মার্চ ২১: ‘যুদ্ধ পরবর্তী বিশৃঙ্খলা প্রমাণ করেছে যে, ইরাক যুদ্ধই ছিল একটি ভুল, একটি দুর্যোগ।’ গত সোমবার মার্কিন ‘আটলান্টিক’ ওয়েবসাইটের সম্পাদকীয়তে একথা বলা হয়েছে। বিশ বছর আগে ২০ মার্চ, তথাকথিত ইরাকের গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার অজুহাতে, পশ্চিমা দেশগুলো একযোগে ইরাকে আগ্রাসন চালিয়েছিল। যাতে দুই লাখেরও বেশি বেসামরিক মানুষ মারা যায়। ৯০ লাখেরও বেশি মানুষ জন্মস্থান ছেড়ে পালিয়ে যায়। ২০ বছরেও যুক্তরাষ্ট্র ওই অস্ত্রের কোনো প্রমাণ দেয় নি। তবে, ইরাক যুদ্ধের কারণে অনেক ভোগান্তি হয়েছে; যা ‘মার্কিন গণতন্ত্রের’ নেতিবাচক রূপ প্রমাণ করে। সিআরআই সম্পাদকীয় এসব কথা বলেছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আত্ম-পর্যালোচনা করেনি। তারা এখনও গণতন্ত্রের নামে বিশ্বে দুর্যোগ সৃষ্টি করছে। শনিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত ‘২০২২ সালে মার্কিন গণতন্ত্রের পরিস্থিতি-বিষয়ক প্রতিবেদনে’ আরো স্পষ্টভাবে মার্কিন গণতন্ত্রের স্বরূপ দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পিউ রিসার্চ সেন্টারের জরিপে দেখা যায়, ৬৫ শতাংশ মার্কিনী মনে করেন, মার্কিন গণতন্ত্র ব্যবস্থার উচিত বড় সংস্কার করা। ৫৭ শতাংশ জরিপে অংশগ্রহণকারী মানুষ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন গণতন্ত্রের মডেল নয়। তবে, যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে ‘গণতন্ত্রের বিকন’ মনে করে, অন্য দেশে চাপ প্রয়োগ করে, নিজের স্বার্থে বিশ্বশান্তি নষ্ট করে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ২৪০ বছরের বেশি সময় মাত্র ১৬ বছর যুদ্ধ হয়নি। ২০০১ সাল থেকে সন্ত্রাসদমনের অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত যুদ্ধ ও সামরিক অভিযানে নয় লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। এর মধ্যে প্রায় তিন লাখ ৩৫ হাজার বেসামরিক মানুষ। এ ছাড়া লক্ষ লক্ষ মানুষ আহত হয়েছে ও জন্মস্থান ছেড়ে পালিয়েছে।
যুদ্ধের প্রতি মার্কিন ভালোবাসার কারণ কি? সম্প্রতি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস বলেছেন, ‘বিগত অনেক বছর ধরে মার্কিনীরা পেট্রোলিয়ামের জন্য যুদ্ধ করেছে।’ ইরাকের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়াদ আলাভি সিএমজিকে বলেন, ‘ইরাকের তথাকথিত ‘মার্কিন গণতন্ত্র’ ‘যুক্তরাষ্ট্রের সেবা করে, ইরাকের কল্যাণ নয়’।
ইরাক যুদ্ধের ২০ বছর পরে এসে মার্কিন রাজনীতিকের উচিত গভীরভাবে আত্ম-পর্যালোচনা করা এবং ‘গণতন্ত্রের’ নামে নেতিবাচক কাজ থেকে বিরত থাকা।
(আকাশ/তৌহিদ/ফেইফেই)