আফ্রিকার জিম্বাবুয়েতে চীনা প্রবাসীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি অনাথ আশ্রম রয়েছে। দাতব্য সংস্থা ‘যত্নশীল মা’ এটি প্রতিষ্ঠা করে। সংস্থাটি অনাথ ছাড়াও সেদেশের দুর্বল লোকদেরকে সহায়তা করতে আসছে। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে ‘যত্মশীল মা’ সংস্থার স্থানীয় অনাথ ও দুর্বল লোকদের সহায়তা করার গল্প তুলে ধরবো।
জিম্বাবুয়ে’র হারারে’র উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত উচ্চ জনসংখ্যার ঘনত্ব ও দরিদ্র আবাসিক এলাকা হার্টক্লিফে রয়েছে ‘হাওসানের প্রেম আফ্রিকার শিশু বাড়ি’ নামের একটি অনাথ আশ্রম। চীনা প্রবাসীদের দাতব্য সংস্থা ‘যত্নশীল মা’ ২০১৬ সালে অনাথ আশ্রমটি প্রতিষ্ঠা করে। এটি ছাড়াও ‘যত্নশীল মা’ আবাসিক এলাকার জন্য একটি কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণে অনুদান দেয়, যাতে স্থানীয় শিশুরা কাছাকাছি স্কুলে যেতে পারে। লি মান জুয়ান হলেন ‘যত্নশীল মা’-এর একজন প্রধান দায়িত্বশীল কর্মী। তিনি বলেন, চীনা প্রবাসীদের সহায়তায় স্থানীয় শিশুদের জীবনমান অনেক উন্নত হয়েছে।
যত্নশীল মা নিয়মিত স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য দান করতে এবং স্থায়ী শিশুদের টিউশন প্রদান করে। এ ছাড়া, সংস্থাটি চীনা চিকিত্সাদল পাঠিয়ে শিশুদের বিনামূল্যে চিকিত্সা দেয়। তাঁরা অনাথ আশ্রমের শিশুদেরকে চীনা ভাষা শেখায়। ভবিষ্যতে এই শিশুরা চীন-জিম্বাবুয়ে মৈত্রীর সেতুতে পরিণত হবে বলে আশা করা যায়।
‘যত্নশীল মা’ সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা শিশুদেরকে পিতা-মাতার মতো যত্ন করেন। যখন উত্সব বা জন্মদিন আসে, তখন স্বেচ্ছাসেবকরা শিশুদেরকে উপহার দেন। অনাথ আশ্রমের শিশুরা আনন্দে বড় হচ্ছে।
লি মান জুয়ান বলেন, যদিও তাঁর কাজ অনেক বেশি, ব্যস্ততা অনেক বেশি, তিনি শিশুদেরকে অনেক সময় দেন।
২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, ‘যত্নশীল মা’ অনাথ ছাড়াও দুর্বল লোকদেরকে সহায়তা করে আসছে। লি মান জুন জানান, যখন জিম্বাবুয়েতে দুর্যোগ হয়, তখন ‘যত্নশীল মা’ ত্রাণ-সামগ্রী দান করে এবং ত্রাণকাজে অংশ নেয়। এ ছাড়াও, সংস্থাটি সেদেশে তরুণ-তরুণীদের সহায়তার পরিকল্পনা করছে। স্থানীয় দারিদ্র্যবিমোচন পরিকল্পনায়ও এই সংস্থা অংশ নেয়। স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে নতুন কৃষিপ্রযুক্তি শেখায় এই সংস্থা।
প্রায় এক দশক ধরে কাজ করছে এই সংস্থা। লি মান জুন বলেন, তাঁরা অনেক লোককে সাহায্য করেছেন, যাদের সত্যিই সাহায্যের প্রয়োজন। এটি চীনা মানুষ ও চীনা মহিলাদের ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ। একটি বড় দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁরা অনুভব করেন যে, তাঁদের সামান্য কাজ ও তাঁদের অজানা অবদানের মাধ্যমে তাঁরা সত্যিই জিম্বাবুয়ে’র তৃণমূল পর্যায়ের জনগণের ধারণায় পরিবর্তন এনেছেন। এর সুদূরপ্রসারী তাত্পর্য আছে।
লি মান জুয়ান জিম্বাবুয়েতে বসবাস করছেন ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। তাঁর মনে হয়, জিম্বাবুয়ে হলো তাঁর দ্বিতীয় জন্মস্থান। তিনি ভবিষ্যতে একজন ভালো ‘বেসামরিক কূটনীতিক’ হিসাবে কাজ করতে চান। তিনি চীন ও জিম্বাবুয়ে’র জনগণের মধ্যে সমঝোতা ও মৈত্রী জোরদারের ক্ষেত্রে অবদান রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে চান। (ছাই্/আলিম)