সুওনানমুছাইরাং হলেন চীনের কানসু প্রদেশের কাননান তিব্বতী জাতির স্বায়ত্তশাসিত বান্নারের চুওনি জেলার নিবা থানার নিবা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ছংছিংয়ের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর শহরে কাজ করার সুযোগ ত্যাগ করে, জন্মস্থানে ফিরে এসে নিজের ব্যবসা গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু করেন।
কিন্তু নিজস্ব ব্যবসা গড়ে তোলার আগে তিনি স্থানীয় একটি ইন্টারনেট কোম্পানি ও একটি কর কোম্পানিতে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ২০১৭ সালে বিশ্বের ৫০০টি শীর্ষ কোম্পানির মধ্যে একটি তাঁর প্রকল্প-পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তাঁর পরিকল্পনা হলো কাননানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কোম্পানি গড়ে তোলা। এটি কাননান নেটওয়ার্ক তথ্যায়ন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়নের ঘাটতি পূরণ করবে।
সুওনানমুছাইরাং আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি অংশীদারদের সঙ্গে সিনআন আলিবাবা রেশমপথের সদর দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে গেছেন। সবশেষে তিনি ‘ডিংটাল্ক কাননান তিব্বতি জাতির স্বায়ত্তশাসিত বান্নারে পরিষেবা প্রদানকারী’-র অনুমোদন পেয়েছেন। তাঁর কোম্পানি কাননান বান্নারে আলিবাবা’র সঙ্গে সহযোগিতাকারী প্রথম কোম্পানি হয়েছে।
কোম্পানি গড়ে তোলার প্রথম দিকে সুওনানমুছাইরাংকে অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। তখন স্থানীয় বাসিন্দারা হাতে বুককিপিং ও রিপোর্টিংয়ে বেশি অভ্যস্ত ছিলেন। তাঁরা ভাবতেন ইলেকট্রনিক পণ্য ব্যয়বহুল। সুওনানমুছাইরাং সহকর্মীদেরকে নিয়ে কাননান বান্নারের সাতটি জেলা ও একটি শহরে কাজ করেন। বর্তমানে তিনি স্থানীয় একজন বিখ্যাত ডিজিটাল বিশেষজ্ঞে পরিণত হয়েছেন।
সরকারি সমর্থন ও সহায়তা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও ব্যবসা করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুওনানমুছাইরাং বলেন, চীন সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অনেক অগ্রাধিকারমূলক ও সুবিধাজনক ব্যবস্থা নিয়েছে। পৌর সরকারের সহায়তায় সুওনানমুউছাইরাংয়ের কোম্পানি কাননান বান্নারের তথ্যায়ন শিল্প ইনকিউবেশন পার্কে তিন বছরের জন্য বিনামূল্যে জায়গা ভাড়া পেয়েছে ।
কাননান বান্নারের যুবক ব্যবসা মালিক সমিতিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। সমিতি যুবক ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে কর, আইন ও দেশের নীতি ব্যাখ্যা করে। সমিতিটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর সহায়তা দেয়। সুওনানমুছাইরাং এ কথা বলেছেন।
বর্তমানে সুওনানমুছাইরাং পৃথক পৃথকভাবে কাননান বান্নারের জেলা ও শহরগুলোর সরকার এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বুদ্ধিমান অফিস-ব্যবস্থা গড়ে তুলছেন। তাঁর কোম্পানি ‘কানসু প্রদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন প্রতিষ্ঠান’, কানসু প্রদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোর গণমঞ্চ এবং কাননান বান্নারের ঐতিহ্যগত শিল্পের সবুজায়ন, তথ্যায়ন ও বুদ্ধিমান রূপান্তর পরিষেবা ব্যবসার নামতালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
সুওনানমুছাইরাং বলেন, “নিজের আয় বৃদ্ধি করার পাশাপাশি আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জন্মস্থানের উন্নয়ন। আমি নতুন ধারণা দিয়ে জন্মস্থান উন্নয়নের চেষ্টা করতে চাই।” তিনি আরও বলেন, কাননানের সুন্দর দৃশ্য, দীর্ঘ ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং বৈচিত্র্যময় লোকসভ্যতা রয়েছে। কাননানের বৈশিষ্ট্যময় সাংস্কৃতিক পণ্যের নকশা দিয়ে আরো ভালভাবে তিব্বতী জাতির সংস্কৃতি ব্যাখ্যা করা যায়। এটা সুওনানমুছাইরাংয়ের নিজের ব্রান্ড গড়ে তোলার লক্ষ্য। (ছাই/আলিম)