ভগব্রা আহমতীর বাড়ি সিনচিয়াংয়ের বেইংলেং মঙ্গোলীয় জাতির স্বায়ত্তশাসিত বান্নারের রুওছিয়াং জেলার উতামু থানায় অবস্থিত। এটি মরুভূমিতে একটি মরুদ্যান। ভগব্রার বাড়ি বড়। বাইরে থেকে দেখতে স্থানীয় সাধারণ বাসিন্দাদের বাড়ির সঙ্গে কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু ভেতরে ঢুকলেই দেখা যাবে চারটি ঘরে অনেক পুরানো জিনিসপত্র রাখা আছে। কাঠের বেসিন, তেলের প্রদীপ, তামার কেটলি, টিস্যু বাক্সের আকারের মতো ছোট টেলিভিশন, ইত্যাদি। চারটি ঘরে কয়েক দশক আগের সরঞ্জাম দেখা যাবে।
৫৯ বছর বয়সী উগাবরা আগে সংস্কৃতিসংশ্লিষ্ট কাজ করতেন। তিনি কয়েক দশকে কয়েক শতাধিক পুরানো জিনিস সংগ্রহ করেছেন। পরে তিনি ২ লাখ ইউয়ান দিয়ে বাড়িতে একটি ছোট জাদুঘর নির্মাণ করেন। ২০১৭ সালের মে মাসে জাদুঘর খোলার পর এ পর্যন্ত ৩ হাজার দর্শক এটি পরিদর্শন করেছেন।
ছোটবেলার জীবন উগাবরার মনে আছে। তখন তাঁর বাড়িঘর ছিল মাটির, বিছানাও ছিল মাটির। তখন সপ্তাহে একবার নুডলস খেতে পেতেন। তিনি বলেন, 'আমি আমার আগের জীবন সবাইকে দেখাতে চাই। আমি তরুণ-তরুণীদেরকে জানাতে চাই যে, বর্তমান জীবন কতো সুন্দর ও সুখের।'
২৩ বছর বয়সী ইসকার আহমতী হলেন স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত বছরের গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে তিনি উগাবরার জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমি আমার ছোটবেলার জিনিস দেখেছি। আমি তখন ভাবতে পারিনি যে, বর্তমান জীবন এতো সুন্দর হয়েছে।'
উগাবরা ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকার আগ্রহ ছিল। চীনের সংস্কার ও উন্মুক্তকরণ নীতি কার্যকর হওয়ার পর, তিনি ছয় বছরের মতো চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। তিনি অনেক চলচ্চিত্রের পোস্টার এঁকেছেন। এরপর তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের পশুপালন ও সংস্কৃতিকে উপজীব্য করে ছবি এঁকেছেন। তাঁর জাদুঘরে তাঁর এসব ছবিও স্থান পেয়েছে।
২০০১ সাল থেকে তিনি খেজুর চাষ করা শুরু করেন। তিনি নিজের খেজুর চাষ ও বিক্রয়ের প্রক্রিয়ার ছবিও এঁকেছেন। বর্তমানে রুইছিয়াং হলো চীনের বিখ্যাত খেজুরসমৃদ্ধ থানা। স্থানীয় বাসিন্দারা খেজুর চাষের মাধ্যমে ধনী হয়েছেন। গোটা জেলার কৃষক ও পশুপালকরা প্রতিবছর গড়ে মাথাপিছু আয় করেন ৩৩ হাজার ইউয়ান।
উগাবরা'র নিজের প্রিয় ছবি হলো 'স্বর্ণ গাছ'। ছবিতে একজন কৃষক ও তাঁর মেয়ে খেজুর গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছে। বড় বড় খেজুর থেকে মুনাফা পাওয়া যায়। ছবিতে আরও রয়েছে নতুন বাড়িঘর ও গাড়ি এবং বিভিন্ন পর্যটক। (ছাই/আলিম)