বিজ্ঞানবিশ্ব ৮ম পর্ব
2023-03-06 15:06:50

চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সাপ্তাহিক আয়োজন: বিজ্ঞানবিশ্ব

৮ম পর্বে যা থাকছে:

* ১০০ মেগাপিক্সেল পোর্ট্রেট ক্যামেরার ফোন নিয়ে এলো অপ্পো

*শেনচৌ ফোরটিনের ৩ মহাকাশচারীকে পদক দিলো চীন

* চীনের প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হচ্ছে চলতি মাসে

 

১০০ মেগাপিক্সেল পোর্ট্রেট ক্যামেরার ফোন নিয়ে এলো অপ্পো

 

বাংলাদেশের বাজারে একের পর এক দুর্দান্ত সব ফোন রিলিজ দিয়ে যাচ্ছে চীনা ব্র্যান্ড অপ্পো। এরই ধারাবাহিকতায় ব্র্যান্ডটি সর্বশেষ উন্মোচন করেছে অপো রেনো এইট টি স্মার্টফোন।

 

ফোনটিতে প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছে ১০০ মেগাপিক্সেল পোর্ট্রেট ক্যামেরা। এই ক্যামেরা দিয়ে ব্যবহারকারীরা বাংলাদেশের সৌন্দর্য নিখুঁতভাবে কামেরাবন্দী করতে পারবেন। ডিভাইসটিতে আরও আছে অত্যাধুনিক ফাইবারগ্লাস-লেদার স্টিচ ডিজাইন, ৪৮ মাসের জন্য ফ্লুয়েন্সি প্রোটেকশন, সার্টিফাইড এসজিএস আই কেয়ার ডিসপ্লে এবং ৫ হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারিসহ বেশ কিছু আকর্ষণীয় ফিচার। অপ্পো রেনো এইট টি ফোনটির দাম ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ৯৯০ টাকা।

ইমেজিং, ডিজাইন ও পারফরমেন্সের নতুন অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে অপ্পো রেনো এইট টি ফোনে বিভিন্ন আপগ্রেডেশন করা হয়েছে। ১০০ মেগাপিক্সেল পোর্ট্রেট ক্যামেরা ও ফোরটি এক্স মাইক্রোলেনসসহ অপ্পো রেনো এইট টি, ব্যবহারকারীদের ফটোগ্রাফি অভিজ্ঞতায় যোগ করবে এক নতুন মাত্রা; সাহায্য করবে ভালো মানের প্রোফেশনাল ছবি তুলতে। প্রাণবন্ত সেলফি তোলার জন্য এই ফোনে আছে ২ মেগাপিক্সেল ডেপথ ক্যামেরা এবং ৩২ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। অপ্পো ব্যবহারকারীদের ফটোগ্রাফি অভিজ্ঞতাকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যেতে এই ফোনে আরও আছে বোকেহ ফ্লেয়ার পোর্ট্রেট, সেলফি এইচডিআর ও এআই পোর্ট্রেট রিটাচিংয়ের মতো দুর্দান্ত সব ইমেজিং ফিচার।

 

অপ্পো রেনো এইট টি স্মার্টফোনটি পাওয়া যাচ্ছে দুটি কালারে- সানসেট অরেঞ্জ ও স্টারি ব্ল্যাক। সানসেট অরেঞ্জ রঙের ডিজাইনে রয়েছে ফাইবারগ্লাস-লেদার স্টিচ ডিজাইন। ফোনের চারপাশে প্লাস্টিক এজিং অপসারনের জন্য রেনো এইট টি তৈরি করার সময় অবলম্বন করা হয়েছে নতুন এক কৌশল। যার ফলে ব্যবহারকারীরা পাবেন প্রিমিয়াম অভিজ্ঞতা এবং লেদারের মতো ব্যাটারি কভারের তুলনায় অনেক হালকা ও পাতলা কভার ব্যবহারের অনুভূতি। অন্যদিকে, স্টারি ব্ল্যাক রঙের ডিজাইনে আছে অপ্পো গ্লো টেকনিক, যার সাহায্যে ফোনটি ব্যবহারের সময় সিল্কের মতো মসৃণ অনুভূতি পাওয়া যাবে।

 

