‘ড্রোন দিয়ে কীটনাশক স্প্রে করেন’_নতুন প্রজন্মের কৃষক ইং ছাও'র গল্প
2023-02-10 10:33:47


বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির কল্যাণ কৃষিখাতে ফলন বেড়েছে। নতুন প্রজন্মের কৃষকের কৃষিকাজের পদ্ধতিতেও পরিবর্তন এসেছে। নতুন প্রজন্মের কৃষকরা তাদের পুর্বপুরুষদের মতো নন, তারা কৃষির নতুন প্রযুক্তি ও সরঞ্জামের মাধ্যমে ‘স্মার্ট’ কৃষিকাজ করেন। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা ‘ড্রোন দিয়ে কীটনাশক স্প্রে করেন’—এমন একজন কৃষকের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো।

তার নাম ইং ছাও। তিনি চীনের চেচিয়াং প্রদেশের নান হু অঞ্চলের ইয়ু সিন উপজেলায় বাস করেন। ইং ছাও ২২ বছর বয়সে সিএসসি Computerized NumericalControl শিখে ফেলেন। ২০১৪ সালে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সমর্থনে তিনি নান হু অঞ্চলের প্রথম কৃষিকাজের ড্রোনচালকে পরিণত হন। নিজের জমিতে কাজ করার পাশাপাশি তিনি পাশ্ববর্তী কৃষি-পরিবারগুলোর জন্যও কাজ করেন। বর্তমানে তার দল ৮টি ড্রোনের মাধ্যমে ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে ১২৬৬ হেক্টর জমিতে কীটনাশক স্প্রে করতে পারে। এর আগে এ কাজ শেষ করতে একজন কর্মীকে ৫ বছর কাজ করতে হতো। ইং ছাও বলেন, একসময় তিনি ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধাকে ড্রোন চালানো শিখিয়েছেন। তাঁর প্রভাবে অনেক প্রবীণ এ প্রযুক্তি শিখতে শুরু করেছেন।

ড্রোনের পরপরই, ইং ছাও চাল রোপনকারী, ব্যালারসহ নানা সরঞ্জাম নিয়ে জমিতে কাজ করতে শুরু করেন। তাতে কার্যকারিতা বাড়ার পাশাপাশি খারাপ আবহওয়ার কুপ্রভাবও এড়ানো সম্ভব হয়। এমনকি, ২০২২ সালে সেখানে বীজ বপন থেকে শুরু করে চাল প্যাকেটজাত করা পর্যন্ত সব প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করা শুরু হয়। 

 ধান শুকানোর প্রক্রিয়ার উদাহরণ দিয়ে ইং ছাও বলেন, ৩০০ টন ধান আগে শুকাতে হলে দশ দিন ধরে সূর্যালোকে রাখতে হতো। এখন আমাদের শুকানোর সরঞ্জামের মাধ্যমে ২০ ঘন্টার মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হয়ে যায়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নে এবং বিভিন্ন কৃষি সরঞ্জামের ফলে কৃষিকাজ এখন আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে। ইং ছাওয়ের মতো আরও অনেক স্মার্ট কৃষক কৃষিশিল্পে কাজ করছেন।  সাংহাই চিয়াও থোং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাকে নতুন ‘পেশাদার কৃষক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এটি কৃষকের প্রতি দেশের স্বীকৃতি ও সমর্থনের প্রতিফলন বলে মনে করেন ইং ছাও।

গ্রামে ও কৃষিকাজে করার অনেক কিছু আছে। কৃষিকাজের ফাঁকে ইং ছাও নিজে চেচিয়াং প্রদেশের কৃষি ও বন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি বিষয় নিয়ে লেখাপড়া করেছেন। বর্তমানে তাঁর খামারে ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। স্মার্ট আবহাওয়া স্টেশন, পোকা পূর্বাভাস আলোসহ নানা তত্ত্বাবধান সরঞ্জামের মাধ্যমে সংগ্রহ করা ডেটা সময়মতো স্মার্ট কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

বর্তমানে ইং ছাও যে খামারে আছেন, সে খামারে থাকেন ৮ জন সদস্য। তারা সকলেই ৮০ ও ৯০-এর দশকে জন্মগ্রহণ করেন। আগে তারা কারখানায় শ্রম দিতেন। এখন নতুন প্রজন্মের কৃষকদলের সদস্য হয়েছেন। ইং ছাও বলেন, একটি ড্রোন একদিনে ২৬ হেক্টর জমি কাভার করতে পারে। তা থেকে একদিনে ৪০০০ ইউয়ান উপার্জন করা যায়। এ উপার্জন শহরের কর্মীদের উপার্জনের চেয়েও অনেক বেশি।

২০২৩ সালের প্রত্যাশার কথা উল্লেখ করে ইং ছাও বলেন, তিনি তার দল নিয়ে চাষের জমির আয়তন ১৩৩৩ হেক্টরে সম্প্রসারণ করবেন এবং একটি অধিকতর সুষ্ঠু চাল শিল্প চেইন গড়ে তুলবেন।

প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এ পর্যন্ত। আমাদের অনুষ্ঠান কেমন লাগলো? আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের ফেসবুকের মেসেঞ্জার ব্যবহার করতে বা আমাদের ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করতে ভুলবেন না। আমাদের ইমেইল ঠিকানা হলো: । আপনাদের চীনের বসন্ত উত্সত্সবের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি আজকের অনুষ্ঠান। সবাই ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন।

 (রুবি/আলিম)