ফু শু - "গ্রীষ্মের ফুলের মতো জীবন"
2023-03-04 18:18:37

ফু শু, ১৯৭৩ সালের ৮ নভেম্বর চিয়াংসু প্রদেশের নানচিং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তবে, বেইজিংয়ে তাঁর বসবাস। তিনি একজন পুরুষ গায়ক, সঙ্গীত প্রযোজক এবং চীনের মূল ভূখণ্ডের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেতা।

"গ্রীষ্মের ফুলের মতো জীবন" হল ফু শু-এর দ্বিতীয় স্টুডিও অ্যালবাম।  জাং তুং ইয়া এ অ্যালবামের প্রযোজক। এতে মোট ১১টি গান রয়েছে। ওয়ার্নার রেকর্ডসের মাধ্যমে ২০০৩ সালের ২৫ নভেম্বর এটি প্রকাশিত হয়। ২০০৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর, এ অ্যালবামটি চতুর্থ গ্লোবাল চায়নিজ গানের চার্টে "বছরের সেরা অ্যালবাম" পুরষ্কার জিতে নেয়।

 শৈশবে পু শু খুব যত্নে বড় হন এবং তিনি যে-শিক্ষা পেয়েছিলেন তা তাকে অনুভব করতে শিখিয়েছিল যে, পৃথিবীটি খুব সুন্দর। কিন্তু যখন তিনি সত্যিই এই সমাজ এবং মানুষকে চিনতে পারলেন, তখন তিনি হঠাত অনুভব করলেন যে, সমাজ কতো বড় এবং মানুষ কতো ছোট। তিনি  মানুষের কিছু খারাপ দিকও বুঝতে শুরু করেন। এসব ভেবে তিনি একসময় হতাশ হয়ে পড়েন। তিনি অ্যালবামটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেন তখন, যখন তিনি দেখতে পান যে, তথ্যের পর তথ্য খুব দ্রুত সবকিছুকে ঢেকে দেয়। ২০০৩ সালের আগস্ট-এর শেষে, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যালবামটি রেকর্ড করা শুরু করেন।

অ্যালবামটির নাম "গ্রীষ্মের ফুলের মতো জীবন" রাখার কারণ হল, অ্যালবামের একই নামের গানের কথাগুলো ফু শু-এর জীবনবোধকে প্রকাশ করে। চার বছর পর আবার অ্যালবামটি প্রকাশ করার সময় ফু শু-এর মানসিকতাও এতে প্রতিফলিত হয়। পরে এই অ্যালবামে, ফু শু  আলবেনিয়ান এবং জুনুসহ অনেক গানের প্রিলিউডে বিদেশী ভাষার সংলাপ বা মনোলোগও যুক্ত করেন। কিছু বিদেশী ভাষা যোগ করলে মেজাজ বাড়তে পারে বলে তিনি মনে করেছিলেন।

"এ রাতের স্বাদ" গানের মাধ্যমে ফু শু  ব্যাখ্যা করতে চেয়েছেন যে, জীবন খুব ছোট এবং ভালবাসা খুব সুন্দর। তাই মানুষের উচিত ভালবাসার সাথে সবার সাথে সহজ আচরণ করা। ফু শু যখন শিশু ছিলেন, তখন তিনি মনে করতেন যে ভালবাসা খুব সহজ, কিন্তু যখন তিনি বড় হলেন, তখন তিনি বুঝতে পারলেন যে, কিছু মানুষের আবেগ খুব অদ্ভুত। তিনি "সুসানস ড্যান্সিং শু" তৈরি করেছিলেন, যা মৃত্যুর সাথে এক ধরণের অচেতন খেলা খেলে। ফু শু  "লা পারতে" লেখা শেষ করার পরে, অনুভব করেছিলেন যে, ফরাসি ভাষায় গানটি গাইলে আরও ভালো শোনাবে, তাই তিনি একজন বন্ধুকে গানের কথা ফরাসী ভাষায় অনুবাদ করে দিতে বলেন। কিন্তু তার বন্ধু বলেছিল যে, কিছু শব্দ ফরাসি ভাষায় গাওয়া যায় না এবং অবশেষে তার বন্ধু গানের কথা পুনরায় লিখে দেয়।

ফু শু তপস্বীর মতো এক ধরনের ধ্যানধারণা নিয়ে এ অ্যালবামটি তৈরী করতে চেয়েছিলেন। "গ্রীষ্মের ফুলের মতো জীবন" আসলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "জীবনকে গ্রীষ্মের ফুলের মতো সুন্দর করে তোলা এবং মৃত্যুকে শরতের পাতার মতো শান্ত ও সুন্দর করে তোলা" থেকে এসেছে। অ্যালবামের গানের কথা ও সংগীতের অভ্যন্তরীণ বিষয়বস্তু, প্রায় ইথারিয়াল এবং বেপরোয়া নান্দনিকতার সাধনা। ফু শু-এর বিস্ফোরক শক্তি খুব ভাল, এবং তার নিয়ন্ত্রণও বেশ আশ্চর্যজনক। এই দুটি শক্তির সামঞ্জস্য ও ঐক্যের পরে, "গ্রীষ্মের ফুলের মতো জীবন" স্বাভাবিকভাবেই আশ্চর্যজনক। একই নামের "গ্রীষ্মের ফুলের মতো জীবন" শিরোনামের গানটি "তোমার জানালা থেকে বের হও" গানের আরেকটি সংস্করণ, যেমন ফু শু অ্যালবামের কভারে লিখেছেন: "সূর্যের নীচে, আমি তোমাকে উত্সর্গ করছি, আমার সেরা বছরগুলো। "

"আই লাভ ইউ, গুডবাই" গানের ড্রাম এবং কীবোর্ডের শব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৯৫০ এবং ১৯৬০-এর দশকের পুরানো দিনের মিউজিক স্টাইল রয়েছে। এটি একটি দুঃখের গান।

ফু শু-এর হৃদয় অত্যন্ত সূক্ষ্ম, আবেগপূর্ণ। ফু শু-এর মতো কয়েকজন গায়কই হতে পারেন, যার মাত্র দুটি অ্যালবাম এবং ২০টি গান শ্রোতারা ৯ বছর ধরে মনে রেখেছেন। তিনি এখনও ভক্তদের মনে মনে। তিনি সংবেদনশীল, অন্তর্মুখী, এবং তিনি যে বৃত্তে থাকেন, তার সাথে কোনোদিন মিশে যাননি।  এ বিনোদনের যুগে, তাকে আরও আলাদা করে তুলেছে। (ইয়াং/আলিম)