‘ঘুরে বেড়াই’ পর্ব-৯
2023-03-14 15:58:39

 

এবারের পর্ব সাজানো হয়েছে  

১। বেইজিংয়ের রিথান পার্ক

২। ডাঃ  মেহেদী হাসানের সাক্ষাৎকার

৩ । নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আধার চীনের সুয়েচাং কাউন্টি

 

বিশ্বব্যাপী অপরূপ সৌন্দর্যের চাদর বিছিয়ে রেখেছে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি। কতো-শতো দেশ, কতো সংস্কৃতি, কতো ভাষা, কতো পেশা,.... কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতি কিংবা সময়ের টানাটানিতে দেখা হয় না, ‘ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া’  

‘একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশির বিন্দু...’সেই অদেখাকে দেখাতেই আমাদের আয়োজন "ঘুরে বেড়াই"।

দেশ-বিদেশের দর্শনীয় স্থান, সেখানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, এবং সেই স্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা অর্থনীতি নিয়ে আমাদের অনুষ্ঠান ‘ঘুরে বেড়াই’।

ঘুড়ে বেড়াই অনুষ্ঠানের নবম পর্ব আজ। আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি, আফরিন মিম।   

 

১। বেইজিংয়ের রিথান পার্ক

বেইজিংয়ের রিথান পার্ক। বেইজিংয়ের  থিয়েনথান, রিথান, ডিথান এবং ইয়ুন থান এই চারটি পার্কের অন্যতম রিথান হচ্ছে সূর্য মন্দির এবং তার সংলগ্ন পার্ক।

বেইজিংয়ের দূতাবাস এলাকা সান লি থুনের কাছে ছাও ইয়াং জেলায় অবস্থিত এই পার্ক । বিস্তৃত এলাকাজুড়ে এই পার্কে সূর্যমন্দির স্থাপিত হয়  ১৫৩০ সালে। তখন ছিল মিং রাজবংশের শাসনামল। এখানে তখন সূর্যদেবতার উদ্দেশ্যে পূজা ও অর্ঘ্য নিবেদন করা হতো।

এখনও এখানে উৎসর্গ চত্বর রয়েছে যা বেশ সুন্দর কারুকার্য করা। এখানে রয়েছে মন্দির ও নৈবেদ্য দেয়ার বেশ বড় একটি স্থান। সেই বড় বাঁধানো স্থানটিকে ঘিরে আছে ছোট ছোট গেট। এগুলো সব নক্ষত্রের প্রতীক। মাঝের বাঁধানো চত্বরটিতে আঁকা আছে  সূর্যদেবের ছবি ।

পার্কের প্রবেশ তোরণটিও সুন্দর কারুকার্যকরা। পার্কের ভিতরে রয়েছে একাধিক জলাশয়। বড় একটি জলাশয়ে বসন্ত, গ্রীষ্ম ও শরতে প্রচুর পদ্মফুল ফোটে। ছোট একটি জলাশয়ে রয়েছে সৌখিন মৎস্য শিকারীদের জন্য  মাছ ধরার ব্যবস্থা। লেকের মধ্যেও রয়েছে দৃষ্টি নন্দন পাথরের ভাস্কর্য ।

 

রিথান পার্কে আছে প্রচুর গাছপালা । চমৎকার বাহারী ফুল। এই পার্কে ঢুকতে কাটতে হয়না কোন টিকিট।

এই পার্কে অনেকেই বিশেষ ধরনের শরীরচর্চা বা থাইচি প্র্যাকটিস করেন।রিথান পার্কের কাছাকাছি দূতাবাস এলাকা। তাই প্রচুর সংখ্যক বিদেশি এখানে আসেন। এই পার্কের কাছে রয়েছে চীনে প্রবাসী রুশদের একটি এলাকা। সেখানে বেইজিংয়ে অবস্থানরত রাশিয়ানরা বসবাস করেন ।

চীনা খাবারের পাশাপাশি ঐতিহ্যবাহী রাশিয়ান স্বাদের খাবারও পাওয়া যায় এখানে । কাছাকাছি  আছে চীনা কারুশিল্প এবং রাশিয়ান কারুশিল্পের দোকানও। 

 

২। ডাঃ মেহেদী হাসানের সাক্ষাৎকার

বাংলাদেশের বাসিন্দা ডাক্তার মেহেদী হাসান। তিনি চীনের হেবেই প্রদেশের নর্থ চায়না ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলোজি থেকে পড়ালেখা শেষ করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার মাইজদীতে অবস্থিত জাপান বাংলাদেশ হসপিটালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে নিয়োজিত আছেন।

