মাছ চাষের ডিজিটাল রহস্য
2023-02-10 10:17:51


বসন্তকাল চলে আসছে। বসন্তে কৃষিকাজ নিয়ে ব্যস্ত হচ্ছেন চীনের কৃষকরা। এ বসন্তের কৃষিতে অধিকতর ঐতিহ্যবাহী কৃষি শিল্পে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে কৃষিকাজ নতুন রূপ পেয়েছে। চীনের আন হুই প্রদেশের ইং শাং জেলাটি নদীর তীরে অবস্থিত। তাই মত্স্য শিল্প অনেক উন্নত। তবে, হুয়াই নদীর গুরুত্বপূর্ণ প্রবাহিত অঞ্চলে মত্স্য শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় নদনদীতে মাছ শিকার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে এখানকার জেলেরা উন্নয়নের নতুন সুযোগ অনুসন্ধান করছেন।


আন হুই প্রদেশের ইং শাং জেলার কুও পেং গ্রামের বসন্তকালে শিকার করা প্রথম মাছের চালানের মধ্যে ৪০০টিরও বেশি সামুদ্রিক মাছ ক্রয় করেছেন একজন গ্রাহক। প্রতি কেজি বাজার দামের চেয়ে ৭ ইউয়ান বেশি দিয়ে বিক্রি করেছেন।

  

যিনি সেসব সামুদ্রিক খাদ মাছ কিনেছেন, তার নাম ছেং ছিং হুই। তিনি জেলেদের সঙ্গে ভবিষ্যতে দীর্ঘকালীন সহযোগিতা চালানোর কথা বলেছেন। তিনি বলেন, আমরা তাজা মাছ চাই, দামী হলেও অসুবিধা নেই”।

গ্রিনহাউজে শাকসবজি চাষ করা এখন খুব স্বাভাবিক বিষয়। তবে গ্রিনহাউজে মাছ লালন করা অসাধারণ ব্যাপর। গত বছরের অগাস্ট মাসের শেষ দিকে ইং শাং জেলার হুয়াং ছিয়াও উপজেলায় স্মার্ট মাছের খামার তৈরি করা হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী নদনদীতে জাল দিয়ে মাছ চাষের তুলনায় গ্রিনহাউজে মাছ চাষ করার মধ্যে প্রযুক্তিগত চমক রয়েছে।

 

স্মার্ট মত্স্য খামারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি কুও সিং ই বলেন, প্রতিটি বক্সে রয়েছে একটি সেন্সর। সবুজ বাতি জ্বললে বোঝা যায় অক্সিজেন স্বাভাবিক আছে। লাল বাতি জ্বললে অক্সিজেনের অভাব বোঝা যায়। আমি মোবাইলে সব অবস্থা জানতে পারি”।

এই সেন্সরকে মজা করে ‘ডিজিটাল ঘড়ি’ বলেন কুও সিং ই। এ ধরনের সরঞ্জাম না থাকলে গ্রিনহাউজে মাছ চাষ করা খুব কঠিন হয়ে পড়তো। রাতের বেলা সবসময় জেগে থেকে অক্সিজেনের অবস্থা সম্পর্কে জানতে হতো। এখন আর সে অবস্থা নেই। ‘ডিজিটাল ঘড়ির’ ব্যবহারে মাছের গুণগত মান এবং উত্পাদনের পরিমাণ ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

এ মত্স্য খামারের আয়তন ০.৪৩ হেক্টর। এখানে আছে ৮০টি বক্স। প্রথম দিকে এ ক্ষেতে মাত্র ৪টি বক্স ছিল। পরীক্ষামূলক চর্চার পর উপার্জন বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন ৮০টি বক্স বসানো হয়েছে। এটি বক্সে যে পরিমাণে মাছ চাষ করা যায়, তা ০.১৬ হেক্টর জমির পানিতে চাষ করা মাছের সংখ্যার সমান। বর্তমানে প্রতিদিন ১৫০০ কেজি তাজা মাছ এখান থেকে প্যাকেজ করে নিখিল চীনের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে।

মাছের পিক সিজনে এ খামারে প্রতিদিন অর্ধ শতাধিক কর্মী লাগে। সেসব কর্মী স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে থেকে নিয়োগ করা হয়। এর মাধ্যমে স্মার্ট মাছের খামারে কর্মশক্তির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি স্থানীয় গ্রামবাসীদের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।