আফগানদের সহায়তা করছে চীন-নির্মিত জলসেচ প্রকল্প
2023-03-13 11:22:40

বসন্তকালের প্রথম দিকে পূর্ব আফগানিস্তানের পারওয়ান প্রদেশের দূরের পাহাড়ে এখানে-সেখানে জমা তুষার দেখা যায়। প্রদেশটির রাজধানী চারিকারের উপকণ্ঠের কৃষি জমিতে কিছুটা সবুজ দেখা যায়। প্রায় অর্ধেক শতাব্দী আগে চীনের সহায়তায় স্থানীয় জলসেচ প্রকল্প থেকে লাভবান হয়ে এখন শুষ্ক মৌসুম হলেও গুড়গুড় জল সবেমাত্র মাটি ভাঙ্গা লাল মটরশুঁটি স্প্রাউট জলসেচন করছে।

 

জানা গেছে, দেশটির দু’টো প্রধান নদী পাঞ্জশির ও ঘোরবন্দ পারওয়ান প্রদেশের মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে। কিন্তু জলসেচ অবকাঠামোর অভাবে প্রদেশটির কৃষি জমিতে পানির অভাব ছিল।

আটান্ন বছর বয়সী মোহাম্মদ ইউসুফ আজমি বলেন, চীনের সহায়তায় জলসেচ প্রকল্প চালু হবার আগে এখানকার মানুষেরা জমি চাষে গুরুতর পানি সম্পদের অভাবের সম্মুখীন ছিল। বছরে শুধু একবার খাদ্যের ফলন হতো।

 

বিংশ শতাব্দীর ৬০ ও ৭০-এর দশকে চীন সরকারের সহায়তায় পারওয়ান জলসেচ প্রকল্প নির্মিত হয়। প্রকল্পটি স্থানীয় লক্ষাধিক হেক্টর জমি জলসেচন করার পাশাপাশি মানুষ ও পশুর জন্য পানীয় জল এবং ঘরোয়া জল সরবরাহ করে। প্রকল্পটি দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং স্পষ্ট অর্থনৈতিক কার্যকারিতা পায়। সুতরাং, আফগানিস্তানে মানুষ একে “জীবনের জল” হিসেবে অভিহিত করে থাকে।

 

“চীনের সাহায্যে নির্মিত চ্যানেলটি দিয়ে বছরে আমরা তিনবার ফসল চাষ করি; এমনকি শীতকালে কিছু সবজি চাষ করতে পারি,”  বলেন আজমি।

যখন চীনের নির্মাতারা পারওয়ান প্রদেশে চ্যানেলটি নির্মাণ করেছেন, তখন আজমি একজন শিশু ছিলেন। “আমরা সব সময় চীনা মানুষের উদারতা অনুভব করতে পারি। যখন তারা গাড়িতে করে যায়, তখন তারা গাড়ি থেকে নেমে আমাদের ছোট উপহার দিয়েছিলেন,” আজমি স্মরণ করেন।

কয়েক দশক আগে চীনা প্রকল্প দল আজমির ছোটবেলার বন্ধু কলন্দরের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। তাঁর বাবাও প্রকল্পের নির্মাণ কাজে অংশ নিয়েছেন। “তারপর কয়েক বছর বাবা সব সময় আমাদেরকে তিনি এবং চীনা প্রকল্পদলের সঙ্গে কাজ করার সময় উল্লেখ করে চীনা ইঞ্জিনিয়ারদের চমৎকার প্রযুক্তির প্রশংসা করেন,” কলন্দর বলেন।

 

“আমাদের জন্য চ্যানেলটি নির্মাণ করার জন্য চীনকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।”  কলন্দর বলেন, “আমরা শুধু বিভিন্ন ঋতুতে গম, ভুট্টা ও লাল বিন ফলাতে পারি-তা নয়, বরং কয়েকটি গবাদি পশুও বাড়াতে পারি।”

 

পারওয়ান ঘোরবন্দ নদী প্রশাসনিক বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তি মুজিবুর রহমান হাবিবি এক সাক্ষাত্কারে বলেন, চীনের সহায়তা জলসেচ প্রকল্প পারওয়ানের জন্য কয়েক দশক “পরিষেবা” প্রদান করেছে, যা থেকে বোঝা যায় যে প্রকল্পটির গুণগত মানের নির্ভরশীলতা রয়েছে।

 

“বর্তমানে প্রকল্প বরাবর মোট ৩২ হাজার পরিবার লাভবান হচ্ছে। এটা প্রতিফলিত হয়েছে যে প্রকল্পটি পারওয়ানের অধিবাসীদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা চীনকে ধন্যবাদ জানাই,” হাবিবি বলেন।

 

(প্রেমা/এনাম)