রোববারের আলাপন- ৬৫ বছর বয়সী নারীদের সাইকেলে চড়ে ১২টি দেশ ভ্রমণের গল্প
2023-03-19 20:42:25

আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘রোববারের আলাপন’। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আকাশ এবং....


বন্ধুরা, বেইজিংয়ে এখন সত্যিকার অর্থে বসন্তকাল এসেছে। তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছে। নীল আকাশে প্রখর সূর্য দেখা যায়। অনেক বড় বড় গাছের উঁচু শাখায় ফুল ফুটেছে। আমি এ আবহাওয়া অনেক পছন্দ করি। গত দুদিন ছুটি ছিল। আমি দুটি পার্কে গিয়েছি। ওখানে বড় লেক, ছোট ছোট পাহাড় আছে। তৌহিদ ভাই, আপনি ছুটিতে কোথায় গিয়েছেন? লাওসান পার্কে গিয়েছেন? বেইজিংয়ের এখনকার বা আমরা বলতে পারি বসন্তকালের সৌন্দর্য নিয়ে আপনি কিছু বলুন।

তৌহিদ:

বাংলাদেশের বসন্তকাল ও চীনের বসন্তকালের মধ্যে কি কি পার্থক্য আছে? 

তৌহিদ:

আপনার মতে এ মৌসুমে কি কি ধরনের খেলাধুলা করা ভাল? বসন্তকালে বেইজিংয়ে আপনি কীভাবে সময় কাটান?

তৌহিদ: 


সংগীত 

বন্ধুরা, আমরা আজ আগের মতো ক্রীড়াজগতের গল্প আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। তৌহিদ ভাই, আজকের গল্প আপনার পছন্দ হবে; তা হলো সাইক্লিং প্রসঙ্গে।

তৌহিদ:... ঠিক আছে শুরু করুন।


তালাকপ্রাপ্ত, হতাশাগ্রস্ত, আলঝেইমার রোগগুলো— ৬৫ বছর বয়সী মাদাম লি তং চু’র আগের ‘শত্রু’। এ সব শত্রু পরাজিত করার জন্য, তিনি সাইক্লিং শুরু করেছিলেন। ৮ বছর ধরে, তিনি খণ্ডকালীন কাজ করে কিছু টাকা উপার্জন করেন। এ টাকা এবং তার অবসরের পর পাওয়া পেনশনের টাকা দিয়ে তিনি ১৪টি দেশ ভ্রমণ করেন। এর মধ্যে ১২টি দেশে তিনি সাইক্লিং করে ভ্রমণ করেছেন।


৬৬ দিনে ইউরোপের ৫টি দেশে সাইক্লিং করেছেন, ৪৪ দিন থাইল্যান্ডে সাইক্লিং করেছেন। ট্রেনে করে রাশিয়ার পূর্ব প্রান্ত থেকে পশ্চিম প্রান্তে গিয়েছেন। সময় লেগেছে এক মাস। মাদাম লি তং চু জানান, তিনি আসলে অনেক দূরত্ব অতিক্রম করেছেন।


ভ্রমণ করতে করতে লি তং চু অনুভব করেন যে, তার শরীর ও মনের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আগে মনে জমে থাকা নানা কষ্ট এখন শেষ...। বর্তমানে তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি চীনে আবারো সাইক্লিং করে ভ্রমণ শুরু করতে চান। 


লি তং চু হ্য নান প্রদেশের চেং চৌতে বাস করেন। তিনি আগে টেক্সটাইল কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। ২০১৪ সালের আগে বাইরে যাওয়ার সুযোগ খুব কম ছিল। তিনি বলেন, ‘যখন বের হতাম তখন পূর্ব, দক্ষিণ, পশ্চিম, উত্তর কোন দিক- তা বলতে পারতাম না’।


২০০৫ সালে তার স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এ কারণে লি তুং চু ভীষণ বিমর্ষ হয়ে পড়েন। প্রতিদিন মাত্র দু-তিন ঘণ্টা ঘুমাতেন। চিকিত্সক বলেন, তিনি অবসাদগ্রস্ত বা ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি যখন মানুষ দেখেন, তখন তাদেরকে তার মনের কষ্ট বলার চেষ্টা করেন। 

মাদাম চেং হচ্ছেন লি তং চুর প্রতিবেশী। তিনি স্মরণ করিয়ে বলেন, তখনকালে মাদাম লির মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না। এ অবস্থা টানা কয়েক বছর অব্যাহত থাকে।

শরীরের অবস্থা পরিবর্তন করতে মাদাম লি সাইক্লিং করা শুরু করেন। তখন তার ছেলে ১১০০ ইউয়ান খরচ করে তার জন্য একটি বাইক কিনেন।


শুরুতে আত্মীয়-স্বজন তার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা করার কারণে, তার সাইক্লিং করে ভ্রমণের পরিকল্পনার বিরোধিতা করেন। কিন্তু তারা দেখেন- সাইক্লিং শুরু করার পর, মাদাম লিয়ের মানসিক অবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। সবাই তাঁর জন্য খুশি। ২০১৪ সালে তিনি তার প্রথম দীর্ঘ দূরত্বে সাইক্লিং ভ্রমণ শুরু করেছেন। 

বন্ধুরা, আমরা পরবর্তী অনুষ্ঠানেও মাদাম লি তং চুয়ের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করব। 


তৌহিদ ভাই, মাদাম লিয়ের গল্প প্রথমে শুনে আমি তার জন্য কষ্ট পেয়েছিলাম। তবে পরে তার জন্য অনেক খুশি হয়েছি। তিনি আমাকে অনেক উত্সাহিত করেছেন ও অনুপ্রাণিত করেছেন। আপনি একজন সাইক্লিং-ভক্ত। তার গল্প আপনার কেমন লাগলো।