বন্ধুরা, ২০২০ সালে গোটা চীন সম্পূর্ণভাবে দারিদ্র্যমুক্ত হয়। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র নেতৃত্বে বিভিন্ন জাতির জনগণের যৌথ প্রচেষ্টায়, চীনের অধিকাংশ জায়গায় অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে। বর্তমানে চীন সার্বিকভাবে গ্রামীণ পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এখন আমি আপনাদেরকে হ্যপেই প্রদেশের পাওতিং শহরের ফুফিং জেলার মাশরুম চাষের মাধ্যমে দারিদ্র্য থেকে মুক্তির গল্প শোনাবো।
২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি হ্যপেই প্রদেশের পাওতিং শহরের ফুফিং জেলা সম্পূর্ণভাবে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়। জেলাটি মাশরুম চাষ শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে এ সাফল্য অর্জন করে।
২৩ বছর বয়সী স্থানীয় তরুণ চাং ছিয়াং গ্রিনহাউসে মাশরুম কাজ করেন। তিনি মাশরুম চাষ করছেন দুই বছর ধরে। তাঁর চামড়া কালো। তিনি হলেন সবচেয়ে তরুণ মাশরুমচাষী। তিনি বলেন, এখানকার সবচেয়ে তরুণ মাশরুমচাষী তিনি। এটি তাঁর জন্য একাধারে সুযোগ ও সমস্যা।
২০২০ সালে চাং ছিয়াংয়ের পরিবার পাহাড়ি এলাকা থেকে নতুন বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়। নতুন বাসার আয়তন এক শ বর্গমিটার। তাঁদের বসবাসের অবস্থার অনেক উন্নতি ঘটেছে। তাঁর বাসা মাশরুম ক্ষেত থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
২০১৬ সাল থেকে ফুফিং জেলায় চাং ছিয়াংয়ের পরিবারের মতো নতুন বাসায় স্থানান্তরিত পরিবার ১৭ হাজারটি। এসব পরিবারের সদস্যসংখ্যা ৫৩ হাজার।
চাং ছিয়াং আগে বেইজিংয়ে কাজ করতেন। কিন্তু মাশরুম চাষ শিল্প উন্নয়নের পর তিনি গ্রামে ফিরে আসেন। তিনি ব্যাংক থেকে ১ লাখ ইউয়ান আরএমবি ঋণ নিয়ে দু'টি মাশরুম গ্রিনহাউস নির্মাণ করেন। স্থানীয় পৌর সরকারের সমর্থনের কারণে তার তিন বছর মেয়াদি ঋণের সুদ ১০ হাজার ইউয়ানেরও কম। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, তিনি ব্যাংক থেকে ১ লাখ ইউয়ান ঋণ নিয়েছেন। ২০২০ সালে তিনি দু'টি গ্রিনহাউস থেকে আয় করেন ৯০ হাজার ইউয়ান। তাঁর আস্থার কমতি নেই। তিনি আরও দু'টি গ্রিনহাউস নির্মাণ করবেন।
চাং ছিয়াং একজন পরিশ্রমী ছেলে। তাঁর বাবা-মা'র স্বাস্থ্য ভাল না। তিনি একই বয়সের তরুণ-তরুণীর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেননি। কিন্তু তাঁর মনে পরিশ্রম করে সুখী জীবন গড়ার স্বপ্ন। তাঁর ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় শুধুমাত্র মাশরুম চাষ আছে, তা নয়, বরং আরো বেশি কাজের স্বপ্ন তিনি দেখেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, মাশরুম চাষ ছাড়াও তিনি একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে চান। তিনি আরো বেশি ফসল ফলাতে চান।
ফুফিং জেলায় মাশরুম শিল্প অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। এ জেলাটিতে মাশরুম ক্ষেত ৯৮টি এবং গ্রিনহাউস ৪ হাজারের মতো। ২০১৯ সালে ৭ হাজার দরিদ্র পরিবার মাশরুম চাষ শিল্পে অংশ নেয়। অনুমান অনুযায়ী, ফুফিং জেলার মাশরুম শিল্পের মোট উত্পাদনের আর্থিক মূল্য হবে ২৫০ কোটি ইউয়ানের বেশি। এতে পরিবারপ্রতি গড় আয় ২০ হাজার ইউয়ান ছাড়িয়ে যাবে।
ফুফিং জেলার লংওয়াংমিয়াও গ্রাম-কমিটির সম্পাদক ইউয়ান লি হং বলেন, মাশরুম চাষের কাজে কোনো ছুটি নেই। হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দার জন্য এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের আয়ও অনেক বেড়েছে।
মাশরুম ছাড়াও জেলাটিতে কবুতর লালনপালন, চীনা ঔষধ চাষ, কুলের প্রক্রিয়াকরণ ও পারিবারিক হোটেল শিল্পের উন্নয়ন ঘটছে। এর মাধ্যমে আরো বেশি বাসিন্দা ধনী হয়েছেন ও হচ্ছেন। (ছাই/আলিম)