মানবসভ্যতার ইতিহাসে মহামারি কাটিয়ে ওঠার বিস্ময় কিভাবে সৃষ্টি হলো?
2023-02-18 18:22:01

ফেব্রুয়ারি ১৮: বিশ্ব তিন বছর ধরে করোনা মহামারির সঙ্গে লড়াই করেছে। গত তিন বছর চীন বরাবরই ‘মানুষ সত্য ও প্রাণ সত্যের’ চেতনায় পরিস্থিতি পরিবর্তন ও সময়োপযোগী মহামারির প্রতিরোধনীতি সুবিন্যাস করেছে। তাতে মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে এবং জনগণের প্রাণ ও স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে চীন ‘স্বাস্থ্য রক্ষা ও গুরুতর আক্রান্ত থেকে রক্ষার’ ভিত্তিতে অল্প সময়ের মধ্যে করোনা মহামারি স্থিতিশীল করেছে। তাতে ২০ কোটি মানুষকে চিকিত্সা দিয়েছে এবং ৮ লাখ আশঙ্কাজনক রোগীর কার্যকর চিকিত্সা নিশ্চিত করেছে। তিন বছরে চীনের প্রতিরোধকাজ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।

কোভিড-১৯ এর প্রকোপ মানব ইতিহাসের বিশ্বব্যাপী বিরল মহামারি এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বৈশ্বিক গণস্বাস্থ্য সংকট। প্রতিটি দেশ ও সমাজ, এমন কি চীনের জন্য তা বড় পরীক্ষা। চীনে রয়েছে ১৪০ কোটি মানুষ। চীনের একটি মাঝারি মানের শহরের জনসংখ্যা একটি ছোট দেশের সমান। বেইজিংসহ নানা মহানগরে জনগোষ্ঠীর ঘনত্ব অনেক বেশি। এ ছাড়া গড় চিকিত্সক ও নার্স, গণস্বাস্থ্য অবকাঠামো এবং গুরুতর আক্রান্তদের চিকিত্সা দেওয়ার ক্ষমতাসহ নানা দিক দিয়ে উন্নত দেশগুলোর চেয়ে তা দুর্বল। এ অবস্থায় করোনা প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিত্সা দেওয়া কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে চীন।

 

২০১৯ সালের শেষ দিক থেকে ২০২০ সালের প্রথমার্ধ পর্যন্ত চীন দ্রুত উহান শহর লকডাউন করে ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করে এবং নিখিল চীনে মহামারির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চীন সফলভাবে মারাত্মক আদি প্রজাতির ভাইরাস প্রতিরোধ এবং ডেল্টা উপধরণের ব্যাপক সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। চীন সর্বপ্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে মহামারি সম্পর্কিত তথ্য শেয়ার করে, সবার আগে প্যাথোজেন নিশ্চিত করে, সর্বপ্রথম বিশ্বকে ভাইরাসের জিনের তথ্য শেয়ার করে এবং সর্বপ্রথম চিকিত্সা নির্ণয়, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা তুলে ধরে; যা আন্তর্জাতিক সমাজকে মহামারি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ, ভ্যাকসিন এবং কিট টেস্টসহ নানা গবেষণার জন্য প্রযুক্তিগত ভিত্তি দিয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত নভেল করোনার কারণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ মারা গেছে। 

ব্যাপক জনসংখ্যার দেশ হিসেবে চীনের কার্যকর প্রতিরোধব্যবস্থার কারণে দশ লাখেরও বেশি মানুষকে বাঁচিয়েছে, যা মানবজাতির করোনা পরাজিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। চীন চ্যালেঞ্জের মুখে থেকেও ১৫৩টি দেশ ও ১৫টি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দশ হাজার কোটিও বেশি ত্রাণসামগ্রী দিয়েছে এবং ১২০টিও বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে ২২০ কোটিরও বেশি টিকা সরবরাহ করেছে। এখন পর্যন্ত সারা বিশ্বের চীনের দেওয়া টিকার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।

(রুবি/তৌহিদ)