চীনে একটি কথা প্রচলিত আছে, আর সেই কথাটি হলো: ‘সবুজ পাহাড় ও পানি হলো রুপা ও স্বর্ণের পাহাড়’। তিব্বতে প্রকৃতি সুরক্ষার সঙ্গে নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নকে সংযুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে অনেক দিন ধরেই। ভালো ও সুন্দর পরিবেশ এবং ভালো জীবন উপভোগ করার সুযোগ সৃষ্টির জন্য তিব্বতে একটি দীর্ঘমেয়াদী ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। সুষ্ঠু প্রকৃতি হলো তিব্বতী জনগণের স্বচ্ছলতা বাস্তবায়নের চাবিকাঠি।
এখন তিব্বতের পর্যটন মওসুম। উঁচু তুষারঢাকা পাহাড়, প্রাচীনকালের গাছ, চমত্কার নদী ও সুন্দর হ্রদ বিভিন্ন স্থানের পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
নাজিয়াবাওয়া পর্বত শিখরের নিচে ৩২ বছর বয়সী ইয়াংসিরেন নিজের বাড়িঘর পরিষ্কার করছেন। কয়েক বছর আগেও তিনি বাইরে কাজ করতেন। কিন্তু তাঁর জন্মস্থানে পর্যটনশিল্প দ্রুত উন্নত হচ্ছে বিধায় তিনি জন্মস্থানে ফিরে আসেন এবং পারিবারিক হোটেল প্রতিষ্ঠা করেন। এ জন্য তাকে ঋণ নিতে হয়েছে।
শুরুর দিকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর নির্ভর করে, এক বছরেরও কম সময়ে, তার ৩ লাখ ইউয়ান ঋণের অর্ধেকটা পরিশোধ হয়ে যায়।
প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষার জন্য স্থানীয় পৌর সরকার বনের গাছ কাটা নিষিদ্ধ করেছে। পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ তহবিল গঠন করে সবাইকে বিভিন্ন ধরণের গাছ লাগাতে উত্সাহ দেওয়া হচ্ছে। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নত হয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দারা সবুজ পানি ও পাহাড়ের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছেন।
নাঙ্গা বাওয়া পিক ও ইয়ারলুং জাংবো নদীর সামনে অবস্থিত একটি গ্রাম। গ্রামে একটি যৌথ খামার নির্মাণ করা হয়েছে। খামার থেকে পর্যটকদের জন্য খাদ্য-শস্য সরবরাহ করা হয়। দুই বছর ধরে স্থানীয়
বাসিন্দারা পর্যটনশিল্পের মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখ ইউয়ান আয় করেছেন। খামারের দায়িত্বশীল কর্মী ডিজিওয়ং বলেন, চলতি বছরের শেষ দিকে প্রথমবারের মতো অংশীদারদের লভ্যাংশ দেওয়া হবে।
বাজি গ্রামের বাসিন্দারা ধনী হয়েছেন। বহু বছর ধরে বাতজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন দুজনুজুমার মা। তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। নামছুও'র সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য রয়েছে। নাছু'র কৃষক ও পশুপালকরা বিশ্বাস করেন, সাদা গরু সুখ ও আনন্দ এনে দেয়।
তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল পরিবেশ-ক্ষতিপূরণ দারিদ্র্যবিমোচন নীতি কার্যকর করেছে। প্রকৃতি সুরক্ষা ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত। অধিক থেকে অধিকরত কৃষক ও পশুপালকের স্বচ্ছল জীবন বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০১৯ সালের শেষ দিক পর্যন্ত তিব্বতে ২৭৮টি পর্যটনগ্রাম নির্মিত হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত তিব্বতে পর্যটনশিল্পে ৫৫ হাজার ৭০০ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আর, এ খাতে মোট আয় হয়েছে ২২ কোটি ৫০ লাখ ইউয়ান। (ছাই/আলিম)