চীনা-শৈলীর আধুনিকীকরণ একটি সফল মডেল দিয়েছে- যা বিভিন্ন দেশ শিখতে পারে
2023-03-06 15:00:43

চীনের চতুর্দশ জাতীয় গণ-কংগ্রেসের সম্মেলন বা এনপিসি’র প্রথম অধিবেশন গতকাল (রোববার) উদ্বোধন করা হয়েছে। চীনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ এতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন। চায়না মিডিয়া গ্রুপের সাংবাদিকদের সঙ্গে সাক্ষাত্কারে রাষ্ট্রদূতগণ বলেন যে, তারা চীনের দুই অধিবেশনে ঘোষিত নতুন নীতি এবং নতুন পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা করছেন, যা চীনকে একটি নতুন উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাবে এবং বিশ্বে গভীর প্রভাব ফেলবে। 

 

চীনে নিযুক্ত সাইপ্রাসের রাষ্ট্রদূত মাভরোমাত্তি বলেন, এ বছর তিনি প্রথমবার চীনের দুই অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন। এই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তিনি চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে পেরেছেন। তিনি বলেন,

‘বিভিন্ন অঞ্চল ও বিভিন্ন গ্রামের প্রতিনিধিরা আছেন। তারা প্রত্যেকে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারেন। কী করা উচিত, কীভাবে ব্যবস্থাগুলি উন্নত করা যায়- তা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। আমি যতদূর জানি, তারা দুই অধিবেশনে আসেন এবং সমাজ, রাজনীতি, যুব, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করছেন। তাদের আলোচনা দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি তুলে ধরবে।’

 

চীনে নিযুক্ত জর্ডানের রাষ্ট্রদূত হুসাম হোসেনি অনেকবার চীনের দুই অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। তার কাছে দুই অধিবেশন হলো- চীনকে জানা ও পর্যবেক্ষণের একটি জানালা। তিনি দুই অধিবেশনের আরও নতুন নীতি, নতুন ব্যবস্থার অপেক্ষায় রয়েছেন; যা চীনকে শুধু উন্নতই করবে না, বরং বিশ্বকে আরও ইতিবাচক শক্তি যোগাবে। তিনি বলেন,

‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন, কারণ তা হলো চীন সরকারের নতুন ৫ বছরের সূচনা। অতএব আমরা একটি নতুন নীতির অপেক্ষায় আছি, যা এই দেশকে, এই মহান চীনকে একটি নতুন যুগে নিয়ে যাবে। চীনকে প্রভাবিত করে- এমন যেকোনো কিছু সমগ্র বিশ্বকে প্রভাবিত করবে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে।”

 

গত মাসে চীনে নিযুক্ত ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর মিস্টার জিমি এবার এনপিসি’র চতুর্দশ জাতীয় গণ-কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধনী সম্মেলনের আমন্ত্রণ পান। তিনি সাংবাদিকদের বলেন যে, তিনি চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন, বিশেষ করে চীনের অর্থনৈতিক জীবনীশক্তি কীভাবে মুক্তি পাবে- তা দেখতে চান। কারণ, চীন মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা শিথিল করেছে।

তিনি বলেন, ‘চীন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক সত্তার মধ্যে একটি। তাই আমরা চীনের পরিকল্পনা নিয়ে বেশি আগ্রহী। চীন মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে উঠবে এবং চীন দ্রুত গতিতে পুনরুদ্ধার করবে ইত্যাদি।”

২০২২ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির বিংশ জাতীয় কংগ্রেস একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গঠন এবং চীনা শৈলীর আধুনিকীকরণের মাধ্যমে চীনা জাতির মহান পুনর্জাগরণ উন্নত করার জন্য একটি বিশাল পরিকল্পনা করে। চীনে নিযুক্ত সাইপ্রাসের রাষ্ট্রদূত মাভরোমাত্তি বলেন,

“আমি মনে করি চীনারা একটি টেকসই এবং প্রযুক্তিগত সমর্থনের আধুনিক সমাজ গঠনের চেষ্টা করছে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে চীন বিশ্বের উন্নয়নের সুযোগ ভাগাভাগি করে।”

 

চীনে নিযুক্ত জর্ডানের রাষ্ট্রদূত হুসাম হোসেনি মনে করেন, চীনা-শৈলীর আধুনিকীকরণ শুধুমাত্র চীনের নিজস্ব উন্নয়নের জন্যই উপকারী নয়, বরং অন্যান্য দেশও এ থেকে শিখতে পারে। তিনি বলেন,

‘প্রতিটি দেশেরই আধুনিকীকরণের নিজস্ব পথ আছে এবং সেই পথ নিজের দেশের জন্য উপযুক্ত। আমি বিশ্বাস করি, চীন একটি অত্যন্ত সফল মডেল দিয়েছে। তা শুধু নিজের জন্যই নয়, অন্যান্য দেশের জন্যও।’

 

ফিলিপিন্সের রাষ্ট্রদূত জিমি চীনের দুই অধিবেশন থেকে চীন-শৈলীর আধুনিকীকরণের উন্নয়ন অভিজ্ঞতা লাভ করা এবং চীনকে একটি আধুনিক শক্তিতে পরিণত করার জন্য ‘উন্নয়ন কোড’ অন্বেষণ করতে চান। তিনি বলেন,

‘চীনের অভিজ্ঞতার একটি সুবিধা হল- তারা প্রথমে পাইলট প্রকল্প করে। তা যদি সফল হয়, তারা একে সারা দেশে প্রচার করে। এখন পর্যন্ত, আমি মনে করি, এটি অত্যন্ত সফল মডেল।”

 

 

(জিনিয়া/তৌহিদ/আকাশ)