নিরাপদ বিশ্ব গড়ায় চীনের অবদান
2023-02-23 22:15:05


স্থানীয় সময় ১৯ ফেব্রুয়ারি, তিন দিনব্যাপী ৫৯তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন শেষ হয়। আগের দিন তথা ১৮ ফেব্রুয়ারি, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরোর সদস্য ও সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির বিদেশবিষয়ক কমিশন কার্যালয়ের  পরিচালক ওয়াং ই সম্মেলনে ‘একটি আরও বেশি নিরাপদ বিশ্ব গড়া’ শীর্ষক ভাষণ দেন।  ভাষণে তিনি বলেন, একটি আরও বেশি নিরাপদ বিশ্ব গড়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের জনগণের অভিন্ন আশা-আকাঙ্খা। এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অভিন্ন দায়িত্বও বটে। যুগের অগ্রগতি ও উন্নয়নের সঠিক দিকও এটি। 


তিনি বলেন, একটি আরও বেশি নিরাপদ বিশ্ব গড়ে তুলতে চীনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, চীন দৃঢ়ভাবে আরও বেশি দেশকে ঐক্যবদ্ধ করে, একযোগে শান্তি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে। যদি বিভিন্ন দেশ একযোগে শান্তি ও উন্নয়ন বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা চালায়, তাহলে মানবজাতির ভবিষ্যৎঅবশ্যই উজ্জ্বল হবে। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি, চীন আনুষ্ঠানিকভাবে, ‘বিশ্ব নিরাপত্তা উদ্যোগ ধারণার নথি’  প্রকাশ করে। এতে বৈশ্বিক নিরাপত্তা সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য আরও বেশি পদ্ধতিগত ধারণা ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। 


বন্ধুরা, একটি আরও বেশি নিরাপদ পৃথিবী গড়ে তোলা মানবজাতির অভিন্ন আশা। তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, মানবজাতি বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারীসহ একাধিক সমস্যা ও ঝুঁকির সম্মুখীন হয় ও হচ্ছে। ‘একটি আরও বেশি নিরাপদ বিশ্ব’ গড়ার আশা পূরণ করতে চাওয়া সহজ, কিন্তু বাস্তবায়ন করা আসলে অতো সহজ নয়। তাহলে কিভাবে আমরা তা বাস্তবায়ন করতে পারি?


প্রথমত, আমাদের উচিত বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভূখন্ডের অখন্ডতাকে সম্মান করার নীতিতে অবিচল থাকা। সার্বভৌমত্বের নীতি হচ্ছে সমসাময়িক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার ভিত্তি। বিভিন্ন দেশের উচিত তা মেনে চলা। তাদের উচিত মুখের কথায় ও আচরণে এক হওয়া এবং দ্বৈতনীতি পরিহার করা।


দ্বিতীয়ত, আমাদের উচিত সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মিটানো। বিভিন্ন দেশের মধ্যে যদি সমস্যা দেখা দেয়, তবে কোনো নির্দিষ্ট দেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করে বা সেদেশের ওপর মিথ্যা দোষারোপ করে সে-সমস্যার সমাধান করা যাবে না। সমস্যা যতই জটিল হোক না কেন, আমাদের সংলাপ ও আলোচনার পথ পরিত্যাগ করা উচিত হবে না; বিতর্ক যত তীব্রই হোক না কেন, আমাদের রাজনৈতিক পদ্ধতিতে তা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে; পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক না কেন, আমাদের শান্তিকে সুযোগ দিতে হবে। 


তৃতীয়ত, আমাদের উচিত জাতিসংঘ সনদ মেনে চলা। বিভিন্ন পক্ষের উচিত জাতিসংঘ সনদে বর্ণিত বিভিন্ন নীতি মেনে চলা এবং একযোগে  স্নায়ুযুদ্ধের চিন্তাভাবনার বিরোধিতা করা। 


চতুর্থত, আমাদেরকে উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নিরাপত্তাবিষয়ক সমস্যা সমাধানের সবচেয়ে মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেওয়া। শুধু বিভিন্ন দেশের জনগণের জীবন উন্নত হলেই, পৃথিবীতে স্থায়ী নিরাপত্তা আসতে পারে।  


বন্ধুরা, আমরা সবাই একই বাসস্থান তথা একই পৃথিবীতে বসবাস করছি। আমাদের লক্ষ্যও অভিন্ন। শুধু একতা ও সহযোগিতা বলে, আমরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারি এবং একটি আরও নিরাপদ বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি। চীন এটা সবসময়ই চেয়েছে এবং ভবিষ্যতেও চাইবে। একটি আরও নিরাপদ বিশ্বের স্বপ্ন বাস্তবায়নে চীন বরাবরের মতোই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।