এই ফোনে আরও আছে কাস্টমাইজেবল অরবিট লাইট ডিজাইন যা পাঁচটি ভিন্ন নোটিফিকেশন সেটিংস সমর্থন করে। ব্যবহারকারীরা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন কালার অপশন নির্বাচন করতে পারবেন। এই ফোনের আল্ট্রা-স্লিম বডি ডিজাইন প্রত্যেকের ফ্যাশন স্টেটমেন্টে নতুনত্ব নিয়ে আসবে বলে দাবি করছে অপ্পো।

অপ্পো বাংলাদেশ অথোরাইজড এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড্যামন ইয়াং বলেন এই স্মার্টফোনটি মূলত শৈল্পিক চিন্তা-চেতনা সম্পন্ন তরুণদের কথা মাথায় রেখে ডিজাইন করা। তিনি বলেন, “অপো’র রেনো সিরিজ ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী ৭০ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং তাদের আস্থা অর্জন করেছে। রেনো এইট টি ডিভাইসটি মূলত জীবনে নতুন কিছু অর্জনের চেষ্টা করে যাচ্ছে এমন শৈল্পিক চিন্তা-চেতনা সম্পন্ন তরুণদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। হালকা ও নিখুঁত ডিজাইন, অত্যাধুনিক পোর্ট্রেট ক্যামেরা প্রযুক্তি এবং দীর্ঘস্থায়ী পারফরমেন্সের সমন্বয়ের প্রতিফলন হয়েছে এই সিরিজে। এই ধারাবাহিকতায় অপ্পো রেনো এইট টি ব্যবহারকারীদের নিত্যদিনের সব চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন প্রোফেশনাল ফিচার ও প্রযুক্তি নিয়ে এসেছে। আমরা আশা করি, রেনো সিরিজের নতুন ফোন রেনো এইট টি ব্যবহারকারীদের মন জয় করবে করবে এবং তাদের সুপ্ত প্রতিভা অন্বেষণ করতে অনুপ্রাণিত করবে।“

অপ্পো রেনো এইট টি এখন প্রি-অর্ডার করা যাচ্ছে। প্রি-অর্ডার করা গ্রাহকরা পাবেন রেনো এইট টি গিফট বক্স, তিন মাসের ফ্রি স্ক্রিন রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা এবং ইন্টারনেট বান্ডেল অফার। এছাড়া, ব্যবহারকারীরা অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকার এক্সচেঞ্জ অফার উপভোগ করতে পারবেন। 

 

|| প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল মামুন

|| সম্পাদনা: সাজিদ রাজু

 

 

 

 

 

শেনচৌ ফোরটিনের ৩ মহাকাশচারীকে পদক দিলো চীন

 

চীনের মহাকাশ গবেষণায় অবদান রাখার জন্য শেনচৌ ফোরটিনের তিন মহাকাশচারীকে গত শুক্রবার পদক দিয়েছে চীন। 

ছেন তুং এবং লিউ ইয়াংকে দ্বিতীয় শ্রেণির মহাকাশ কৃতিত্বের পদক দিয়ে সম্মানিত করা হয়। আর চাই সুছে পেয়েছেন তৃতীয় শ্রেণির পদক এবং ‘বীর মহাকাশচারী’র খেতাব।

 

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি, রাষ্ট্রীয় পরিষদ এবং কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশন এই পুরষ্কারগুলো দেয়।

শেনচৌ ফোরটিনের কমান্ডার ছেন শেনচৌ এলেভেন মহাকাশ মিশনেও অংশ নিয়েছিলেন। চীনের মহাকাশ ইতিহাসে ছেনই সর্বপ্রথম ২০০ দিনের বেশি মহাকাশে কাটিয়েছেন।

লিউ শেনচৌ নাইন মিশনে অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে চীনের ‘প্রথম নারী মহাকাশচারি’র খেতাব অর্জন করেন।

আর এটা ছিলো চাইয়ের প্রথম মহাকাশ মিশন।

গতবছরের ৫ জুন শেনচৌ ফোরটিনে করে এই তিন মহাকাশচারী চীনের মহাকাশকেন্দ্রের কোর মডিউল থিয়ানহিতে যান এবং সেখানে ৬ মাস কাজ করেন।

 

|| প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল মামুন

|| সম্পাদনা: শিহাবুর রহমান

 

চীনের প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হচ্ছে চলতি মাসে

 

