‘আমাদের কথা এখনও সি চিন পিং’র মনে পড়ে, যা খুব মনোমুগ্ধকর’
2023-02-17 15:14:08

২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর স্থানীয় সময় রাত ৮টায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পাপুয়া নিউ গিনির মোরসবি বন্দরে একটি জাঁকজমকপূর্ণ সংবর্ধনানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পদ্ধতিতে, দূর থেকে আসা সম্মানিত অতিথি, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে অভ্যর্থনা জানায়। এটি ছিল ৪২ বছর পর চীনের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম পাপুয়া নিউ গিনি সফর। তখন দেশটিতে ওপেকের দেশগুলোর নেতাদের অনানুষ্ঠানিক অধিবেশনের আয়োজন করা হচ্ছিল। অনেক নেতা অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তবে পাপুয়া নিউ গিনি সরকার শুধু সি চিন পিং-কে বিশেষভাবে অভ্যর্থনা জানায়।

সফরকালে পাপুয়া নিউ গিনির তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী পিটার চার্লস পেইরি ওনিল চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংকে একটি দ্বীপের দৃশ্যাবলীসম্পন্ন শেলের মুদ্রা উপহার দেন। দেশটির সংস্কৃতিতে শেলের মুদ্রা পুর্বপুরুষদের থেকে ধারণ করা বিশেষ সাংস্কৃতিক বাহক এবং পবিত্রতার প্রতীক। শেলের মুদ্রা দিয়ে তৈরি শিল্পকর্ম তাঁরা শুধু প্রকৃত বন্ধুকে উপহার হিসেবে দিয়ে থাকে।

দেশটির জনগণের সঙ্গে সি চিন পিং’র মৈত্রী তৈরি হয়েছিল ২০ বছর আগে। সে সময় চীনের ফুচিয়ান প্রদেশে কর্মরত ছিলেন সি চিন পিং। তখন তিনি চীন সফরে আসা পাপুয়া নিউ গিনির একজন গর্ভনরকে সংবর্ধনা জানিয়েছিলেন। সে গভর্নরকে চীনের চুন ছাও প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন সি চিন পিং। এ প্রযুক্তির ব্যাপারে খুব আগ্রহী ছিলেন গর্ভনর। সি চিন পিং ‘Minning Town’ সিরিজের লিন চান সিকে গভর্নরের কাছে পাঠান।

মাইনিং টাউন চীনে একটি খুব জনপ্রিয় টিভিসিরিজ ছিল। এ সিরিজের মাধ্যমে অনেক চীনা দর্শক চুন ছাও’র বিস্ময়কর জগত সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আসলে শুধু চীনা মানুষ নয়, বরং অনেক উন্নয়নশীল দেশের জনগণও চুন ছাও’র কারণে দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছেন। পাপুয়া নিউ গিনি সে দেশগুলোর অন্যতম।

বর্তমানে চুন ছাও শিল্প দেশটির ইস্টার্ন হাইল্যান্ড প্রদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্প। এতে ৩০ হাজার মানুষের কল্যাণ হয়েছে। পাশাপাশি চুন ছাও’র উত্পাদনের পরিমান প্রতি হেক্টরে ৮৫৩ টন ছাড়ানোর বিশ্বরেকর্ডও সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা চুন ছাওকে ‘চীনা ঘাস বা সুখী ঘাস’ বলে ডাকেন। অনেক চুন ছাও অনুরাগী নিজের বা সন্তানের নামও রেখেছেন চুন ছাও।

পাপুয়া নিউ গিনি সফরকালে সি চিন পিং সে সব গল্প উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি খুব আনন্দিত যে, এ প্রকল্প এখনও পরিচালিত হচ্ছে এবং ভালো অর্থনৈতিক ও সামাজিক কল্যাণ সৃষ্টি করে চলেছে। এটি দু’দেশের সম্পর্কোন্নয়নের প্রতীকে পরিণত হয়েছে।’ সি চিন পিং ও ওনিলের উপস্থিতিতে চীন ও পাপুয়া নিউ গিনির মধ্যে চুন ছাওসহ নানা প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সে সময় ইস্টার্ন হাইল্যান্ড প্রদেশের গর্ভনর পিটার আবেগী হয়ে বলেন, ‘সি চিন পিং এখনও আমাদের কথা মনে রেখেছেন। আমরা এ জন্য তাঁর কাছে খুবই কৃতজ্ঞ।’ বর্তমানে দু’দেশের সম্পর্ক আরও কাছাকাছি এসেছে। শুধু কৃষি খাতে নয়, রাস্তা, সেতু, বিদ্যুতকেন্দ্র, হাসপাতাল ও স্কুলসহ নানা ক্ষেত্রে দু’দেশের সহযোগিতা সম্প্রসারিত হয়েছে।