মীণ পুনরুদ্ধারে ই জাতির সূচিকর্ম
2023-03-08 09:37:10

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। আজ আমরা একজন চীনা সংখ্যালঘু জাতির নারী এবং জাতীয় গণকংগ্রেসের (এনপিসি) প্রতিনিধির গল্প বলব।

 

ই জাতির সূচিকর্মের উত্তরাধিকারী ও চীনের ১৪তম জাতীয় গণকংগ্রেসের (এনপিসি)  প্রতিনিধি  ছিয়াও চিন শুয়াং মেই তার নিজ গ্রামের নারীদেরকে নিয়ে ঐতিহ্যিক শিল্পের মাধ্যমে দারিদ্র দূর করেছেন এবং গ্রামের পুনরুদ্ধারের নতুন যাত্রা এগিয়ে নিচ্ছেন।

 

ছিয়াও চিন শুয়াং মেই দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সিছুয়ান প্রদেশের মাবিয়ান কাউন্টি থেকে এসেছেন এবং তার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন হল ই জাতির নারীদের দারিদ্র্যমুক্তি এবং স্থানীয় গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনে অবদান রাখতে পারা।

 

২০১৫ সালে তিনি একজন বন্ধুর সঙ্গে মিলে মাবিয়ান জেলায় প্রথম সূচিকর্ম সমবায় প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে স্থানীয় মহিলাদেরকে নিয়ে সূচিকর্ম এবং হাতে কাপড় তৈরি করেন। এ পর্যন্ত, সমবায়টি ৮০০ জনকে নিয়োগ করেছে এবং তাদের প্রত্যেকেই কারুশিল্পের মাধ্যমে বছরে ৮০০০ ইউয়ান উপার্জন করতে পারে।

 

ছিয়াও চিন শুয়াং মেই  নিজ জাতির সূচিকর্মের প্রচারণা চালাতে লাইভ-স্ট্রিমিং মডিউল খুলেন এবং  নানা প্রচারমূলক ইভেন্টও  আয়োজন করেছেন। সূচিকর্ম সমবায়ে যারা প্রথমে যোগ দিয়েছেন, তাদের  অনেকেই নিজস্ব দোকান খুলেছেন।

 

ছিয়াও চিন শুয়াং মেই বলেন, সূচিকর্মকারীরা তাদের দোকানকে একে অপরের কাছাকাছি রাখেন। কারণ তারা আশেপাশের মহিলাদের এই ব্যবসায় আকৃষ্ট করতে চান।  স্থানীয়রা এখানে এসে বিনামূল্যে সূচিকর্মের প্রশিক্ষণ নিতে পারেন।

 

স্থানীয় নারী ছিয়াও চিন আলী ছয় বছর আগে সমবায়ে যোগ দিয়েছেন। তিনি ছিয়াও চিন শুয়াং মেইর কাছ থেকে বিনামূল্যে একটি টেক্সটাইল মেশিন  পেয়েছেন। এখন তার স্বামী দূরের একটি প্রদেশে কাজ করলেও তিনি নিজে পরিবার ও দুটি সন্তানকে সমর্থন করতে পারেন।

 

২০১৮ সালে ছিয়াও চিন শুয়াং মেই এনপিসির প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। সম্মেলন চলাকালে তিনি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষা ও গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনকে সমন্বয় করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তার মতে কারুশিল্পকে দ্বিতীয় জীবন প্রদান করা লাভজনক এবং প্রাণবন্ত কাজ। তিনি বলেছেন, “যেহেতু আমি ২০১৯ সালে সেই প্রস্তাবটি পেশ করেছি, সেহেতু সংশ্লিষ্ট বিভাগ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে তদন্ত করার জন্য মাবিয়ান জেলায় এসেছিল। আমরা কেন্দ্রীয় সরকার থেকে শক্তিশালী সমর্থন পেয়েছি। যেমন, লিয়াংশান এলাকার লোকেরা সরকারের কাছ থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছে সমবায়ের প্রশিক্ষণের জন্য। অন্যান্য বিভাগ--যেমন: মহিলা ফেডারেশন আমাদের বাইরে গিয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ দিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন দক্ষতা শেখার পরে স্বাধীনভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছে। তারা তাদের নিজস্ব বস হতে পারছে। অনেকে আবার ই সূচিকর্ম শেখানোকে কাজ হিসেবে বেছে নিয়েছে।”

 

চীন গত মাসের (ফেব্রুয়ারি) মাঝামাঝি সময়ে ২০২৩ সালের প্রথম কেন্দ্রীয় নথি প্রকাশ করেছে।  এতে এই বছর গ্রামীণ জীবনের ব্যাপক প্রচারণার জন্য নয়টি কাজের রূপরেখা প্রদান করা হয়েছে। নথিটি দারিদ্র্যবিমোচনের অর্জনকে একীভূত ও সম্প্রসারিত করতে বলেছে।

 

ছিয়াও চিন শুয়াং মেই বলেছেন যে তিনি এই এজেন্ডা সম্পর্কে তার চিন্তাভাবনা ভাগ করে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছেন। তৃণমূল থেকে শীর্ষ আইনসভায় কণ্ঠস্বর নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেছেন, “দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই সহজ ছিল না, এবং এখন আমরা আমাদের জনগণের জীবনকে আরও উন্নত করার জন্য গ্রামীণ অঞ্চলকে পুনরুজ্জীবিত করছি। দারিদ্র্যের প্রত্যাবর্তন রোধ করা এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হবে।” (শিশির/এনাম/রুবি)