লন্ঠন উত্সবে পরিবার নিয়ে চীনাদের বিশেষ অনুভূতি
2023-02-03 17:56:52

লন্ঠন উত্সব হল চীনের চান্দ্র বর্ষে বসন্ত উত্সবের পর সবচেয়ে বড় ঐতিহ্যবাহী উত্সব। চীনা জাতি সবসময় পরিবার এবং পুনর্মিলনের ওপর গুরুত্বারোপ করে।

এমন সময় চীনারা ইউয়ান সিয়াও নামে এক ধরনের খাবার খায় এবং পারিবারিক পুনর্মিলন হয়।

ঠিক যেন চীনের একটি কথার মত: এই পৃথিবীর মূলে আছে দেশ, আর দেশের মূল হল পরিবার। পরিবারের ওপর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং সবসময় গুরুত্বারোপ করেন। পরিবার হল মানুষের হৃদয়ের বন্দর, পরিবার ভালো হলে পরিবারের সবাই ভালো হয়। ২০১৫ সালে বসন্ত উত্সবের শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় সি চিন পিং বলেছিলেন, পরিবার হল সমাজের মৌলিক কোষ, মানুষের জীবনের প্রথম স্কুল। এই যুগ বা জীবনের অবস্থা পরিবর্তন হোক না কেন, সবার উচিত পরিবারের উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা। পরিবার সুষম হলে সমাজ স্থিতিশীল হবে। পরিবার সুখী হলে সমাজও স্থিতিশীল হয়।

 

২০১৬ সালে সি চিন পিং আবারও পরিবারের ভূমিকার কথা জোর দিয়ে বলেছেন। তিনি বলেন, দেশ শক্তিশালী হওয়া, জাতি পুনরুদ্ধার হওয়া, জনগণের জীবন সুখী হওয়া, তা কোনো ধারণা নয়; বরং তা কোটো কোটি পরিবারের সুখী জীবনের প্রতিফলন ঘটায়। তা কোটি কোটি চীনা মানুষের জীবনের অব্যাহত উন্নতি থেকে বোঝা যায়।

পরিবারের পুনর্মিলনের সময় সবচেয়ে উষ্ণ এবং মনের সবচেয়ে সত্য অনুভূতি। চীনের ঐতিহ্যবাহী লণ্ঠন উত্সবে উপভোগ করা যায় গভীর পরিবারের অনুভূতি, মৈত্রীর অনুভূতি এবং পরস্পরের প্রতি যত্ন। ২০১৭ সালের বসন্ত উত্সবের শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছিলেন, বর্তমান যুগে সমাজের দ্রুত পরিবর্তন হয়। লোকজন কাজের কারণে অনেক ব্যস্ত থাকে। এমনকি খেতে এবং ঘুমাতেও ভুলে যায়। জীবনের জন্য চার দিকে ঘুরে বেড়ায়। তা সত্ত্বেও মানুষের মধ্যে ভাবাবেগ বজায় থাকে। দূরত্বের কারণে আবেগ বিচ্ছিন্ন হয় না।

 

পরিবার হল দেশের ভিত্তি। দেশ হল কোটি কোটি পরিবারের প্রতীক। বসন্ত উত্সবসহ চীনের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী উত্সবের সময়ও মনের অনুভূতি প্রকাশের সময়। ২০১৮ সালের বসন্ত উত্সবের শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় সি চিন পিং বলেছিলেন, সব পরিবার ভালো হলে, দেশ ভালো হবে, জাতি ভালো হতে পারবে। আমাদের উচিত চীনা জাতির ঐতিহ্যবাহী সদগুণকে আরো জনপ্রিয় করা, দেশপ্রেম এবং পরিবারকে ভালোবাসার অনুভূতি সংযুক্ত করা, নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন, পরিবারের স্বপ্ন বাস্তবায়ন এবং দেশের স্বপ্ন ও জাতির স্বপ্ন সংযুক্ত করা। চীনের সব পরিবারের মেধা ও শক্তি দিয়ে নতুন যুগে চীনের বৈশিষ্ট্যময় সমাজতন্ত্রের মহান বিজয় বাস্তবায়ন করা উচিত।

 

২০১৯ সালের বসন্ত উত্সবের শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় সি চিন পিং আবারো জোর দিয়ে বলেন, আমাদের উচিত গোটা সমাজে দেশপ্রেমের চেতনা জনপ্রিয় করা। সমাজতন্ত্রের মূল্যবোধ বাস্তবায়ন করা। প্রত্যেক চীনা, প্রত্যেক পরিবার, চীনা জাতির বড় পরিবারের জন্য অবদান রাখতে পারে।

প্রাচীনকাল থেকে চীনাদের মনে দেশপ্রেম এবং পরিবারের ভালোবাসার অনুভূতি লালন করা হয়। প্রত্যেক পরিবারের এগিয়ে যাওয়া নিশ্চয় দেশের উন্নয়ন করতে পারে। ঠিক যেন ২০২২ সালের বসন্ত উত্সবের শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় সি চিন পিং-এর কথামত, ১৪০ কোটিরও বেশি চীনা মানুষ হাতে হাত রেখে একসঙ্গে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে গেলে, আমরা নিশ্চয় নতুন যুগের পথে নতুন উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করতে পারবো।