ফেব্রুয়ারি ১১: সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত অনুসন্ধানী সাংবাদিক সিমুল হার্শ এক প্রতিবেদনে বলেন, জো বাইডেন প্রশাসন রাশিয়া থেকে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাস পরিবহনকারী নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। প্রতিবেদনে তিনি ঘটনার বিশদ বিবরণ দিয়েছেন। সেজন্য বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি সত্য খবর। তবে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ, সিআইএ এবং পররাষ্ট্র দপ্তর তা অস্বীকার করেছে। পশ্চিমা দেশগুলোর গণমাধ্যমগুলোও এ খবর প্রচার করেনি।
চার মাসের বেশি সময় আগে, রাশিয়া থেকে জার্মানিতে প্রাকৃতিক গ্যাস পরিবহনকারী নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে, সুইডেন ও ডেনমার্কের জলসীমায় চারটি ফুটো সৃষ্টি হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষ বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক জ্বালানিসম্পদের দাম বৃদ্ধির পটভূমিতে, অনেক পক্ষ ঘটনাটিকে ‘ইচ্ছাকৃত নাশকতা’ বলে মনে করে। কোনো কোনো বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এনার্জি পাইপলাইনে আক্রমণ করা একটি কঠিন কাজ, কোনো দেশের সরকারের সম্মতি বা কোনো গোপন নিয়ন্ত্রণ না-থাকলে এ ধরনের নাশকতা করা সম্ভব না।
হার্শের প্রতিবেদনে তিনটি সন্দেহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো প্রথমে তদন্ত করার কথা ঘোষণা করে। কিন্তু বাস্তবে তা করেননি কেন? রাশিয়া থেকে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাস পরিবহনকারী নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইন হলো রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-র যৌথ পরিকল্পনায় নির্মিত একটি অবকাঠামো। ঘটনার পর রাশিয়া ও ইইউ ঘটনাটি তদন্ত করার কথা ঘোষণা করে। তবে, ইইউ রাশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে তদন্ত করতে রাজি হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রযুক্তি ও দক্ষতা এ ক্ষেত্রে কম নয়। অথচ এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য তারা প্রকাশ করেনি।
দ্বিতীয়ত, মার্কিন রাজনীতিবিদদের কথাবার্তাও রহস্যজনক। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রুশ-ইউক্রেন সংঘর্ষ ঘটার আগে বাইডেন বলেছিলেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে, তাহলে নর্ডস্ট্রিম-২ আর থাকবে না। আর সেপ্টেম্বরে নর্ডস্ট্রিম-২ বিস্ফোরণের শিকার হলে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন একে ‘বিশাল সুযোগ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
তৃতীয়ত, পশ্চিমা দেশগুলোর গণমাধ্যম কেন হার্শের প্রতিবেদন সম্পর্কে কোনো কথা বলছে না বা খবর প্রকাশ করছে না? তাদের তথাকথিত পেশাদারিত্ব ও বস্তুনিষ্ঠতা এখন কোথায়? (ছাই/আলিম)