্রমোট করছে।
নাইজেরিয়ার ক্ষমতাসীন দল অল প্রগ্রেসিভ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভাষণে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জনগণকে শীর্ষে রাখার ধারণা উল্লেখ করেছেন। সিপিসি আধুনিকায়ন এগিয়ে নেওয়ার পথে সবসময় গণ-কল্যাণকে শীর্ষস্থানে রেখেছে।
ইতালির কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রেসিডেন্ট সি’র ভাষণ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তিনি ‘জনগণকে শীর্ষস্থানে রাখাকে’ গুরুত্বারোপ করেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা নেতৃবৃন্দ বিশ্বের অনেক দেশকে একত্রিত করেছেন। শান্তি, সহনশীলতা ও উন্নয়নের জন্য তা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ পদক্ষেপকে সঠিক বলেন তিনি।
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বৈশ্বিক সভ্যতার উদ্যোগ উত্থাপন করেছেন। যা ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ, বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগ ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এসব উদ্যোগের লক্ষ্য- মানবজাতির অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি নির্মাণ করা ও সুন্দর ভবিষ্যত গঠন করা।
ইরানের ইসলামিক ইউনাইটেড পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, চীন গণ-কল্যাণ বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। যা নিজ দেশের পাশাপাশি বিশ্বের জন্যও কল্যাণকর।
কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল বারমুডেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, আমরা সিপিসি ও বিশ্বের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সংলাপে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, দেশের প্রেসিডেন্ট কমরেড সি চিন পিং উত্থাপিত ‘বিশ্ব সভ্যতা উদ্যোগকে’ সমর্থন করি।