ফেব্রুয়ারি ২১: চলতি বছরের শুরুর দিকে চীনের বেসামরিক বিমান চলাচল খাত দ্রুত চাঙ্গা হতে শুরু করে। বেসামরিক বিমান চলাচল ব্যুরোর প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, গত জানুয়ারিতে চীনের বেসামরিক বিমান চলাচল খাতে যাত্রীসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এ মাসে বিমানযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩.৯৭৭৫ কোটি পার্সনটাইমস, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৪.৮ শতাংশ বেশি।
চীনের মহামারী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা শিথিল ও সমন্বিত হবার পর থেকে, আন্তর্জাতিক রুটেও বিমানযাত্রীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। এখন পর্যন্ত চীন প্রায় ৬০টি দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক যাত্রীবাহী ফ্লাইট পুনরায় চালু করেছে।
নাইরোবি সময় গত ১১ জানুয়ারি, চীনের কুয়াংচৌ থেকে চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের বিমান সিজি-৬৩৩ কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবির জোমো কেনিয়াত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। চীনের বহির্গামী দলীয় ভ্রমণ পুনরায় শুরু হবার পর, এটি ছিল প্রথম চীনা পর্যটকদের কেনিয়া গমন।
রে ১
“বাহ! আমি তাদের উত্সাহ ও আনন্দ অনুভব করতে পারছি। বিমানবন্দরে তাঁরা আমাদেরকে স্বাগত জানানোর জন্য স্থানীয় বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছে। আমি তাঁদের সংস্কৃতি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণাও পেয়েছি।”—একজন চীনা পর্যটক বললেন।
মহামারী-প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার পর থেকেই চীনের বেসামরিক বিমান চলাচল শিল্প পুনরুদ্ধারের সূচনা হয়। এয়ার চায়না, চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স ও চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স—এই তিনটি কোম্পানির পরিসংখ্যান অনুসারে, গত মাসে যাত্রীসংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়েছে। এর মধ্যে এয়ার চায়নার যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৬৮ লাখ পার্সনটাইমস, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৪ শতাংশ বেশি। চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্সের যাত্রীসংখ্যা ছিল ৬৯ লাখ পার্সনটাইমস, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৭ শতাংশ বেশি; আর আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রীসংখ্যা তিন গুণ বেড়ে হয় প্রায় ৮০ হাজার পার্সনটাইমস। আর চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের যাত্রীসংখ্যা ছিল ৯৪ লাখ পার্সনটাইমস, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪১ শতাংশ বেশি।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি থাইল্যান্ডও মহামারী-পরবর্তী প্রথম চীনা পর্যটক দলকে স্বাগত জানিয়েছে। বিমানবন্দরে ‘চীন-থাই একই পরিবার: চীনা পরিবারের সদস্যদের স্বাগতম’ লিখিত ব্যানার শোভা পায়। থাইল্যান্ডের জাতীয় পর্যটন ব্যুরোর মহাপরিচালক বলেন, চীনের বেসামরিক বিমান চলাচল পুনরুদ্ধার কার্যকরভাবে বিশ্ব পর্যটন শিল্পের পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে। তিনি আরও বলেন,
রে ২
“চীনা পর্যটকরা পুনরায় থাইল্যান্ডে এসেছেন। এটি থাইল্যান্ডের অর্থনীতির ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং থাইল্যান্ডের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”
চীনা বেসামরিক বিমান চালাচল ব্যুরোর সম্প্রতি প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ৬ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চীনের সাথে ৫৮টি দেশের নিয়মিত ফ্লাইট চালু হয়েছে। এ সময়ে মোট ৯৮টি চীনা ও বিদেশী এয়ারলাইন্স কোম্পানি ৭৯৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। এর মধ্যে চীন এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ছয়টি দেশ থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনামের সঙ্গে মোট ২২৬টি ফ্লাইট বৃদ্ধি করেছে।
জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থার সম্প্রতি প্রকাশিত ‘বিশ্ব পর্যটন শিল্প ব্যারোমিটার, ২০২৩’-এ বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে বিশ্বের বৃহত্তম বিদেশী পর্যটকের বাজার হিসাবে, চীন এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, এমনকি বিশ্বের পর্যটন শিল্পের পুনরুদ্ধারকে ত্বরান্বিত করবে। অনুমান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিশ্বে আন্তর্জাতিক পর্যটকের সংখ্যা প্রাক-মহামারী পর্যায়ের ৮০-৯৫ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। (ছাই/আলিম)