ডাঃ মেহেদী হাসানের

এবারের ঘুরে বেড়াই অনুষ্ঠানে কথা হয় এই ডাক্তার মেহেদী হাসানের সাথে। তিনি ঘুরেছেন চীনের বেইজিং, হেইলংচিয়াং,কুয়াংচৌ, শেনচেন, চিয়াংসি প্রদেশে।  

ডাঃ মেহেদী হাসান

 “আমার ঘোরাঘুরি শুরুটা হয়েছে বেইজিংয়ের গ্রেট ওয়াল দিয়ে আর শেষ হয়েছে লিনি দিয়ে।  এরপর আমি গিয়েছি হারবিনের বরফ উৎসবে ।সেখানকার বরফ উৎসব মুগ্ধ করেছে আমাকে। আধুনিক স্বাপত্য শৈলী দেখতে হলে বিদেশীদের সাংহাই ,বেইজিং, কুয়াংচৌ, থিয়ানচিন ঘুরে আসা উচিত”

 

 

৩। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আধার চীনের সুয়েচাং কাউন্টি

 

পূর্ব চীনের চেচিয়াং প্রদেশের লুশুয়ে সিটির সুয়েচাং কাউন্টি। ফুচিয়ান প্রদেশের সীমান্তে পড়েছে এ কাউন্টি, যার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো পাহাড় ও নদীর অপরূপ সৌন্দর্য। পর্যটনশিল্পের জন্য আশীর্বাদ বলা এক কাউন্টিকে।

 

 

সুয়েচাংয়ের ১৫০০ মিটার উচ্চতার রয়েছে ৩৯ টি পর্বতশৃঙ্গ । এর মোট এলাকার প্রায় ৮৯ শতাংশ পাহাড়, ৭ শতাংশ জল এবং ৪ শতাংশ কৃষিজমি। চেচিয়াং প্রদেশের সর্বোচ্চ বনভূমি এ কাউন্টিতেই। এখানে বনভূমির হার ৮২.৩ শতাংশ।

 

 

এখানকার বাসিন্দারা তাদের ঐতিহ্যের সুফল ভোগ করছেন এখন। এসব ঐতিহ্যের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন গ্রামগুলো, যেগুলো আধুনিকতার প্রভাব থেকে দূরে থাকতে সক্ষম হয়েছে। এমন একটি প্রাচীন গ্রাম দুশান, যেখানে প্রথাগত গ্রামীণ জীবনের ধারণা পাওয়া যায়। এখানে বসবাসকারীদের বেশিরভাগই বয়স্ক।

 

 

আর অল্পবয়সী যারা আছে তারা তাদেরই বংশধর। এ গ্রামে প্রাকৃতিক গ্যাস থাকলেও এখানকার বয়স্ক বাসিন্দারা চুলায় গাছের ডালপালা ও বাঁশ দিয়ে রান্না করতে বেশি পছন্দ করেন।

 

 

সুয়েচাংয়ে ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য আরেকটি উল্লেখযোগ্য গন্তব্য হলো নানচিয়ানিয়ান, যেটি ঐতিহাসিক স্থানের চেয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রত্ন হিসেবে বেশি সমাদৃত। এটি সুয়েচাং টেরেস, যা নানচিয়ানিয়ান টেরেস নামেও পরিচিত। টেরেস হলো সমতল থেকে একটু উঁচুতে সারিবদ্ধ বাড়ি। দীর্ঘ ইতিহাসসমৃদ্ধ সুয়েচাং টেরেস মূলত সুয়েচাংয়ের পশ্চিমে নানচিয়ানিয়ান পর্বতে অবস্থিত।

 

 

 

স্থানীয় বাসিন্দারা পাহাড়ের চারপাশে প্রাকৃতিক অবস্থা এবং পানিসম্পদ অক্ষুণ্ণ রেখে অসংখ্য টেরেস করেছে, যেগুলো দূর থেকে দেখলে আঙ্গুলের ছাপের মতো মনে হয়।

 

 

 

সুয়েচাং হচ্ছে চেচিয়াং প্রদেশের খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ একটি কাউন্টি। এখানে ৩০ ধরনেরও বেশি খনিজ সম্পদ পাওয়া গেছে। এছাড়া, এটি প্রদেশের সোনা, রুপা ও ফ্লোরাইটের প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র।

 

পরিকল্পনা ও প্রযোজনা ও অডিও সম্পাদনা- আফরিন মিম

সার্বিক তত্ত্বাবধান- ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী