মানবাধিকারের আলোকবর্তিকা কেন নিজ দেশের শিশু শ্রমিকদের দেখে না? -সিএমজি সম্পাদকীয়
2023-03-04 17:15:59

মার্চ ৪: শিশুরা হলো বিশ্বের আশা ও ভবিষ্যত্। কিন্তু আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা ও জাতিসংঘের শিশু তহবিলের সম্প্রতি প্রকাশিত এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশু-দারিদ্র্যের সমস্যা আরো বেড়েছে। প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশকে শিশুদের রক্ষায় জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়। বিশেষ করে, মানবাধিকারের আলোকবর্তিকার দাবিদার যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিবেদনটি পড়তে হবে। তারা কেন নিজেদের শিশু শ্রমিকদের দেখে না? এমন প্রশ্ন করেছে সিএমজি সম্পাদকীয়।

এখনো দেশটিতে হাজার হাজার শিশু শ্রমিক আছে। সম্প্রতি ‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এর সাংবাদিক হান্না ড্রেয়ার যুক্তরাষ্ট্রের শিশু শ্রমিকের সমস্যা তদন্ত করার পর এ কথা বলেছেন।

এদিকে মার্কিন শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে বলা হয়, ২০২২ অর্থবর্ষে গোটা যুক্তরাষ্ট্রের ৮৩৫টি প্রতিষ্ঠানে অবৈধ শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৩৮০০জনের বেশি। যা আগের বছরের চেয়ে এক হাজার বেড়েছে। মার্কিন অলাভজনক সংস্থা ফার্ম ওয়ার্কার্স এমপ্লয়মেন্ট প্রজেক্টের ফেডারেশনের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে এখনো ৫ থেকে ৮ লাখ শিশু ফার্মে কাজ করছে। ফোর্ড, জেনারেল মোটরস, ওয়াল-মার্ট, হোল ফুডস এবং টার্গেটের মতো বড় মার্কিন ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের সরবরাহ চেইনে শিশু শ্রমিক দেখা যায়। মার্কিন ইতিহাসবিদ জ্যাক হজসন তাঁর ‘শিশু শ্রমিক যুক্তরাষ্ট্রে এখনো একটি সমস্যা’ নামক প্রবন্ধে বলেন, শিশুদের মাংস ও হাড় এখনো মুনাফার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।

এ ছাড়া মার্কিন শিশুশ্রমের বিপদ আরও উদ্বেগজনক।  ‘নিউইয়র্ক টাইমসের’ প্রকাশিত খবরে বলা হয়, মাংস প্রক্রিয়াকরণ কারখানা নির্মাণের জায়গা থেকে কসাইখানা পর্যন্ত বিপজ্জনক শিল্পে বিদেশি অভিবাসী শিশু শ্রমিকদের পাওয়া যায়। তদন্তে দেখা গেছে, শিশু শ্রমিকরা সারারাত ধরে কাজ করে এবং কঠিন পরিবেশে বসবাস করে।

কিন্তু মার্কিন সরকার তা বিবেচনা করে না। গত বছর মার্কিন সরকার বেশি খরচের কারণে কোভিড-১৯ মহামারীর সময় শিশু সম্পর্কিত কর হ্রাসের ব্যবস্থা স্থগিত রাখার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। অনুমান করা হয় এ খরচ বছরে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে। যা ইউক্রেনে দেওয়া ব্যয়ের চেয়ে কম। এর ফলে অর্ধ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে দরিদ্র শিশুর সংখ্যা ৩০ লাখেরও বেশি বেড়েছে।

আসলে শিশু শ্রমিকের সমস্যা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের প্রণালীবদ্ধ শিশুদের মানবাধিকারের লঙ্ঘন সমস্যার একটি। শিশুদের মার্কিন স্বপ্ন হারিয়ে যাওয়ার পরও মার্কিন সরকার নিজেকে ‘মানবাধিকারের বিকন’ বলার উত্সাহ পায় কী? জানতে চেয়েছে সিএমজি সম্পাদকীয়।

(ছাই/তৌহিদ)