বেনিন প্রজাতন্ত্রের ছাত্রী কপাদোনো জোসিয়ান: চীনের সঙ্গে আমার একটি দীর্ঘ গল্প আছে
2023-02-07 14:35:15

বেনিন প্রজাতন্ত্রের ছাত্রী কপাদোনো জোসিয়ান ক্যাপিটাল নরমাল ইউনিভার্সিটিতে চীনা ভাষা আন্তর্জাতিক শিক্ষার মাস্টার্সের ছাত্রী।

‘আমার এবং চীনের গল্পটি একটি দীর্ঘ গল্প। আমি ছোটবেলা থেকেই চীন সম্পর্কে খুব আগ্রহী।’

‘কেন তিনি চীনে পড়াশুনার কাজ বেছে নিলেন’ জিজ্ঞেস করা হলে, জোসিয়ান একথা বলেন। জোসিয়ান পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বেনিনের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি শহর লোকোসা থেকে এসেছেন। তিনি যখন শিশু ছিলেন, তখন তিনি লক্ষ্য করতেন যে, বাড়ির অনেক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস চীন থেকে আগত। যা তাকে এই দূরবর্তী দেশটি সম্পর্কে আগ্রহী করে তোলে।

তিনি বলেন, ‘যখন আমি ছোট ছিলাম, বাড়িতে চীনের তৈরি অনেক জিনিস দেখতাম। যেমন ফ্ল্যাশলাইট ও অনেক ইলেকট্রনিক পণ্য। তাই আমি বিশেষভাবে কৌতূহলী ছিলাম যে চীন কী ধরনের দেশ, যা এত কিছু তৈরি করতে পারে, যে কারণে আমরা জীবন আরও সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে, এই দেশটি সম্পর্কে জানা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।’

চীন সম্পর্কে কৌতূহল নিয়ে, জোসিয়ান দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বেনিনের অ্যাবোমি-কালাভি বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটে চীনা ভাষা অধ্যয়ন করেন। ২০১৭ সালে, জোসিয়ান চীনে আসেন এবং ক্যাপিটাল নরমাল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার জীবন শুরু করেন।

 

‘আমি চীনে আসার আগে, চীন সম্পর্কে আমার অনেক চিন্তাভাবনা ছিল। বেনিনে চীন সম্পর্কে কথা বললে অনেকে প্রথমে চীনা কুংফু, মার্শাল আর্ট ইত্যাদির কথা ভাবত। কিন্তু আমি এখানে আসার পর জানতে পেলাম যে, আমার চীনা বন্ধুদের কেউ কুংফু জানে না। অন্য বিষয় হল, আগে ভাবতাম চীনে এত মানুষ যে, দেশটি ভালভাবে পরিচালনা করা সম্ভব না। তবে চীনে আসার পর আমি দেখতে পেলাম যে, চীন খুব ভালভাবে পরিচালিত একটি দেশ, যা খুবই নিরাপদ।’

 

জোসিয়ান বলেন, এখানকার শিক্ষকরা খুব উত্সাহী, এবং তিনি পড়াশোনা ও জীবন- উভয় ক্ষেত্রেই অনেক সহায়তা পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘চীনে আসার পর, আমরা অনেক ভাষা কার্যক্রম পরিচালনা করি। এক ইভেন্টের পর আমরা চাইনিজ খাবারের অভিজ্ঞতা নিতে একটি হটপট রেস্তোরাঁয় যাই। সেদিন আমি প্রথমবার হটপট খাই। তারপর থেকে, আমি হটপট ভালবাসি। এবং তারপর নিয়মিত আমার বন্ধুদের সঙ্গে হটপট খেতে যাই।’

বহু বছর ধরে চীনে থাকার পর, জোসিয়ান থিয়েনজিন, শানডং, জিলিন এবং অন্যান্য জায়গায় গেছেন। জোসিয়ান বলেন, ভ্রমণের সময় তিনি যে চীনাদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তাদের বেশিরভাগই উত্সাহী এবং আলাপচারী ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘উদাহরণস্বরূপ, আমার লাগেজ ধরে সাহায্য করা, আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং এমনকি আমার কাছে কিছু বিখ্যাত স্থানীয় আকর্ষণীয় স্থানের সুপারিশ করা হয়। যাতে আমি অনুভব করতে পারে যে, আমি খুব উষ্ণ জায়গায় এসেছি।’

 

২০১৯ সালে, বেনিন ও চীন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ নির্মাণে সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর করে। জোসিয়ান বলেন, দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাই।  সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বেনিনের অনেক মানুষ চীনা ভাষা শিখতে চায়। তাদের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, দুই দেশের জনগণ উভয়ের সহযোগিতা ও সংস্কৃতি বোঝার আরও সুযোগ পাবে। আমি আশা করি, চীনা জনগণকে প্রকৃত বেনিন দেখাতে পারবো এবং তাদেরকে বেনিন যেতে আগ্রহী করে তুলতে পারব।’

ভবিষ্যতের কথা প্রসঙ্গে জোসিয়ান বলেন যে, তিনি ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে বিনিময় এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে চান।

 

 

জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই