আজকের এ অনুষ্ঠানে আমরা ৯০ দশকে জন্ম নেওয়া একজন তরুণ পেশাদার কৃষকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবো। তিনি ২০০ হেক্টর জমিতে খাদ্য চাষ করে গত ১০ বছরে নতুন কৃষি উন্নয়নের স্বপ্ন দেখতেন। তিনি জমিতে তার তরুণ সময়গুলো কাটিয়েছেন। “আমি কৃষিকাজ পছন্দ করি। কারণ মাটিতে যত ঘাম দিয়ে পরিশ্রম করবেন, কাল তার সমপরিমাণ ফেরত পাবেন।” কথাগুলো বলেছেন ওয়াং ইয়ান বিন। ২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করার পর তিনি গ্রামের বাড়ি ইন চৌ’তে 鄞州ফিরে যান এবং চিয়াং শান姜山 উপজেলার ছেন চিয়ে ছিয়াও (陈介桥গ্রামে ৬০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করেন। তিনি কুই বেন খামার প্রতিষ্ঠা করে এবং নতুন কৃষকে পরিণত হন।
জমি চাষ, বীজ রোপণ করাসহ নানা কাজ করতে শুরু করেন ওয়াং ইায়ান বিন। ধান চাষের প্রথম বছরে টাইফুনের কারণে ও অভিজ্ঞতার অভাবে তিনি ব্যর্থ হন। তবে ওয়াং ইয়ান বিন হাল ছেড়ে দেন নি। তিনি জাতীয় শ্রম মডেল লু ফাং সিংকে মাস্টার হিসেবে গ্রহণ করেন এবং বিশেষজ্ঞ ও পেশাদারদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। দীর্ঘকাল ধরে তিনি মাটি নিয়ে গবেষণা করেন এবং নোটবুকে তথ্য লিখে রাখেন। এতে তার চাষের প্রযুক্তিগত ধারণা অনেক উন্নত হয়।
প্রতি হেক্টর জমিতে উত্পাদনের পরিমাণ বাড়ানোর জন্যও অনেক চেষ্টা করেন ওয়াং। ফলে তার খামার অনেক বড় হয়। তিনি নিজের চাউলের ব্র্যান্ড নিবন্ধন করেন এবং বিশেষ সহযোগিতার মাধ্যমে সমন্বয় করেন। ২০১৯ সালে চ্য চিয়াং প্রদেশের কৃষিমেলায় তার ‘কুই বেন ব্র্যান্ডের চাউল ‘গোল্ড মেডেল’ লাভ করে।
নতুন কৃষকদের মধ্যে নেতৃত্বস্থায়ী ব্যক্তি হিসেবে ওয়াং ইয়ান বিন মনে করেন যে, কৃষি উন্নয়নে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ভূমিকা অপরিহার্য। কুই বেন খামারে রয়েছে সারি সারি রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, হারভেস্টার, শস্য শুকানোর মেশিন, উদ্ভিদ সুরক্ষা বিমানসহ নানা কৃষি সরঞ্জাম। চাষ থেকে ফসল তোলা পর্যন্ত সব প্রক্রিয়ায় যন্ত্রিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয়, যা কৃষি উত্পাদনে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। বর্তমান খামারের কৃষি যন্ত্রের পরিমাণ ৬০টিও বেশি। চাষের আয়তন শুরুর দিকের তুলনায় ব্যাপক বেড়েছে। খামারের উপার্জন অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে, আগে যে পরিমাণ কর্মী লাগত, বর্তমানে অর্ধেক হলেই হয়।
ভালো হার্ডওয়ারের পাশাপাশি থাকে স্মার্ট সফ্টওয়ার। কুই বেন খামারে একটি স্মার্ট প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে খামারের উপগ্রহ ম্যাপ, সরঞ্জামের অবস্থা, দৃষ্টান্তমূলক ক্ষেত এবং ধান বড় হওয়াসহ নানা তথ্য পাওয়া যায়। বর্তমানে কুই বেন খামারে খাদ্য উত্পাদনের পরিমাণ তিন হাজার টন ছাড়িয়েছে। উত্পাদন ক্ষমতা পার্শ্ববর্তী ক্ষেতের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। বার্ষিক উত্পাদনের মূল্য ৯০ লাখ ইউয়ান হয়েছে।
উত্পাদন বৃদ্ধির ভিত্তিতে ওয়াং ইয়ান বিন অব্যাহতভাবে উদ্ভাবন করছেন। তিনি শিল্প চেইন গঠন করার দিকে দৃষ্টি রাখেন। ধান ও চিংড়ি মাছ একসাথে চাষ করা, রঙিন রেপসিড ফুল বাগানকে ইন্টারনেট সেলিব্রিটি চেক-ইনের জায়গায় পরিণত করা, লাইভস্ট্রিমের মাধ্যমে আরও বেশি কৃষিপণ্য বিক্রি করা এবং মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে আরো বেশি শিশুদের গ্রামে যাওয়া ও কৃষিকাজে অংশ নিতে উত্সাহ দেওয়াসহ নানা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ওয়াং ইয়ান বিন। তার তরুণ ধারণায় স্থানীয় কৃষি শিল্পে নতুন প্রাণশক্তি দেখা যাচ্ছে।
প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এ পর্যন্ত। আমাদের অনুষ্ঠান কেমন লাগলো? যদি ভালো লেগে থাকেন, তাহলে আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের ফেসবুকের মেসেঞ্জার ব্যবহার করতে বা আমাদের ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করতে ভুলবেন না। আমাদের ইমেইল ঠিকানা হলো ben@cri.com.cn এবং wangdanhong@cri.com.cn। আপনাদের চীনের বসন্ত উত্সবের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি আজকের অনুষ্ঠান। সবাই ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন। (রুবি/তৌহিদ)