এবারের বসন্ত উত্সব চলাকালে রাজধানী বেইজিংয়ের বিভিন্ন পণ্য ও সেবার ভোগ বেড়েছে। শহরবাসীরা নববর্ষের গভীর স্বাদ অনুভব করেছেন। পৌর বাণিজ্য ব্যুরোর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বসন্ত উত্সবের ছুটির প্রথম ৪ দিনে বেইজিংয়ের ৬০টি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা-এলাকার যাত্রীপ্রবাহ ছিল ১.৪১২৭ কোটি পার্সন টাইমস, যা গত বছরের একই সময়ের ৯০ শতাংশর সমান।
চীনা নতুন বছরের তৃতীয় দিনে সুবিশাল ছিয়ান মেন সড়কে মানুষের স্রোত ছিল সীমাহীন। এখানে-সেখানে লণ্ঠন ও স্ট্রীমার দিয়ে সাজানো হয়। নববর্ষে ছিয়ান মেনে এসে খাঁটি বেইজিংয়ের স্বাদ অনুভব করতে চায় লোকেরা। বেইজিংয়ে নববর্ষ উদযাপনকারী শিয়াও রোং তাঁর বান্ধবীর সাথে বেড়াতে আসেন। তারা বিভিন্ন স্টাইলের দোকানে এসে ছবি তোলার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের পছন্দের জিনিসপত্র কেনেন।
সরগরম ছিল টাইম-অনার্ড ব্রান্ডের দোকানগুলো। প্রায় প্রতিটি দোকান ছিল ক্রেতায় ভরপুর। তোংলাইশুনের টেকআউট জানালার সামনে মানুষের লম্বা লাইন দেখা যায়। সুস্বাদু খাসির মাংস ক্রেতাদের এখানে টেনে আনে। খাওয়ার সময় ছুয়ান চুতে ও দু ই ছুসহ বিভিন্ন টাইম-অনার্ড ব্র্যান্ড রেস্তোঁরা ছিল ডাইনারে পূর্ণ। আসনের জন্য অপেক্ষারত মানুষের লাইন ছিল লম্বা। আবহাওয়া ঠাণ্ডা হলেও, উ ইয়ু থাই’র দরজার সামনে প্রচুর লোক ইন্টারনেটের কারণে বিখ্যাত আইসক্রিম কেনার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। অনেক তরুণ-তরুণী হাতে আইসক্রিম নিয়ে ছবি তোলেন। তাদের মুখে ছিল পরিতৃপ্তির ছাপ।
সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা মানুষের জন্য আরো বেশি আনন্দ ডেকে আনে। ‘আমাদের এখানে চীনা ছায়া পুতুল দেখা ও হাতের কাজ করা যায়। স্বাগতম!’—একটি সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা হলের সামনে এই ব্যানারের মাধ্যমে লোকজনকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। পাশের আউটডোর বুথে ছোট বন্ধুদের কৌতূহল চিনি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন মূর্তি।
‘বসন্ত উৎসব সংস্কৃতি কর্মশালা’ অনুষ্ঠিত হয় বেইজিং কর্মশালায়। ‘নতুন জীবন, নতুন ফ্যাশন ও নববর্ষের ছবি’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী অনেক মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সন্ধ্যা আসার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রঙের লণ্ঠন জ্বলে ওঠে। ‘রাতের বেইজিং আরো সুন্দর’—একজন তরুণ এভাবেই তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করেন। তিনি সবেমাত্র কেনা খরগোস লণ্ঠন জ্বালিয়েছেন।
চলতি বছরের বসন্ত উত্সবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা-এলাকা ছিল মানুষে ভরপুর। বেইজিংয়ের ভোগবাজার বসন্ত উত্সবে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। ছুটির প্রথম ৪ দিনে, পৌর বাণিজ্য ব্যুরোর গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বাবধান করা ডিপার্টমেন্ট স্টোর, সুপারমার্কেট, বিশেষ দোকান, রেস্তোঁরা ও ই-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় ছিল ২৮৪ কোটি ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের ৮৯.৮ শতাংশের সমান এবং ২০১৯ সালের একই সময়ের চেয়ে ১৩.৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে তাসিং বিমানবন্দর ব্যবসা এলাকা, সিহোংমেন ব্যবসা এলাকা ও ছিয়ানমেন তাশিলা ব্যবসা এলাকার যাত্রীপ্রবাহ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে যথাক্রমে ১১০, ৩৫.৪ ও ৩৪.৩ শতাংশ বেশি ছিল। (প্রেমা/আলিম)