মহামারি প্রতিরোধে ‘অলৌকিক সাফল্য’ সিপিসির শাসন সক্ষমতার পরিচায়ক
2023-02-19 19:07:21

কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধের লড়াইয়ে গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিসি।  পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন কোভিড-চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জাতিকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে আবারও অসাধারণ ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে সিপিসি।

বৃহস্পতিবার, সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনৈতিক ব্যুরোর স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে বলা হয়েছে যে চীন কোভিড-১৯ প্রতিক্রিয়ায় একটি বড় এবং সিদ্ধান্তমূলক বিজয় অর্জন করেছে এবং মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়েছে। একটি উচ্চ জনসংখ্যার দেশ সফলভাবে একটি মহামারীর মধ্য দিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছে দলটি।

বৈঠকে বলা হয়, প্রায়োগিক ক্ষেত্রে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে মহামারী পরিস্থিতির বিষয়ে সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান প্রধান অনুমান, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কাজের বড় বড় সিদ্ধান্ত এবং প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কৌশলগুলোর সার্বিক সমন্বয় সম্পূর্ণরূপে সঠিক।

২০২২ সালের নভেম্বর থেকে, দেশটি তুলনামূলকভাবে স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি মসৃণ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। ২০০ মিলিয়নেরও বেশি রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছে এবং গুরুতর অবস্থায় প্রায় ৮ লাখ রোগী কার্যকর চিকিৎসা পেয়েছে এবং চীনের কোভিড ১৯ মৃত্যু হার ছিল বিশ্বে সর্বনিম্ন।

ভাইরাসের বিরুদ্ধে চীনের সিদ্ধান্তমূলক বিজয় ক্ষমতাসীন সিপিসির শাসন সক্ষমতা প্রদর্শন করে। এটি চীনের মহামারী নীতির বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের সমস্ত অপবাদের বিরুদ্ধেও একটি বিজয়।

জনগণ এবং তাদের জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়ে, কমরেড সি চিনপিংকে কেন্দ্রে রেখে সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটি ঐক্যবদ্ধভাবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুরো জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত ও নীতি গ্রহণ করেছে। জনসাধারণ মহামারী প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব  মেনে চলার মতো বিষয়গুলোতে তাদের সমর্থন দিয়েছে।

দেশ তার অনন্য প্রাতিষ্ঠানিক শক্তিতে পূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ২০২০ সালের প্রথম দিকে হুপেই প্রদেশ এবং এর রাজধানী উহানে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য দেশব্যাপী চিকিৎসা সংস্থালোকে সংগঠিত করা হয়েছে। মাস্ক, প্রতিরক্ষামূলক স্যুট এবং ওষুধের মতো মহামারী-প্রতিরোধী সামগ্রীর উৎপাদন ক্ষমতা দ্রুত বাড়ানো হয়।

যেহেতু কোভিড-১৯ ভাইরাস দুর্বল হয়ে গেছে, দেশের টিকা দেওয়ার হার ৯০ শতাংশের বেশি ছিল, এবং কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি এবং অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে, চীন তার নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কৌশলগুলোকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে গেছে। ধীরে ধীরে কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা শিথিল করেছে। ৮ জানুয়ারি, চীন কোভিড-১৯ এর ব্যবস্থাপনাকে কমিয়ে এনেছে, এটিকে ক্লাস এ-এর পরিবর্তে ক্লাস বি সংক্রামক রোগ হিসাবে এখন মোকাবেলা করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতাও সিপিসির শক্তিশালী সমন্বয় ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। গত তিন বছরে, চীন ৪.৫ শতাংশ গড় প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এটি বিশ্বব্যাপী গড় ১.৮ শতাংশের চেয়ে অনেক বেশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির মতো প্রধান অর্থনীতির তুলনায়ও তা অনেক বেশি ছিল।

 

চীনের সামাজিক উন্নয়নে চরম দারিদ্র্য দূর করাও ছিল- মানবতার জন্য একটি অলৌকিক ঘটনা। সর্বক্ষেত্রে একটি মধ্যপন্থী সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণ, কোভিডের প্রভাব ও জটিল আন্তর্জাতিক পরিবেশ সত্ত্বেও নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে সিপিসির অসামান্য সক্ষমতা দেখিয়েছে।

উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোগ পর্যন্ত ২০২৩ সালে চীনের অর্থনীতি একটি ভাল সূচনা করেছে। জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল পূর্বাভাস দেয় যে চীনের অর্থনীতি ২০২৩ সালে ৫.২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে- যা সংস্থাটির অক্টোবর ২০২২ সালের পূর্বাভাসের চেয়ে ০.৮ শতাংশ পয়েন্ট বেশি।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কোভিড-১৯-এর পরবর্তী টিকা কার্যক্রম জন্য বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর উৎপাদন এবং সরবরাহ জোরদার করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রাথমিক স্তরে ওষুধ ও সরঞ্জাম সরবরাহে দুর্বল দিকগুলো আন্তরিকভাবে মোকাবেলা করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

সভায় প্রাপ্য সম্পদের সমন্বয় করতে এবং সরকারি চিকিৎসা-প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভিত্তি ধরে, একটি শক্তিশালী তিন-স্তরবিশিষ্ট চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

এটা নিশ্চিত যে সিপিসি, সর্বদা শক্তিশালী শাসন ক্ষমতাসহ, জাতিকে সর্বক্ষেত্রে একটি মহান আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশের পথে নতুন যাত্রায় আরও অলৌকিক ঘটনা তৈরি করতে নেতৃত্ব দেবে।

মাহমুদ হাশিম

ঢাকা স্টেশন, চীন আন্তর্জাতিক বেতার।