ফেব্রুয়ারি ২৭: উ মিন হলেন জার্মান জাতীয় উশু দলের প্রধান কোচ। তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক জার্মান খেলোয়াড় এখন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। তিনি জার্মানিতে প্রথম এমন এক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন, যেখানে চীনা ভাষা ও মার্শাল আর্ট শেখানো হয়। তিনি চীনা উশু আর্ট ও সংস্কৃতি প্রচারের চেষ্টা করতে আসছেন। উ মনে করেন, ঐতিহ্যবাহী চীনা সংস্কৃতি হিসেবে, উশু চীন ও জার্মানির মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সেতু নির্মাণ করেছে। আজকের অনুষ্ঠানে আমি উ মিন’র গল্প তুলে ধরবো।
জার্মানিতে আসার আগে উ মিন ছিলেন শাংহাই ইশু দলের একজন পেশাদার খেলোয়াড়। ১৯৯৮ সালে তিনি বন্ধুর মাধ্যমে জার্মানির একটি উশু ক্লাবে কোচ হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। পরে তিনি জার্মানির উশু সমিতিতে যোগ দেন। জার্মানিতে উশু কোচ হিসেবে কাজ করাকে তিনি বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ মনে করেন।
২০০৩ সালে উ মিনকে জার্মান জাতীয় উশু দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিযুক্ত করে জার্মান উশু ফেডারেশন। উল্লেখ্য, জার্মান উশু ফেডারেশন ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ৪০ বছরেরও বেশি সময়ে শতাধিক উশু ক্লাব এতে যোগ দিয়েছে।
জার্মানি প্রতি বছর আঞ্চলিক ও জাতীয় উশু চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। উ মিন বলেন, জার্মান উশু সমিতি’র আয়োজিত জাতীয় উশু চ্যাম্পিয়নশিপের আকার বড়। এ প্রক্রিয়ায় অনুভব করা যায় যে, উশু বিদেশে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। উ মিন বলেন, অনেক বয়স্ক জার্মান আগে চীন সম্পর্কে তেমন একটা জানতেন না। তাঁরা কখনও চীনে আসেননি। তবে, উ শু শেখার মাধ্যমে তাঁদের চীনা ভাষা ও চীনা সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। কোনো কোনো ৭০ ও ৮০ বছর বয়সী মানুষ উ শু শিখছেন। উ মিন তাঁদেরকে নিয়ে চীনে এসেছেন, প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন। এর মাধ্যমে তাঁরা চীনা সংস্কৃতি সম্পর্কে আরো বেশি জেনেছেন।
২০১৮ সালে উ মিন ইউরোপের প্রথম চীনা ভাষার মার্শাল আর্ট বিদ্যালয় গড়ে তুলেন। বিদ্যালয়টি জার্মানিতে বসবাসরত চীনা প্রবাসীদের সন্তান এবং জার্মান যুবক-যুবতীদের চীনা ভাষা ভাষা ও চীনের ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি শেখায়। গত কয়েক বছরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে।
উ মিন বিশ্বাস করেন, আরও বেশি জার্মান, বিশেষ করে জার্মান যুবক-যুবতীরা এবং চীনা প্রবাসীদের সন্তানরা উশু শিখবে। চীনা ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি অবশ্যই জার্মানসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় উঠবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
উ মিন জানান, উশু হলো জীবন। তিনি অবশ্যই অব্যাহতভাবে উশুসহ চীনা সংস্কৃতি জার্মানিতে প্রচার করার চেষ্টা করতে থাকবেন। তিনি আশা করেন, আরো বেশি চীনা ও জার্মান তরুণ-তরুণী দু’দেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগে অংশ নেবে।
উ মিন বলেন, যদিও তিনি বিদেশে থাকেন, তবুও মাতৃভূমির কথা তাঁর সবসময় মনে পড়ে। বিদেশে তিনি মাতৃভূমির উন্নয়ন অনুভব করতে পারেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চীনের দ্রুত উন্নয়নের জন্য বিদেশে চীনা প্রবাসীরা গর্বিত। তাঁরা অবশ্যই আশা করেন, চীনা সংস্কৃতি প্রচারের মাধ্যমে চীন অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা জোরদার করবে।
(ছাই/আলিম)