চলতি মাসেই চীনের প্রথম বড় পরিসরের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট মস’কে ওপেন সোর্স সফটওয়্যার করে ফেলা হচ্ছে। এর অর্থ হলো এ সফটওয়্যারের সোর্স কোড সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এর ফলে মসের ওপর প্রত্যাশা আরো কয়েক গুণ বেড়েছে গবেষকদের। সম্প্রতি এসব তথ্য জানিয়েছেন মস সৃষ্টির পেছনের কারিগররা। গণপরীক্ষার জন্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি সর্বপ্রথম চ্যাটজিপিটির মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবট মস চালু হয়। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটবটটি তৈরি করেছেন ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।

গত মাসে পাবলিক টেস্টিং বা গণপরীক্ষা শুরু হবার পর থেকেই চীনের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সিনা ওয়েইবোতে বেশ সাড়া ফেলেছে মস। 

চ্যাটবটটি এখনো নিবিড় অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যেই ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ছিউ সিপেং জানিয়েছেন, চলতি মাসেই চ্যাটবটটিকে ওপেন সোর্স সফটওয়্যার করা হবে। এতে মসের ওপর প্রত্যাশা আরো কয়েক গুণ বেড়ে গেলো।

যেসব সফটওয়্যারের সোর্স কোড সম্পূর্ণ উন্মুক্ত থাকে, সেগুলোই ওপেন সোর্স সফটওয়্যার। সোর্স কোড হলো কোনো প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার তৈরির জন্য প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে লেখা কোড। প্রতিটি সফটওয়্যারের সোর্স কোড থাকে, তবে ওপেন সোর্স সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে সোর্স কোডটি থাকে উন্মুক্ত।

চ্যাটবট মসের নামকরণ করা হয়েছে চীনা ফিল্ম ‘দি ওয়ান্ডারিং আর্থ টু’ এর প্রখর বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন কোয়ান্টাম কম্পিউটারের নামে। ফিল্মে একটি মহাকাশযান সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতো একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। ভবিষ্যতে মসও কী এমনটা করে দেখাতে পারবে না কিনা প্রশ্নে প্রফেসর ছিউ সিপেং বলেন যে চ্যাটবট মস নিয়ে তিনি খুবই আশাবাদী। তিনি বলেন, “এটি শুধু কথোপকোথনের ভঙ্গিতে কথা বলার একটি সফটওয়্যারই নয়; কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রেও এই চ্যাটবটটি আমাদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা পরিকল্পনা করছি মসের ওপর ভর করে কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তার উন্নতি সাধন করতে। করতে পারলে সেটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর থেকে কোনো অংশে কম হবে না। আজ থেকে ১০ বছর পর কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তা বাস্তবে রূপ নিবে। এখন আমরা যেমন সার্চ ইঞ্জিনকে জীবনের অংশ করে নিয়েছি, সাধারণ ভাবে নিচ্ছি, তেমনি কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তাও হয়ে উঠবে আমাদের দৈনন্দির জীবনেরই অংশ।”

কৃত্রিম সাধারণ বুদ্ধিমত্তা বলতে বুঝানো হয় এমন একটি শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেটি মানুষের মতো করে কোনো বাস্তব সমস্যা সমাধানে সক্ষম। 

ছিউ তার আট শিক্ষার্থীকে নিয়ে গত বছরের শেষদিকে মস তৈরির কাজে হাত দেন। কাজের পরিধি ও বাস্তব সমস্যা সমাধানের দিক থেকে চ্যাটজিপিটি থেকে মস ছোট হলেও এর যৌক্তিক ক্ষমতা খারাপ না বলে দাবি করেছে মসের গবেষক দল।

|| প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল মামুন

|| সম্পাদনা: শিহাবুর রহমান

 

অনুষ্ঠান কেমন লাগছে আপনাদের তা আমাদের জানাতে পারেন facebook.com/CMGbangla পেজে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক ভিডিও প্রতিবেদন দেখতে ভিজিট করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল CMG Bangla।

 

পরিকল্পনা, প্রযোজনা ও অডিও সম্পাদনা- আব্দুল্লাহ আল মামুন

 

স্ক্রিপ্ট সম্পাদনা: সাজিদ রাজু, শিহাবুর রহমান

 

সার্বিক তত্ত্বাবধান- ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী