বিজ্ঞানবিশ্ব ৯ম পর্ব
2023-03-13 16:38:09

৯ম পর্বে যা থাকছে:

* বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শক্তিকেন্দ্র হতে যাচ্ছে চীনের হুবেই

* বাংলাদেশের বাজারে এলো ভিভোর নতুন স্মার্টফোন ওয়াই২২

* চীনা বিজ্ঞানীদের পরিবেশবান্ধব স্বয়ংক্রিয় গ্যাস টার্বাইন আবিষ্কারে সাফল্য

 

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শক্তিকেন্দ্র হতে যাচ্ছে চীনের হুবেই

চীনের হুবেই প্রদেশকে দেশের প্রধান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শক্তিকেন্দ্র বা পাওয়ারহাউজ বানানোর প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন প্রাদেশিক ভাইস গভর্নর শাও সিনু। তিনি বলেন হুবেই এখন পৃথিবীকে চমকে দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত। সম্প্রতি চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন হুবেই এখন হাই-টেক স্টার্টআপগুলোর পাশে দাঁড়াতে বিনিয়োগকারীদের আহবান জানাচ্ছে। পাশাপাশি হুবেই প্রদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে উচ্চ-মানের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে নেওয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। কীভাবে হুবেই প্রদেশ চীনের মূল উদ্ভাবন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে তাও ব্যাখ্যা করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, “আমরা যখন কোনো বাসা বানাই তখন সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হয় একটি ভালো ভিত্তি স্থাপনে। আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ক্ষেত্রে সেই ভিত্তিটি হচ্ছে মৌলিক গবেষণা। প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং যেমনটি বলেছেন, একটি মজবুত ভিত্তির ওপর ভর করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির আরো অগ্রগতি হবে। আমরা হুবেইতে উচ্চ-মানের মৌলিক গবেষণা প্ল্যাটফর্ম স্থাপন করেছি। যেমন ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক, শক্তি, নির্ভুলতা পরিমাপ এবং জীব বিজ্ঞানের জন্য প্রধান জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অবকাঠামো। এছাড়াও, আমাদের রাষ্ট্রীয় মূল গবেষণাগার আছে ৩০টি, হুবেই ল্যাব আছে ৯টি এবং গণিত, পদার্থবিদ্যা, জীববিজ্ঞান, ভূ-বিজ্ঞান এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও সেরা গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। এই প্ল্যাটফর্মগুলো বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের যৌথ গবেষণা ও পরীক্ষা চালানোর জন্য আকৃষ্ট করেছে।“

শাও আরো বলেন, হুবেইতে অনেক বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় গবেষণাগার ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রাদেশিক সরকার এই সংস্থাগুলোকে একীভূত করার উদ্যোগ নেবে যেনো বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির অর্জনগুলো ব্যাপকভাবে নানা স্তরে প্রয়োগ করা যায়।

“আমরা সবাই জানি বিগত বছরগুলোতে হুবেই প্রদেশের শিল্পের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। এটি জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাহায্য ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব ছিলো না। আমরা এখন হুবেই-এর প্রযুক্তি ও প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও পরিবেশবান্ধব শক্তিসহ আরও অনেক ক্ষেত্রে উন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছি। পাশাপাশি কোনো বৈজ্ঞানিক অর্জনকে শিল্পে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে অর্থ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাই-টেক স্টার্টআপগুলোর জন্য চলতি বছরই আমরা ১ হাজার কোটি ইউয়ানের একটি অ্যাঞ্জেল ফান্ড গঠন করবো। হুবেইতে আমাদের এই কার্যক্রমে বিনিয়োগকারীদেরও আমাদের সাথে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে চাই আমি,“ বলেন শাও।

গত বছর চীনের কেন্দ্রীয় সরকার প্রাদেশিক রাজধানী উহানে ন্যাশনাল সাইন্স সেন্টার নির্মাণের অনুমতি দেয়। শাও মনে করেন, এটি হুবেই এর উদ্ভাবন ক্ষমতাকে আরও এগিয়ে নিতে ও প্রতিযোগিতামূলক অগ্রগতি বজায় রাখতে অনুপ্রাণিত করে।

তিনি বলেন যে এটিকে তিনি উন্নয়ন ও অগ্রগতির নতুন সুযোগ হিসেবে দেখছেন। বর্তমানে হুবেই এর উদ্ভাবনী ক্ষমতা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই তাই নয়, পড়াশোনা, বসবাস ও কাজের জন্যেও হুবেই এখন একটি আকর্ষণীয় জায়গা।

 

|| প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল মামুন

|| সম্পাদনা: সাজিদ রাজু

 

বাংলাদেশের বাজারে এলো ভিভোর নতুন স্মার্টফোন ওয়াই২২

 

সম্প্রতি চীনের বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থা ভিভো বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে এলো নতুন স্মার্টফোন ওয়াই টোয়েন্টি-টু। চলতি মাসের ২ তারিখ থেকে এই স্মার্টফোনটি বাংলাদেশের বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

ভিভোর ওয়াই সিরিজের স্মার্টফোনের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন ওয়াই টোয়েন্টি টু। নজর কাড়া ডিজাইন ও দীর্ঘসময় গেমিং পারফরম্যান্সের জন্য তরুণদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে স্মার্টফোনটি।

স্মার্টফোনটি ফাইভ পয়েন্ট ফাইভ মাল্টি টার্বো প্রযুক্তির কারণে একটানা প্রায় ৫ ঘণ্টা গেমিং পারফরম্যান্স দিতে পারে। এ ছাড়া ফোনটির ৫ হাজার এমএএইচ ব্যাটারিতে ১৮ ওয়াট ফাস্ট চার্জিংয়ের পাশাপাশি ২০ ঘণ্টা অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং করা যায়।

ভিভোর ওয়াই টোয়েন্টি টু স্মার্টফোনে রয়েছে সিক্স পয়েন্ট ফাইভ সিক্স ইঞ্চি এইচডি প্লাস ডিসপ্লে, হেলিও জি থ্রি প্রসেসর, সাইড-মাউন্টেড ফিঙ্গার সেন্সর, ৪ জিবি র‌্যাম, ১২০ জিবি স্টোরেজ যেটা ১ টেরাবাইট পর্যন্ত বাড়ানো যায়।

এ ছাড়া স্মার্টফোনটিতে একটি ৫ মেগা পিক্সেল রিয়ার ক্যামেরা, ২ মেগা পিক্সেল মাইক্রো ক্যামেরা এবং ৫ মেগা পিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা, পেছনে ফ্ল্যাশ লাইট এবং নাইটগ্রাফি, মাল্টি-স্টাইল পোর্ট্রেট ও ভিডিও ফেস বিউটি ফিচার রয়েছে।

দুটি রংয়ে ভিভো ওয়াই টোয়েন্টি টু পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশের বাজারে - মেটাভার্স গ্রিন এবং স্টারলিট ব্লু। স্মার্টফোনটি কিনতে ক্রেতাদের খরচ করতে হবে ১৯ হাজার ৯৯৯ টাকা।

 

|| প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল মামুন

|| সম্পাদনা: সাজিদ রাজু

 

চীনা বিজ্ঞানীদের পরিবেশবান্ধব স্বয়ংক্রিয় গ্যাস টার্বাইন আবিষ্কারে সাফল্য

 

পরিবেশবান্ধব ও কম কার্বন নিঃসরণ হয় এমন প্রযুক্তির পেছনে চীনা বিজ্ঞানীদের গবেষণা চলছে নিরন্তর। এবার বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহার উপযোগী এমনই একটি স্বয়ংক্রিয় গ্যাস টার্বাইন আবিষ্কার করে চমকে দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, প্রচলিত তাপভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী জেনারেটরের তুলনায় এটি বছরে অন্তত ৫ লাখ মেট্রিক টন পর্যন্ত কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারে।

কমপক্ষে ২০ হাজার যন্ত্রাংশ জোড়া লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই গ্যাস টার্বাইন। এই টার্বাইনের নকশা তৈরি ও উৎপাদনের কাজে জড়িত ছিলেন কয়েক শ’ গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা।

 

শুধু তাই নয়, উৎপাদনে যাওয়ার আগে এক নাগাড়ে ১৩ বছর ধরে গবেষণা করতে হয়েছে সব চাহিদা পূরণের জন্য। আর দীর্ঘ দিনের লেগে থাকা ও শ্রম ঘামের পরই এই প্রথম শুরু হয়েছে বাণিজ্যিক উৎপাদন। দক্ষিণ চীনের কুয়াংতোং প্রদেশের ছিনকিয়ান শহরে শুরু হয় এই এই গ্যাস টার্বাইন দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন।

তোংফ্যাং ইলেক্ট্রিকের প্রধান ডিজাইনার আই সং বলেন বিভিন্ন মানের অন্তত ৩শ’ ইন্সটিটিউটের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন তারা।

তিনি বলেন, “বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, প্রধান ডিজাইনার ও ব্যবহারকারীদের সঙ্গে পরামর্শ করেছি আমরা। শিল্প চেইনের অন্তর্ভুক্ত অন্তত ৩শ’ বিভিন্ন মানের ইন্সটিটিউটের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছি। সফল গবেষণার পর সফলভাবে আমরা ভারি কাজের উপযোগী একটি গ্যাস টার্বাইন ডিজাইন ও তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি।“

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এফ-ক্লাসের অন্তর্ভুক্ত এই টার্বাইনটির সক্ষমতা ৫০ মেগাওয়াট। চীনের ইতিহাসে এটিই এমন একটি টার্বাইন যার সক্ষমতা এতোটা বেশি। সবচেয়ে বেশি প্রশংসা কুড়িয়েছে যে বৈশিষ্ট্যটি তা হচ্ছে, প্রচলিত তাপভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী জেনারেটরের তুলনায় এটি বছরে অন্তত ৫ লাখ মেট্রিক টন পর্যন্ত কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারে। তাই পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি হিসেবেও পেয়েছে খ্যাতি।

এদিকে, প্রতি ঘণ্টায় এর মাধ্যমে ৭০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে এই জি-ফিফটি গ্যাস টার্বাইনের মাধ্যমে। ফলে দিনে অন্তত ৭ হাজার ঘরবাড়িতে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।  

যে কোন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান সরঞ্জামই টার্বাইন। আর বিশ্লেষকরা এই গ্যাস টার্বাইনকে বলছেন, উৎপাদন শিল্পের মুকুটে খচিত মুক্তা হিসেবে। তারা বলছেন, চীনের নিজস্ব প্রযুক্তি ও জাতীয় সক্ষমতার একটি প্রমাণ এই গ্যাস টার্বাইন।

 

|| প্রতিবেদন: সাজিদ রাজু

|| সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল মামুন

 

অনুষ্ঠান কেমন লাগছে আপনাদের তা আমাদের জানাতে পারেন facebook.com/CMGbangla পেজে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে ভিজিট করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল CMG Bangla।

 

পরিকল্পনা, প্রযোজনা ও অডিও সম্পাদনা- আব্দুল্লাহ আল মামুন

 

স্ক্রিপ্ট সম্পাদনা: সাজিদ রাজু, শিহাবুর রহমান

 

সার্বিক তত্ত্বাবধান- ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী