“শেকড়ের গল্প”
2023-01-25 19:44:14

বিশ্ববাসীক ক্ষুধামুক্ত রাখতে অল্প অল্প করে ভূমিকা রাখছে চীনের অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি। পেছনে পড়ে থাকা ছোট ছোট গ্রামগুলো মুক্তি পাচ্ছে দারিদ্রের শেকল থেকে। আর দিনশেষে স্বল্প পরিসরের উদ্যোগগুলো দেখছে সফলতার মুখ আর হয়ে উঠছে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির অন্যতম অনুসঙ্গ।

কিন্তু কম সময়ে এত বড় সফলতার গল্প কীভাবে সম্ভব করলো চীন দেশের কৃষকরা? সে গল্পই আপনারা জানতে পারবেন “শেকড়ের গল্প”অনুষ্ঠানে। 

শুরুতেই শ্রোতারা শুনতে পারবেন বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক “কৃষি-প্রযুক্তির”খবর।

এটি মূলত চায়না মিডিয়া গ্রুপ- সিএমজি বাংলার বাংলাদেশ ব্যুরোর কৃষি বিষয়ক বিশেষ রেডিও অনুষ্ঠান।  যা সঞ্চালনার দায়িত্বে রয়েছেন রয়েছেন এইচ আর এস অভি।ss

শুরুতেই অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তির খবর

পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য উৎপাদনে দারুণ এক পদ্ধতি সামনে এনেছে চীন। সেখানে চাষের দায়িত্ব দেয়া হয় কৃষি সমবায়কে । কৃষকদের পারস্পারিক সযোগিতায় গড়ে ওঠা এই সংগঠন বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষাবাদ করে থাকে।

এতে করে একদিকে যেমন উৎপাদন  খরচ কমে যায়, অন্যদিকে বড় লাভের মুখ দেখে কৃষকরা। কিন্তু এই সমবায় ব্যবস্থা কিভাবে কাজ করে চীনে ? এ নিয়ে আমাদের একটি তথ্যচিত্র আছে, যেটি বেইজিং থেকে পাঠিয়েছেন সহকর্মী তৌহিদ শরৎ।

নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে কৃষি ক্ষেত্রকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে চীন। সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি জমিতে স্প্রে করা হয় প্রাকৃতিক ফার্টিলাইজার আর পর্যাপ্ত পানি।

আর এভাবেই বদলে যাচ্ছে প্রচলিত কৃষির চিত্র। ঘুরছে উন্নয়নের চাকা। উপকৃত হচ্ছে কৃষক আর সব মিলিয়ে লাভবান হচ্ছে পুরো দেশের নাগরিকরা।

 

দ্বিতীয় অংশে মূলত আলোচনা করা হয় আধুনিক কৃষির “দিন বদলের গল্প”।

শ্রোতারা এতে জানতে পারবেন, চীনের কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেভাবে পেয়েছে ব্যাপক সফলতার ছোঁয়া।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সমুদ্রে গড়ে তোলা হয়েছে মাছের খামার।

এই ধরনের দুর্দান্ত খামারে রয়েছে বিশাল আয়তনের ১ লাখ টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন আধুনিক কৃষি জাহাজ।

চলুন শান্তা মারিয়ার সঙ্গে ঘুরে আসি চীনের অত্যাধুনিক মৎস্য খামার থেকে।

 

এছাড়াও রয়েছে দেশটির বিভিন্ন প্রদেশের কৃষি বিষয়ক টুকরো খবর। এ খবরগুলো তৈরী করেছেন আফরিন মিম ও এইচ এম সৌরভ।

শষ্য উৎপাদনে চীনে নতুন রেকর্ড

 

শস্য উৎপাদনে সদ্য সমাপ্ত ২০২২ সালে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে চীন।  কৃষি ও গ্রামীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রধান কৃষিবিদ চাং ইয়ানত্য বুধবার বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত বছর দেশটির শষ্য উৎপাদনে ৬৮ হাজার ৬৫০ কোটি টনে পৌঁছায়, যা ছিল সর্বকালের সর্বোচ্চ রেকর্ড এবং টানা অষ্টম বছর কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত ৬৫ হাজার কোটি টন লক্ষ্যেরও বেশি।

 

তিনি জানান, ২০২২ সালে চীনে সয়াবিনের আবাদ-এলাকা তার আগের বছরের তুলনায় ১৮ লাখ ২০ হাজার হেক্টর বেড়ে ১ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার হেক্টরে পৌঁছেছে। দেশটিতে আবাদের এই পরিমাণ ১৯৫৮ সালের পর সর্বোচ্চ।

 

চাং ইয়ানত্য জানান, ২০২২ সালে সয়াবিনের উৎপাদন দাঁড়ায় ২ কোটি ২ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টনে, যা ২০২১ সালের তুলনায় ৩৮ লাখ ৯০ হাজার টন বেশি।

 

চীনের চয় সাম চাষ 

চীনের শানসি প্রদেশের ইয়ুনছাং সিটির সিয়াসিয়ান কাউন্টি। যেখানে সবজি চাষীরা মাঠ থেকে তুলছেন চয় সাম । এই সবজি চীনে খুব জনপ্রিয়। এর চীনা নাম ছাই সিন। শানসি প্রদেশ থেকে এই সবজি ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ২ হাজার কিলোমিটার দূরের কুয়াংতুং প্রদেশে এবং হংকংয়ে। দক্ষিণ চীন, কুয়াংতুং, হংকং ইত্যাদি অঞ্চলে বিশেষভাবে এই সবজি খুব জনপ্রিয়।

পাহাড়, উচুঁ ও সমতলভূমি, সুবিধাজনক জলবায়ু এই অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষের জন্য তৈরি করেছে অনুকুল পরিবেশ ।

সিয়াসিয়ান কাউন্টি থেকে গড়ে প্রতিদিন ৭৫ হাজার কিলোগ্রাম ট্রাকে তোলা হয় এবং দক্ষিণ চীনে পাঠানো হয়।

উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে মাত্র ৩০ ঘন্টার মধ্যেই কুয়াংতুং ও হংকংয়ের বাসিন্দাদের খাবার টেবিলে পৌছে যায় তাজা সবজি।

২০১৯ সাল থেকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কৃষির নতুন মডেল এখানে চালু করেছেন। সেটা হলো উত্তরে চাষ করে দক্ষিণে বিক্রি করা।

যথাযথ নীতি, পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের কারণে সবজি চাষ একটি মজবুত শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং স্থানীয় কৃষকদের আয়ও বাড়িয়ে দিয়েছে। উন্নত গুদাম ও পরিবহন ব্যবস্থা এবং সমন্বিত পদ্ধতি কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে অবদান রাখছে। 

 

শহরের বাসিন্দাদের গ্রামে ফিরে আসা ও টুকরো জমিতে চাষ করা যেমন এক দিকে সচল রেখেছে গ্রামের অর্থনীতি অন্যদিকে প্রতিনিয়তই  সমৃদ্ধ হচ্ছে  স্থানীয় পর্যটন শিল্প । 

 

প্রিয় শ্রোতা, সিএমজি বাংলার এ রেডিও অনুষ্ঠানটি আপনার শুনতে পাবেন বাংলাদেশের রেডিও গণমাধ্যম রেডিও টুডেতে।

যেখানে আপনার শুনতে পাবেন “শেকড়ের গল্পের” নতুন নতুন পর্ব । যেখানে খুঁজে পাবেন সফলতা আর সম্ভাবনার নানা দিক। আর এভাবেই চীনা কৃষির সঙ্গে শুরু হোক আপনার দিন বদলের গল্প।