পাক বন্ধুর চীনের আধুনিক দ্রুতগতির ট্রেনে ভ্রমণ
2023-02-06 16:49:23

“চীনে তৈরি আধুনিক যাত্রীবাহী ট্রেনে ভ্রমণের আশা আমার শেষ পর্যন্ত পূরণ হয়েছে। ট্রেনটি আমার কল্পনার চেয়েও বেশি আরামদায়ক।” পাকিস্তানের গ্রিন লাইন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া শহরের বাসিন্দা মাদিহা ওসমান এ কথা বললেন।

গ্রিন লাইন এক্সপ্রেস ট্রেনটি পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদকে দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী করাচির সাথে সংযুক্ত করেছে। ১ হাজার ৫৪৮ কিলোমিটার লম্বা লাইনটি পাঞ্জাব প্রদেশ ও সিন্ধু প্রদেশের প্রধান শহরগুলোর মধ্য দিয়েও বয়ে গেছে। গত ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের রেলপথ কোম্পানি, ২০২২ সালে চীন থেকে আমদানীকৃত, যাত্রীবাহী ট্রেন গ্রিন লাইন এক্সপ্রেস ট্রেন গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করার কথা ঘোষণা করে।

সিআরআরসি থাংশান কোম্পানি লিমিটেডের পাকিস্তান লাহোর পরিষেবা স্টেশনের প্রধান লেই সোং বলেন, “যাত্রীদের প্রথম শ্রেণীর অভিজ্ঞতা দিতে আমরা যাত্রীবাহী ট্রেনকে তারহীন নেটওয়ার্ক দ্বারা সজ্জিত করেছি। কিছু বগিতে প্রত্যেক আসনের পিছনে ভিডিও ও অডিও সিস্টেম আছে।” তা ছাড়া, চীনা ইনজিনিয়াররা যাত্রীবাহী ট্রেনের বিদ্যুত্ সরবরাহ ব্যবস্থাসহ চীনে উত্পাদিত সরঞ্জাম সম্পর্কে স্থানীয় অপারেটরদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

ট্রেনের বিজনেস ক্লাস চীনের অভ্যন্তরীণ দ্রুতগতির ট্রেনের বিজনেস ক্লাসের মতোই। বগিতে এসি আছে, আছে বৈদ্যুতিক পাখাও। ৯টি বগির মধ্যে রয়েছে ৫টি স্লিপিং বগি।

প্রথমবারের মতো চীনে উত্পাদিত যাত্রীবাহী ট্রেনে চড়ে পাঞ্জাব প্রদেশের রাওয়ালপিণ্ডি শহরের ব্যাংকার ইমরান কুরেশি সন্তুষ্ট। তিনি জানান, চাকরির কারণে তাঁকে নিয়মিত রাওয়ালপিণ্ডি ও লাহোরের মধ্যে যাতায়াত করতে হয়। গ্রিন লাইন এক্সপ্রেস ট্রেন তাঁর যাতায়াত সহজ করে দেবে।

কুরেশি’র পাশের যাত্রী আলী আসিফ স্থানীয় একজন ইন্টারনেট সেলিব্রেটি ব্লগার। তিনি ছোট ভিডিওর মাধ্যমে চীনে উত্পাদিত যাত্রীবাহী ট্রেনের সুন্দর অভিজ্ঞতা স্থানীয়দের সামনে তুলে ধরতে চান।

“যাত্রীবাহী ট্রেনটির আগামী দশ দিনের টিকিট সব বিক্রি হয়ে গেছে।” রাওয়ালপিণ্ডি স্টেশনের প্রধান জলিল মাহমুদ জানালেন। তিনি আরও বললেন, “চীনে উত্পাদিত পণ্যের খ্যাতি রয়েছে। চীনে উত্পাদিত যাত্রীবাহী ট্রেনে চড়তে অনেকেই আগ্রহী।”

গত ২৭ জানুয়ারি পাক প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ শাহবাজ শরীফ এক ভাষণে বলেন, তাঁর দেশ চীন থেকে বহু নতুন ফাংশনযুক্ত আধুনিক যাত্রীবাহী ট্রেন আমদানি করেছে। এসব যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হবার পর দেশটির রেলপথের ভাবমূর্তি আরও উন্নত হবে। আরামদায়ক দ্রুত ভ্রমণের জন্য অনেক বেশি যাত্রী এখন যাতায়াতের জন্য রেলপথ বেছে নেবেন।

“ভবিষ্যতে আমরা পাকিস্তানকে উচ্চমানের যাত্রীবাহী ট্রেন উত্পাদনে সাহায্য করবো। প্রযুক্তিগত সমর্থন দেওয়ার মাধ্যমে দেশটির রেলপথের পরিবহন-ক্ষমতাও উন্নত করবো। তখন দেশটির আরো বেশি যাত্রী আরামদায়ক ট্রেনে ভ্রমণ করবেন।” লেই সোং বললেন। (প্রেমা/আলিম)