"পান্ডার মা" হাউ রং: গত ৩০ বছরে ছেংতু ঘাঁটিতে পান্ডার সংখ্যা ১২ গুণ বেড়েছে
2023-03-17 18:45:54

পুরো শরীরটি স্বচ্ছ হালকা গোলাপী রঙের, সূক্ষ্ম লোমসমৃদ্ধ, এবং চোখ একটি লাইনের মতো সরু। মোট ওজন ১০০ গ্রামের কম। বড় পান্ডার নিটোল ও নিষ্পাপ ছবির সাথে একে মেলানো কঠিন।

৫ মার্চ সকালে, চতুর্দশ জাতীয় গণকংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে, "প্রতিনিধি চ্যানেল"-এ ছেংতু বড় পান্ডা প্রজনন রিসার্চ বেসের উপ-পরিচালক হাউ রং একটি বড় পান্ডার বাচ্চার মডেল নিয়ে আসেন এবং মানুষের জ্ঞানের জগতকে খানিকটা সমৃদ্ধ করেন। গত ৩০ বছরে বড় পান্ডা সুরক্ষা এবং গবেষণার প্রক্রিয়ায়, হাউ রং এবং তার সহকর্মীদের প্রচেষ্টায়, পান্ডা বেসে পান্ডাদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। ১৯৯৪ সালে ১৯টি থেকে আজ ২৩৭টি হয়েছে। অন্যভাবে বললে, সংখ্যা বেড়েছে ১২ গুণ।

২০২৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বড় পান্ডা ইয়ংমিং, তার ২৮ বছরের জাপানি জীবন শেষ করে, তার যমজ কন্যা ইংবাং ও থাওবাং-এর সাথে ছেংতু বড় পান্ডা প্রজনন গবেষণা ঘাঁটিতে ফিরে আসে। ইংবাং ও থাওবাং এখানে "তাদের পরিবার গঠন করবে এবং সন্তান নেবে", তাদের "পান্ডা জীবনের" একটি নতুন অধ্যায় শুরু করবে।

১৯৯৫ সালের শরত্কাল, বড় পান্ডা "জিয়াওজি" হাউ রং-এর জীবনে প্রবেশ করে, যা তাকে বড় পান্ডা সুরক্ষার গুরুত্ব গভীরভাবে বুঝতে সাহায্য করেছিল। "সেই সময়ে, জিয়াওজির জন্মের পর মানুষ তাকে খাইয়ে দিতো। তার ওজন ছিল মাত্র ৭০ থেকে ৮০ গ্রাম, তার চোখ খোলা ছিল না, সে দেখতে বা শুনতে পারত না এবং সে নিজে নিজে মলত্যাগও করতে পারত না; সব ক্ষেত্রেই তাঁর মানুষের সাহায্য লাগতো।" হাউ রং বললেন, এমন একটি ছোট্ট শিশুর ভঙ্গুর জীবন, তার হাতের তালুতে শুয়ে আশ্চর্যজনকভাবে কাঁদছে, যেন বেঁচে থাকার প্রবল ইচ্ছা তার!

"আমার আগে বড় পান্ডার শাবক লালনপালনের অভিজ্ঞতা ছিল, তাই আমার কাঁধের ভারী দায়িত্ব অনুভব করতে পারছি। আমি বড় পান্ডা নিয়ে গবেষণা করার প্রক্রিয়াতে, বন্যপ্রাণীদের জেনেটিক সম্পদ সুরক্ষা ও ব্যবস্থাপনা এবং রোগ-প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ যে তাদের বেঁচে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তা বুঝতে পেরেছি।” জাতীয় গণকংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসাবে তার মেয়াদকালে, হাউ রং “বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন” সংশোধনের জন্য তিনটি প্রস্তাব এবং “প্রাণী মহামারী প্রতিরোধ আইন” সংশোধনের একটি প্রস্তাব পেশ করেন। এই প্রস্তাবগুলোতে, হাউ রং বন্যপ্রাণীর জিনগত সম্পদের সুরক্ষা ও ব্যবস্থাপনা জোরদার করার, বন্যপ্রাণীর রোগের জন্য একটি যৌথ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থাপন করার, বিপথগামী প্রাণীদের ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করার এবং বন্যপ্রাণীর রোগের জন্য পৃথক মানদণ্ড স্থাপনের প্রস্তাব করেন। হাউ রং-এর জমা দেওয়া ৩১টি পরামর্শ এবং ১০টি প্রস্তাবনার মধ্যে ৮০% সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে আইন ও প্রবিধান প্রণয়ন ও সংশোধনে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।

২০২১ সালের অক্টোবরে, বড় পান্ডা জাতীয় পার্কসহ পাঁচটি জাতীয় পার্ক আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। একটি স্বল্প পরিচিত ধারণা থেকে, বাস্তবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত, "জাতীয় পার্ক" সময় নিয়েছে দশ বছর। বড় পান্ডা প্রজনন থেকে শুরু করে তাদের বন্যতা পুনরুদ্ধার এবং বনে ফিরে যাওয়া পর্যন্ত, হাও রং এবং তার দল এই চূড়ান্ত লক্ষ্যে কাজ চালিয়ে যাবে।

বড় পান্ডা জাতীয় পার্ক এলাকায়, "মানুষ সরে যায় এবং বড় পান্ডা প্রবেশ করে"। ৩৪টি ছোট জলবিদ্যুতকেন্দ্র একের পর এক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, শিলিং স্নো মাউন্টেনে ঝরনার দৃশ্য আবার দেখা দিয়েছে, এবং বিরল বন্যপ্রাণীরা ক্রমে ফিরে এসেছে। ক্যামেরায় প্রতি ঋতুতে বড় পান্ডার উপস্থিতি থাকে। হাউ রং বলেন, পরবর্তী ধাপে, তারা বড় পান্ডা আবাসের সুরক্ষাকাজ উন্নয়ন  এবং বন্য পান্ডাদের জন্য আরও "বাসযোগ্য" পরিবেশ তৈরি করবেন। "ভবিষ্যতে, জায়ান্ট পান্ডারা আমাদের জমিতে আরও স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করতে পারবে এবং সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে পারবে।" (ইয়াং/আলিম/ছাই)