চীনের উন্নয়নের যৌক্তিকতা, স্থিতিস্থাপকতা ও নিশ্চয়তা বিশ্বকে আস্থা যুগিয়েছে
2023-03-13 14:15:33

মার্চ ১৩: চলতি বছর চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য প্রায় ৫ শতাংশ। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে উচ্চমানের সরবরাহের মাধ্যমে কার্যকর চাহিদা সৃষ্টি করতে হবে; স্থিতিশীলভাবে প্রাতিষ্ঠানিক অর্জন বাড়াতে হবে; উচ্চমানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত  স্ব-নির্ভরতা নিশ্চিত করতে হবে। সম্প্রতি আয়োজিত চীনের এনপিসি ও সিপিপিসিসি’র অধিবেশনে এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এতে চীনের উন্নয়নের যৌক্তিকতা, স্থিতিস্থাপকতা ও নিশ্চয়তা প্রতিফলিত হয়। চীনের পারস্পরিক কল্যাণ ও জয়-জয় সহযোগিতার প্রতি বিশ্বের আস্থাও আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিদেশী পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা, বাস্তবসম্মত প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা, ও উন্নয়নের সম্ভাবনা আশাব্যঞ্জক।

চলতি বছরের এনপিসি ও সিপিপিসিসি-র অধিবেশন শুরুর আগে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, ব্যাংক অব আমেরিকা ও মরগ্যান স্ট্যানলিসহ বিভিন্ন সংস্থা পৃথক পৃথকভাবে চলতি বছর চীনা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়েছে। আর চলতি বছরের চীনা সরকারি কর্ম-প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য প্রায় ৫ শতাংশ। বিদেশী বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ লক্ষ্য যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তবসম্মত।  

এ সম্পর্কে ব্লুমবার্গের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিনিয়োগকারীরা চীনের অর্থনীতির চাঙ্গা হবার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন। চীন মুদ্রাস্ফীতি-বাস্টিং উদ্দীপনা ছাড়াই, উচ্চমানের প্রবৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিতে পারে।  

দা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের সরকার কাঠামোমূলক সংস্কারের কথা জোর দিয়ে বলেছে, দ্রুত প্রবৃদ্ধির ওপর জোর দেয়নি। এটা যুক্তিসঙ্গত।

বিগত তিন বছরে কঠিন ও জটিল পরিস্থিতিতে, চীন নিজের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী অর্থনীতিকে সঠিক পথে রাখতে, বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে চীন যে দৃঢ়তা দেখিয়েছে, তা বহির্বিশ্বেও গভীর ছাপ ফেলেছে।

চীনা অর্থনীতি সফলভাবে বাজারকে স্থিতিশীল করেছে, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে, বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করেছে, বিদেশী বাণিজ্য সম্প্রসারিত করেছে, এবং বিশ্ব অর্থনীতির প্রধান প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করে গেছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চীনা অর্থনীতি স্থিতিশীলভাবে বৃদ্ধি পায়। গেল তিন বছরে চীনা অর্থনীতি ৪.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি স্পষ্টভাবে বিশ্বের গড় মানের চেয়ে বেশি। এবারের দুই অধিবেশনে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়, চীন অব্যাহতভাবে নীতির ধারাবাহিকতা ও প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখবে, বিভিন্ন নীতির সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করে যাবে, উচ্চমানের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন নীতির মধ্যে সমন্বয় সাধন করবে, এবং উচ্চমানের উন্নয়ন জোরদার ও দেশী-বিদেশী সহযোগিতা ও অভিন্ন কল্যাণের দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করতে সচেষ্ট থাকবে।  

বিগত তিন বছরে চীনে আসলে বিদেশী অর্থ ব্যবহারের আকার এবং পণ্য আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। দেশের পরিষেবা শিল্প উন্মুক্তকরণের মান অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। চীনের ব্যবসায় পরিবেশ অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে।

চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, একটি উচ্চ-স্তরের সমাজতান্ত্রিক বাজার অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও উচ্চমানের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণের দাবি অনুযায়ী, গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রের সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। আধুনিক অবকাঠামো ব্যবস্থার নির্মাণ ও উচ্চস্তরের বাজার-ব্যবস্থার নির্মাণ ত্বরান্বিত করতে হবে। স্থিতিশীলভাবে প্রাতিষ্ঠানিক উন্মুক্ততা বাড়াতে হবে।

ক্রমবর্ধমান সংরক্ষণবাদের পটভূমিতে, চীন বরাবরই বহুপক্ষবাদ সমর্থন করে আসছে ও অর্থনীতির বিশ্বায়নের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। আরসিইপি বাস্তবায়ন, সার্বিকভাবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কারের আলোচনা ত্বরান্বিতকরণ, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের  উদারীকরণ ও সহজীকরণ, উচ্চমানের ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ প্রস্তাব বাস্তবায়ন, এবং অব্যাহতভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রের যোগাযোগ ও সহযোগিতা জোরদার করার চেষ্টা করে যাচ্ছে চীন। (ছাই/আলিম)