মার্চ ১২: গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় চীন, সৌদি আরব ও ইরান বেইজিং থেকে একটি তৃপক্ষীয় যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সৌদি ও ইরান কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারসহ বেশ কিছু বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এ চুক্তির সংবাদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমের প্রথম পাতা দখল করেছে। বেইজিংয়ে সৌদি আরব ও ইরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চুক্তি সই একটি নতুন মাইলফলক। গতকাল (শনিবার) চায়না মিডিয়া গ্রুপের এক সম্পাদকীয়তে এ মন্তব্য করা হয়েছে।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে অনেক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও ইতিবাচক মূল্যায়ন করেছে। এমনকি চীনকে কঠোরভাবে দেখা পশ্চিমা গণমাধ্যমও এবার চীনের মধ্যস্থতার সফলতার স্বীকৃতি দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের দেশগুলো প্রশংসা করেছে। ইরাক, ওমান ও লেবাননসহ নানা দেশ সৌদি ও ইরানের বেইজিং বৈঠকের সাফল্যকে স্বাগত জানিয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বৈঠকে চীনের ভূমিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তা উপসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক হবে বলে মন্তব্য করেছেন।
সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, ইতিহাসের দিকে তাকালে বুঝা যাবে যে এ সাফল্য অর্জন সহজ কাজ ছিল না। সৌদি আরব ও ইরান সুন্নি ও শিয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী দুটো দেশ। সিরিয়া সংকট, লেবানন পরিস্থিতি ও ইয়েমেন যুদ্ধে একে অপরের বিপরীত অবস্থান রয়েছে। গত ৭ বছরে বেশ কিছু দেশের মধ্যস্থতার কোনো বাস্তব অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। এমন প্রেক্ষাপটে সৌদি ও ইরান কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা বিদেশি গণমাধ্যমের কল্পনারও বাইরে ছিল। তবে, মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির পরিবর্তন ও চীনের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা পর্যালোচনা করলে বোঝা যাবে যে বেইজিংয়ে সৌদি আরব ও ইরানের শান্তিপূর্ণ সমঝোতা কল্পনাতীত ছিল না।
গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে এক সম্প্রদায়কে কাছে টেনে অপর সম্প্রদায়কে দমন করে আসছে এবং অব্যাহতভাবে সংঘর্ষ ও দ্বন্দ্ব তৈরি করেছে। যার কারণে অঞ্চলটিতে অশান্তি বিরাজ করছে। সৌদি আরব ও ইরান আঞ্চলিক বড় দেশ হিসেবে উচ্চ মূল্য দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো স্পষ্টই এখন আর যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল নয়। কেবল শান্তি বৈঠকের মাধ্যমে আঞ্চলিক সমস্যা সমাধান করা যায়। এটিই মূলত দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে।
(রুবি/এনাম/শিশির)