বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে আরও পদক্ষেপ নেবে চীন
2023-03-03 15:10:13


মার্চ ৩: চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য কার্যালয় গতকাল (বৃহস্পতিবার) গুণগত মানসম্পন্ন উন্নয়নের নতুন পদক্ষেপ নিয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছে। তাতে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েন থাও বলেন,“সম্প্রতি আমি ও আমার সহকর্মীরা অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। বৈঠকে আমরা অনুভব করেছি যে অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা চীনের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে আস্থাবান। তাঁরা চীনে বিনিয়োগ বাড়াবেন এবং বাজার সম্প্রসারণ করতে চান।”

 

পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালে চীনে প্রত্যক্ষ পুঁজি ব্যবহারের পরিমাণ ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়েছে, যা তার আগের বছরের তুলনায় ৬.৩ শতাংশ বেশি ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি, অনেক বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ চীন সফরের কথা বিবেচনা করছেন।

চলতি বছর বিদেশি বিনিয়োগ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আনা এবং বিদেশে চীনের ছড়িয়ে পড়ার প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিখিল চীনের বিভিন্ন স্থানে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা প্রদর্শন করা হবে।

 

তিনি বলেন, “বিনিয়োগের চীনা বর্ষসহ নানা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হবে। এটি চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রথম অনুষ্ঠান। আমাদের উচিত বিভিন্ন পক্ষের সম্পদ ব্যবহার করে স্থানীয় সরকারের সঙ্গে বিনিয়োগ আকর্ষণের কাজকে নিয়মিত, ধারাবাহিক এবং বৈচিত্র্যময় করা। বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠানের বাইরে যাওয়া, এবং ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া ও উপসাগরীয় অঞ্চলসহ নানা স্থানে নিজেদেরকে উপস্থাপনে সমর্থন দিয়ে যাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে আমরা নানা প্রদর্শনীর প্ল্যাটফর্ম এবং বিদেশে আর্থ-বাণিজ্যিক সংস্থার ভূমিকা সম্প্রসারণ করে বহু পর্যায় ও পদ্ধতিতে বিনিয়োগ আকর্ষণের অভিযান চালাব, যাতে দেশ-বিদেশের বিনিয়োগের সংযুক্তির জন্য আরও ভালো প্ল্যাটফর্ম ও সেতু গঠন করা যায়।”

 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন আঞ্চলিক অর্থনীতির একীকরণের প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে অবাধ বাণিজ্যের বৃত্ত বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৈঠকে চীনের প্রতিনিধি ও উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং শৌ ওয়েন বলেন, ২০২২ সালে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরকারী অংশীদারদের সঙ্গে চীনের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ তার আগের বছরের তুলনায় ৭.৭ শতাংশ বেড়েছে, যার হিস্যা বৈদেশিক বাণিজ্যে ৩৪ শতাংশ ছাড়িয়েছে। চীন প্রাথমিকভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ বরাবর দেশগুলোর সঙ্গে বিশ্বমুখী অবাধ বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক গঠন করেছে।

 

ওয়াং শৌ ওয়েন বলেন,“চলতি বছর সার্বিকভাবে চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল ৩.০ সংস্করণ-সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তা ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ অর্থনীতিতে নতুন চমক তৈরি হবে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইকুয়েডরের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি-সংক্রান্ত বৈঠক সম্পন্ন করেছে চীন। এ বছরই তা কার্যকর করার চেষ্টা চালানো হবে।”

 

চলতি বছর হলো ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ উত্থাপনের দশম বার্ষিকী। চীনের সহকারী বাণিজ্যমন্ত্রী ছেন ছুন চিয়াং বলেন, ২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ বরাবর দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বাণিজ্যের পরিমাণ ১.০৪ ট্রিলিয়ন থেকে বেড়ে ২.০৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। বার্ষিক গড় বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ। ২০২২ সালের শেষ দিক পর্যন্ত চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো সেসব দেশের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতামূলক অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে ৫৭১৩ কোটি মার্কিন ডলার, যা স্থানীয়দের জন্য ৪.২১ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যতে চীন আরও বেশি দেশের সঙ্গে অবাধ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে চায় এবং ‘এক অঞ্চল এক পথ’ উদ্যোগের আওতায় অবাধ বাণিজ্য নেটওয়ার্কের নির্মাণকে বেগবান করবে।

(রুবি/এনাম)